পটেল অস্ত্রে ইন্দিরাকে মাত করতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী।
আগামিকাল ইন্দিরা গাঁধীর মৃত্যুদিন। এবং প্রায় অজ্ঞাতই ছিল যে, এ দিন জন্মেছিলেন বল্লভভাই পটেলও।
কংগ্রেস জমানায় অক্টোবরের একত্রিশে ইন্দিরাকে নিয়েই মাতামাতি হতো। অন্ধকারে থাকতেন বল্লভভাই। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় এসে মোদী মেতেছেন পটেলকে নিয়ে। ইন্দিরাকে নিয়ে সরকারি স্তরে উচ্চবাচ্য প্রায় নেই।
গত বছর ইন্দিরার মৃত্যুদিনে স্রেফ একটা টুইট করে ক্ষান্ত হয়েছিলেন মোদী। আর দিনভর ব্যস্ত ছিলেন ‘একতা দৌড়’ থেকে শুরু করে পটেল সংগ্রহশালার উদ্বোধনে। শুধু তাই নয়, স্পষ্ট বলেছিলেন ‘বিজেপি-ওয়ালা’ হয়েও ‘কংগ্রেসি’ সর্দার পটেলকে তিনি সামনে নিয়ে আসতে আগ্রহী, কারণ স্বাধীনতার ইতিহাস কাছে সঠিক ভাবে তুলে না ধরে ঘোরতর অন্যায় করা হয়েছে।
আগামিকালও ফের একতা দৌড়ে সামিল হচ্ছেন মোদী। সরকারি কর্মীদেরও দৌড়ে সামিল হতে বলা হয়েছে। সে জন্য দিল্লির রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, সঞ্চার ভবন, নীতি আয়োগের মতো সরকারি দফতর আজ দুপুরেই ছুটি দেওয়া হয়েছে। সব রাজ্যেই যাতে এটি পালন হয়, সে জন্য গত দু’টি ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে আবেদন করেছেন মোদী।
আরও পড়ুন: মোদীর ‘টর্পেডো’ নিয়ে খোঁচা রাহুলের
এখানেই শেষ নয়। ইউজিসি-র পক্ষ থেকে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্দেশিকা গিয়েছে, পটেলের জন্মদিন যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করতে হবে। বলা হয়েছে অনুষ্ঠানের ভিডিও রেকর্ডিং পাঠানোর জন্যও। প্রসার ভারতীকে বলা হয়েছে, পটেলের জন্মদিন নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করতে। অথচ ইন্দিরাকে নিয়ে কোনও অনুষ্ঠান করার কথা বলা হয়নি।
ফলে শুরু হয়েছে শোরগোল। ইন্দিরাকে কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা বলেন, ‘‘গুজরাতে সর্দার পটেলের অতিকায় মূর্তি তৈরি করছেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু ইন্দিরা গাঁধীর বলিদানকে অবজ্ঞা করা হচ্ছে।’’ কংগ্রেস অবশ্য কাল সংসদে পটেলের জন্মদিন পালন করবে। ইউজিসি-র নির্দেশ মানতে নারাজ পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘রাজ্যের উপরে কিছু চাপিয়ে দেওয়ার অধিকার কেন্দ্রের নেই।’’
প্রসার ভারতীকে সরকারি নির্দেশ দেওয়া নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সংস্থার প্রাক্তন সিইও জহর সরকার। তাঁর মতে, ‘‘বিজেপির কোনও জাতীয় নেতা নেই। তাই সর্দার পটেলের মতো সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী নেতা, যিনি মহাত্মা গাঁধীর মৃত্যুর পরে আরএসএস-কে নিষিদ্ধ করেছিলেন, তাঁকে আত্মসাৎ করতে চাইছে।’’
বিজেপি অবশ্য পাল্টা বলছে, কংগ্রেস শুধু নেহরু-গাঁধী পরিবারকেই তুলে ধরেছে। এখন যদি অন্য নেতাদের বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে ভারতের ঐতিহ্যকে মেলে ধরা হয়, তাতে আপত্তি কীসের? তা ছাড়া, গুজরাত ভোটের আগে পটেলকে প্রচারের হাতিয়ার করে সে রাজ্যে আবেগ উস্কে দেওয়াও যে লক্ষ্য, তাও মানছেন দলের নেতারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy