বার্তা: ইয়াঙ্গনে মোদী। ছবি: পিটিআই
ব্যাঙ্কে আর কখনও ফিরবে না অন্তত ৩ লক্ষ কোটি কালো টাকা। নোট বাতিলের পরে বুক ঠুকে এমনই দাবি করেছিল মোদী সরকার। কিন্তু সেই আশায় জল ঢেলে সম্প্রতি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে যে, ফিরেছে বাতিল নোটের ৯৯ শতাংশই। এই অবস্থায় এখন কেন্দ্রের দাবি, আসলে কালো টাকাকে চিহ্নিত করে দিয়েছে নোট নাকচ। সেই কারণেই না কি ‘ধরা পড়েছে’ কর ফাঁকি দিতে তৈরি হওয়া ২ লক্ষের বেশি ভুয়ো সংস্থা (শেল কোম্পানি)। সন্ত্রাসে আর্থিক মদতের শিকড় খুঁজতে মাঠে নেমেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থাও (এনআইএ)। বিরোধীরা অবশ্য বলছেন, কালো টাকার হদিস না-মেলা নিয়ে বাড়তে থাকা চাপে মরিয়া হয়েই শেষ পর্যন্ত এই পথে হাঁটতে বাধ্য হচ্ছে কেন্দ্র।
চাপ কতটা, তা স্পষ্ট বুধবার মায়ানমারে প্রধানমন্ত্রীর কথাতেই। নোট নাকচের পরে জাপান সফরে গিয়ে নরেন্দ্র মোদী বুক বাজিয়ে বলেছিলেন, কালো টাকা উদ্ধার হবে বলেই সব কষ্ট মুখ বুজে সইছেন দেশের সাধারণ মানুষ। আর এ দিন দশ মাস পরে ফের বিদেশের মাটিতে কিছুটা সাফাইয়ের ঢংয়ে বলেছেন, নোট বাতিলে কালো টাকার মালিকদের সন্ধান মিলেছে। ভুয়ো সংস্থার বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে অভিযান। সন্ত্রাসে আর্থিক মদত রুখতে এ দিনই দিল্লি ও শ্রীনগরে ২৭টি জায়গায় ব্যাপক তল্লাশি চালিয়েছে এনআইএ।
যদিও এ দিন মায়ানমারের ইয়াঙ্গনে অনাবাসী ভারতীয়দের সম্মেলনে মোদীর দাবি, দেশের স্বার্থে বড় ও কড়া সিদ্ধান্ত নিতে ভয় পান না তিনি। নোট বাতিল করেওছেন সেই কারণে। মঙ্গলবারই যেমন রেজিস্ট্রার অব কোম্পানিজে নথিভুক্তি বাতিল হওয়া ২.০৯ লক্ষ ভুয়ো সংস্থার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সরকারের সন্দেহ, নোট নাকচের পরে কালো টাকা সাদা করতেই এগুলি তৈরি হয়। সে কথা টেনে মোদী বলেন, ‘‘নোট বাতিলের পরে লক্ষ-লক্ষ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করেছি। যেখানে কোটি কোটি টাকা জমা হয়েছে। কিন্তু ওই সমস্ত অ্যাকাউন্ট মালিকদের কেউ আয়কর রিটার্ন ফাইল করেন না।’’
আরও পড়ুন: ৫ হাজার টাকায় এক একটা পেঁপে বেচেছেন রাম রহিম!
ভুয়ো সংস্থা নিয়ে এ দিনও তৎপর ছিল দিল্লি। কোম্পানি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী পি পি চৌধুরীর নেতৃত্বে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের পর্যালোচনা হয়। সিদ্ধান্ত হয়, সংস্থাগুলির ডিরেক্টররা টাকা সরানোর চেষ্টা করলে ১০ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। আমজনতাকে ঠকানো হলে, জরিমানা হবে জালিয়াতির তিন গুণ। যে-সব সংস্থা তিন বছর বা তার বেশি রিটার্ন ফাইল করেনি, তাদের ডিরেক্টররা অন্য সংস্থার ডিরেক্টর হতে পারবেন না। সংস্থাগুলির সঙ্গে জড়িত চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, কোম্পানি সেক্রেটারিদেরও চিহ্নিত করা হচ্ছে।
সন্ত্রাসে আর্থিক মদত বন্ধ করাকেও এখন পাখির চোখ করছে কেন্দ্র। এ দিন দিল্লি ও কাশ্মীরে নানা জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে এনআইএ। গোয়েন্দাদের যুক্তি, কাশ্মীরে পাথর ছোড়ায় মদত দিতে পাকিস্তানের পাঠানো টাকা আটকানোর কাজ চলছে। নোট বাতিলে অসুবিধায় পড়ে গ্রেফতার হয়েছেন একাধিক হাওয়ালা কারবারি ও হুরিয়ত নেতা। অনেকে বলছেন, একেও নোটবন্দির সাফল্য হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করছে কেন্দ্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy