পর্দায় কাওয়ালি গান, মেনুতে পাশতুনের চাপলি কাবাব, সিন্ধি বিরিয়ানি, দূতাবাস সংলগ্ন বিস্তীর্ণ উদ্যানে আলোর সাজ — সবই রয়েছে। কিন্তু চাণক্যপুরীর দূতাবাসে পাকিস্তানের জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠান আজ অনেকটাই ম্রিয়মাণ।
তাবড় হুরিয়ত নেতাকে সাত দিন আগে থেকেই গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। ফলে অনুষ্ঠানে এসেছেন সেজো-ছোট নেতারা। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে প্রোটোকল রক্ষায় অনুষ্ঠানে পাঠানো হয়েছে কৃষিপ্রতিমন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াতকে। বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ দূরস্থান, বিদেশপ্রতিমন্ত্রীদেরও (এম জে আকবর অথবা জেনারেল ভি কে সিংহ) কাউকে না পাঠিয়ে এই অনুষ্ঠানকে কিছুটা লঘু করে দেখানোর বার্তাই দিতে চাওয়া হয়েছে মোদী সরকারের পক্ষ থেকে। সংশ্লিষ্ট শিবিরের মতে, কূটনীতিকদের হেনস্থা করার অভিযোগ ঘিরে দু’দেশের চাপানউতোর অনেকটাই ছায়া ফেলেছে এই অনুষ্ঠানে। ইসলামাবাদে আজ জাতীয় দিবসের কুচকাওয়াজেও ভারতকে শান্তিনষ্টের জন্য দোষারোপ করেছেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট মামনুন হুসেন।
এমন নয় যে গত বছর বা তার আগে এই অনুষ্ঠানের সময় ভারত-পাক সম্পর্ক মধুর ছিল। তবু জাতীয় দিবসের (১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ মুসলিমদের জন্য আলাদা দেশ সংক্রান্ত লাহৌর প্রস্তাব পাশ হয়েছিল, ১৯৫৬ সালের ওই তারিখেই প্রথম সংবিধান গৃহীত হয়) অনুষ্ঠানে জৌলুসের কমতি হত না নয়াদিল্লির পাক দূতাবাসে। থাকতেন প্রথম সারির কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। অনেকসময় আসতেন বিদেশমন্ত্রকের কিছু আমলাও। হুরিয়ত নেতারা তো থাকতেনই।
কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, নিয়ন্ত্রণরেখায় সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলেও নয়াদিল্লির পাক দূতাবাসের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে ভারতীয় সাংবাদিক অথবা বিদেশমন্ত্রকের প্রতিনিধিদের সৌজন্য বরাবরই বজায় থেকেছে। কিন্তু এবার লড়াই পৌঁছে গিয়েছে দূতাবাসেও। পাক দূতাবাস সূত্রের অভিযোগ, ডেপুটি হাই কমিশনারের ছেলে-মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার সময় দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আর পাক কূটনীতিকদের অধিকাংশ সময়ই কাটছে দূতাবাসে বসে টিভিতে চোখ রেখে। তাঁদের বাইরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। পাক নেতৃত্বের সঙ্গে এই নিয়ে আলোচনা করে সদ্য দেশে ফিরেছেন হাইকমিশনার সোহেল মাহমুদ। সাংবাদিকদের কাছে তিনি আজ বলেন, ‘‘আলোচনার সুযোগ আছে বলেই মনে করি। কথাবার্তার মাধ্যমে সব বকেয়া সমস্যার সমাধান হতে পারে।’’ তবু উৎসবের রং যে শুরু থেকেই ফিকে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy