Advertisement
০৪ মে ২০২৪
দিল্লিতে শুরু কথাও

মায়ানমার সীমান্তে অভিযান, ধ্বংস একাধিক জঙ্গি ক্যাম্প

নাগা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে রীতিমতো অভিযানই চালিয়েছে সেনারা। আবার, দিল্লিতে আজ থেকেই শুরু হয়েছে ছ’টি নাগা জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে কেন্দ্রের রাজনৈতিক আলোচনা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি ও গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৫৯
Share: Save:

জঙ্গি-সেনা সংঘর্ষে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল ভারত-মায়ানমার সীমান্ত। নাগা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে রীতিমতো অভিযানই চালিয়েছে সেনারা। আবার, দিল্লিতে আজ থেকেই শুরু হয়েছে ছ’টি নাগা জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে কেন্দ্রের রাজনৈতিক আলোচনা।

বুধবার ভোরে অরুণাচলের লংডিং জেলার মায়ানমার সীমান্তে নাগা জঙ্গি গোষ্ঠী এনএসসিএন (খাপলাং)-এর সঙ্গে ভারতীয় সেনা বাহিনীর সংঘর্ষ হয়। সেনা সূত্রে দাবি করা হয়েছে ওই অভিযানে বহু জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। কোনও কোনও শিবির থেকে এই দাবিও ওঠে— ফের মায়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে নাগা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়েছে সেনা। যদিও সেনা বাহিনীর পক্ষে সেই খবরের সত্যতা অস্বীকার করা হয়েছে। সেনা বাহিনী জানিয়েছে, সীমান্ত পার হওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। ভারতীয় সেনারা সীমান্ত অতিক্রম করেওনি।

২০১৫ সালের জুন মাসে মণিপুরের চান্দেল জেলায় ভারতীয় বাহিনীর কনভয়ে হামলা চালিয়েছিল এনএসসিএন (খাপলাং)। মারা যায় ডোগরা রেজিমেন্টের ১৮ সেনা। তার পর থেকেই ওই জঙ্গি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযান তীব্র করা হয়েছিল। গোয়েন্দা দফতর জানিয়েছিল, চান্দেলের ওই হামলা পুর্বপরিকল্পিত। শুধু খাপলাং গোষ্ঠীর জঙ্গিরাই নয়, উত্তর পূর্বের অন্য জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির সদস্যরাও এই অভিযানে অংশ নিয়েছিল। বস্তুত, এই হামলার কিছু দিন আগেই উত্তর পূর্বের জঙ্গি সংগঠনগুলি একটি সাধারণ মঞ্চ তৈরির প্রস্তুতি শুরু করেছিল। তারই ফলশ্রুতি ছিল ওই হামলা।

এ দিনের সংঘর্ষের বিষয়ে সেনা সূত্রের খবর, আজ ভোর ৪টে নাগাদ ভারত-মায়ানমার সীমান্তে ওই গুলির লড়াই শুরু হয়। সেনা বাহিনীর ইস্টার্ন কম্যাণ্ড জানিয়েছে, ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী সীমান্তে টহল দিচ্ছিল। সে সময়ে জঙ্গিরা আচমকা তাদের ওপর গুলিবর্ষণ শুরু করে। পাল্টা জবাব দেয় সেনা। দু’পক্ষের মধ্যে তীব্র গুলির লড়াই শুরু হয়। সেনার পাল্টা জবাবে পিছু হটতে বাধ্য হয় জঙ্গিরা। এর পর জঙ্গিদের পিছু নিয়ে তাদের ঘাঁটিতে গিয়ে হামলা চালায় ভারতীয় বাহিনী। যদিও অন্য একটি সূত্রের মতে, জঙ্গিরা যে ওই পথে আসবে তা আগে থেকেই জেনে গিয়েছিল সেনারা। সে খবর পেয়েই ওত পেতে ছিল জওয়ানরা। আচমকা হামলার মুখে বড়সড় ক্ষতির মুখে পড়তে হয় নাগা জঙ্গিদের। জঙ্গিদের হামলায় সেনারা কেউ জখম হয়নি বলেও দাবি করা হয়েছে।

বিজেপির একটি মহল এবং সরকারি আমলাদের একটা ছোট অংশ এ দিনের সংঘর্ষের ঘটনাকে সীমান্ত পেরিয়ে মায়ামনারের মাটিতে নাগা জঙ্গিদের ঘাঁটিতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক বলে দাবি করেছিল। কিন্তু সেনা বাহিনী তা অস্বীকার করার পরে তাঁরা আল মুখ খোলেননি।

সীমান্তে গোলা-গুলির পাশাপাশি দিল্লিতে আজ থেকে দিল্লিতে শুরু হল ছ’টি নাগা জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে কেন্দ্রের রাজনৈতিক আলোচনা। এনএসসিএন কিতোভি, এফজিএন, এনএনসি (প্রধান), এনএনসি (এনএ), এনএসসিএন রিফর্মেশন (খাপলাংয়ের সঙ্গ ত্যাগ করে আসা গোষ্ঠী) ও এনএনসি (জিডিআরএন) সংগঠনগুলির মোট ১৬ জন প্রতিনিধি নয়াদিল্লিতে এই আলোচনায় অংশ নেন। যৌথ মঞ্চের নাম দেওয়া হয়েছে ‘নাগা ন্যাশনাল পলিটিক্যাল গ্রুপ’ বা এনএনপিজি।

নাগা সমস্যা সমাধানের জন্য ১৯৯৭ সাল থেকে কেন্দ্র শুধুমাত্র এনএসসিএন (আই-এম)-এর সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে। তাদের সঙ্গে শান্তি চুক্তির প্রস্তাবনাও স্বাক্ষর হয়েছে। অন্য দলগুলির দাবি ছিল, একটি গোষ্ঠীর সঙ্গে শান্তি চুক্তি করলেই রাজ্যে শান্তি ফিরবে না, কারণ টাংখুল নাগাদের দল আইএম নাগাল্যান্ডের সব গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করে না। সব গোষ্ঠীর মধ্যে তাদের গ্রহণযোগ্যতাও নেই। আজ দিল্লিতে কেন্দ্রের মধ্যস্থ আর এন রবির সঙ্গে এনএনপিজি-র কার্যনিবাহী কমিটির সদস্যদের বৈঠক হয়। ছিলেন কিতোভি জিমোমি, ওয়াংতিং নাগা, পি তিখাকদের মতো নেতারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE