নরেন্দ্র মোদী।
পেট্রোল-ডিজেলের দাম বড়ে চলা, বেকারি, কৃষকদের দুর্দশা.... সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগের তালিকা ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে। হাওয়া ঘোরাতে মরিয়া নরেন্দ্র মোদী এ বারে হাতিয়ার করছেন মহিলা সংরক্ষণ বিলকে। আগামী শীত-অধিবেশনেই লোকসভায় বিলটি পাশ করাতে চান তিনি। যাতে ২০১৯-এর লোকসভা ভোটেই মহিলাদের জন্য ৩৩% আসন সংরক্ষণ নিশ্চিত করে তাঁদের মন জয় করা যায়।
নির্মলা সীতারামনকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী করে নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভার কমিটিতে আনার পর থেকেই বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছেন, মহিলাদের ক্ষমতায়ন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যদি এতই আন্তরিক, তবে মহিলা সংরক্ষণ বিল কেন পাশ করাচ্ছেন না? বিজেপির বক্তব্য, নারী-ক্ষমতায়নের কাজটি নিরন্তর করছেন প্রধানমন্ত্রী। ভর্তুকির রান্নার গ্যাস সরাসরি গরিব মহিলাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া, তাৎক্ষণিক তিন তালাক বন্ধের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেওয়া, মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটিতে দুই মহিলাকে নিয়ে আসা তারই প্রমাণ। দলের সহ-সভাপতি বিনয় সহস্রবুদ্ধেকে দিয়ে মোদী ‘বেটি বচাও-বেটি পড়াও’-সহ মহিলা-কল্যাণের সব কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সমীক্ষাও করিয়েছেন ইতিমধ্যেই।
বিজেপি সূত্রের খবর, গত ভোটে যুবকদের মন জয়ের উপরে জোর দিয়েছিলেন মোদী। মহিলারা জনসংখ্যার অর্ধেক। তাঁদের মন জয়ই এ বারের ভোট-কৌশল মোদীর। লোকসভা ও বিধানসভাগুলিতে মহিলাদের জন্য ৩৩% আসন সংরক্ষণ চালু করে ২০১৯-এর ভোটে তার কৃতিত্ব নিতে চাইছেন তিনি। ঠিক যে ভাবে ২০১০-এ রাজ্যসভায় বিলটি পাশ করিয়ে কৃতিত্ব নিয়েছিলেন সনিয়া গাঁধী। তবে লোকসভায় পাশ করাতে পারেননি মুলায়ম সিংহ যাদব, লালুপ্রসাদদের প্রবল বিরোধিতায়। তাঁদের সেই দিন আর নেই। তবে দ্বিধা আছে বিজেপিতেই। বর্তমান লোকসভায় মহিলা ১২%। সংরক্ষণ হলে বর্তমান সাংসদ-বিধায়কদের অনেকে টিকিট পাবেন না। বিজেপি নেতৃত্বের অবশ্য বক্তব্য, গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে প্রতি ভোটেই মোদী এক-তৃতীয়াংশ আসনে প্রার্থী পাল্টে ফেলতেন। লোকসভা ভোটেও তেমনটি হলে বর্তমান সাংসদদের অনেকে এমনিতেই টিকিট পাবেন না।
বিলটি পাশ করাতে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু করে দিয়েছেন মোদী। বিভিন্ন সংগঠনও বিলটি নিয়ে হাওয়া তুলতে শুরু করে দিয়েছে। আজই পাঁচ সদস্যের এক মহিলা প্রতিনিধিদল সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে এসেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে। এই দলে ছিলেন ফারুক আবদুল্লার কন্যা তথা কংগ্রেসের সচিন পায়লটের স্ত্রী সারা, ‘সেন্টার ফর সোশ্যাল রিসার্চ’-এর নির্দেশক রঞ্জনা কুমারী। রঞ্জনা পরে বলেন, ‘‘সরকারের শীর্ষ স্তর থেকে যেমন সাড়া মিলছে, তাতে আশা করছি চলতি বছরেই বিল পাশ হয়ে যাবে।’’ যার অর্থ, এই শীতেই বিলটি নিয়ে আসতে পারে সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy