তিনি যে সাহসী, সে কথা ছাতি ঠুকে বলতে রেয়াত করেন না নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রীর সেই ‘সাহস’কেই আজ বিঁধলেন রাহুল গাঁধী। দিল্লিতে রামলীলা ময়দানে এক সমাবেশে কংগ্রেস সহ-সভাপতি বললেন, ‘‘আমেরিকায় ভারতীয়রা মারা যাচ্ছেন। কিন্তু মোদীজি কিছু বলছেন না। কারণ, তিনি ভয় পাচ্ছেন।’’
রাত পোহালেই উত্তরপ্রদেশের শেষ দফার ভোট। তার আগে আজ রামলীলা ময়দানে দিল্লি পুর-ভোটের প্রথম সভার আয়োজন করা হয়েছিল। দিল্লিতে বসে শেষবেলায় উত্তরপ্রদেশেরই প্রচার সারলেন রাহুল। তুলে আনলেন নানা প্রসঙ্গ। আর আমেরিকায় ভারতীয় হত্যার কথা বলে সরাসরি ‘ভিতু’ বললেন প্রধানমন্ত্রীকে।
কী বলেছেন রাহুল?
আজ রামলীলায় তিনি বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদীর ৫৬ ইঞ্চি ছাতি। অথচ এখন আমেরিকায় ভারতীয় মারা যাচ্ছেন, কিন্তু তাঁর গলা থেকে টুঁ শব্দটি বেরোচ্ছে না। কারণ, তিনি ভয় পাচ্ছেন।’’ রাহুলের দাবি, ‘‘মোদী বরাবরই মিথ্যার রাজনীতি করে এসেছেন।’’ শুধু রামলীলাতেই নয়। সন্ধেবেলা টুইট করে ফের এক কথা বলেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি— ‘‘আমাদের লোক আমেরিকায় মারা যাচ্ছেন, আর মোদীজি চুপ। কেন? কারণ, তিনি ভয় পান।’’
কাকে ভয় পান, সে কথা অবশ্য খোলসা করেননি রাহুল। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে তাঁর প্রস্তাবিত অভিবাসন নীতি বা এইচ১বি ভিসা নীতি পরিবর্তন নিয়ে যথেষ্ট চিন্তায় দিল্লি। এমনিতে টুইটারে যথেষ্ট সক্রিয় মোদী। কিন্তু কানসাসে শ্রীনিবাস হত্যার দেড় সপ্তাহ পরেও তিনি নীরব কেন, এই প্রশ্ন অনেকেই তুলছেন। সেই প্রসঙ্গই খুঁচিয়ে তোলেন রাহুল।
এর পরেই অবশ্য উত্তরপ্রদেশের প্রসঙ্গে চলে যান রাহুল। বলেন, ‘‘তিন বার রোড-শো করেছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু কাল বারাণসীর মানুষ মোদীকে হারাতে চলেছে। আড়াই বছরে তিনি একটিও প্রতিশ্রুতি রাখেননি।’’ ভোটের এক দিন আগে অখিলেশ যাদবের মতোই রাহুল মোদীকে উত্তরপ্রদেশের ‘বহিরাগত’ অ্যাখ্যা দিলেন। বললেন, ‘‘যে ভাবে নরেন্দ্র মোদী বড়াই করেন, মা গঙ্গা একমাত্র তাঁকেই ডেকে এনেছেন, এটি তাঁর অহঙ্কার। মা গঙ্গা সকলের। বেছে বেছে গুজরাত থেকে একজনকে ডেকে আনবেন কেন?’’
উত্তরপ্রদেশের পর এপ্রিলেই দিল্লির তিনটি পুরসভার ভোট। সে দিকেই এ বার নজর রাহুলের। এই তিনটিই বিজেপির দখলে। আর রাজ্যটিও অরবিন্দ কেজরীবাল দখলে রেখেছেন। উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যের ভোটের ফল অনেকটাই প্রভাব ফেলবে এই পুর নির্বাচনে। কিন্তু বিজেপি নেতৃত্ব যখন দিল্লির দিকে নজর দেওয়ার বিন্দুমাত্র সময় পাননি, তার আগেই জমি গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন রাহুল। আজ তাই নরেন্দ্র মোদী ও অরবিন্দ কেজরীবালকে এক সারিতে ফেলে দু’জনকেই ‘স্বেচ্ছাচারী’ বললেন রাহুল। তাঁর কথায়, ‘‘দু’জনেই শুধু নিজেদের কথা বলেন। দু’জনেই মনে করেন, এক জন মানুষই সরকারটা চালান। দু’জনেই মনে করেন, তাঁরাই মানুষের জীবন বদলাবেন। অথচ কেউই প্রতিশ্রুতি রাখেন না।’’ রাহুলের মতে, ‘‘একমাত্র কংগ্রেসই মনে করে, এ দেশের সকলের মতামত নিয়েই এগোনো উচিত। এটাই কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপি, আরএসএস বা আম আদমি পার্টির ফারাক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy