বছর কুড়ির যুবক। হাতে একে-৪৭ রাইফেল। ভারতীয় বাহিনীর কাছে ধরা পড়ার পরেও এতটুকু ভীত নয়, উল্টে ঠোঁটে যেন আলগা তাচ্ছিল্যের হাসি। বুধবার জম্মু-কাশ্মীরের উধমপুরে বিএসএফের হাতে গ্রেফতার হওয়া উসমান যেন মনে করিয়ে দিচ্ছিল আর এক জনের কথা। আজমল কসাব। ২৬/১১ মুম্বই হামলার দোষী।
শুধু বয়সেই হুবহু মিল নেই দু’জনের। চরিত্রে, ব্যবহারে, আচার-আচরনে, ভঙ্গিমাতেও যেন আর এক কসাব। জেরায় উসমান জানিয়েছে, সে লস্কর-ই-তইবা সংগঠনের জঙ্গি। এই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিল কসাবও।
কী ভাবে উধমপুরে এল উসমান?
পুলিশকে উসমান জানিয়েছে, ১২ দিন আগে জঙ্গলের পথ দিয়ে জম্মু-কাশ্মীরে অনুপ্রবেশ করে সে। সঙ্গে ছিল আরও এক জঙ্গি। বুধবার বিএসএফের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হয় সেই সঙ্গীর। তবে সঙ্গীর মৃত্যু বা তার গ্রেফতারি কোনও কিছু নিয়েই তার মধ্যে এতটুকু হেলদোল দেখা যায়নি। উল্টে ছিল তাচ্ছিল্যের হাসি। কী ভাবে জঙ্গলের পথ অতিক্রম করল জানতে চাওয়ায় আলতো হেসে তার জবাব, ‘‘কোন্ বাস বা ট্রেন এখানে আসবে?’’
উধমপুর পৌঁছনোর তিন দিনের মধ্যেই তাদের মজুত খাবার শেষ হয়ে যায়। জোর করে ঢুকে পড়ে গ্রামের একটি বাড়িতে। লুঠপাট চালিয়ে সেখান থেকেই কয়েক দিনের খাবার সংগ্রহ করে নেয় তারা। এ দিন বিএসএফের কনভয়ে হামলা চালায়। উসমান গা ঢাকা দেয় একটি বাড়িতে। পণবন্দি করে কয়েকজন গ্রামবাসীকে। সেই বাড়ি থেকে লুকিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর সময়েই সুযোগ বুঝে তাকে ধরে ফেলেন বাসিন্দারা। এক জন উসমানকে চেপে ধরেন। অন্য জন কেড়ে নেন তার হাতের একে-৪৭ রাইফেল। ওই একবারই উসমানকে নরম হতে দেখেন গ্রামবাসীরা। অনুরোধ করে, ‘‘আমাকে যেতে দাও।’’ অবশেষে বাসিন্দাদের সাহায্যেই উসমানকে জীবিত অবস্থায় গ্রেফতার করে বিএসএফ।
পুলিশকে উসমান জানিয়েছে, সে পাকিস্তানের ফয়সালাবাদের গুলাম মহম্মদাবাদের বাসিন্দা। নিজেকে উসমান খান বলে পরিচয় দেয়। পরে অবশ্য পুলিশ খোঁজ নিয়ে জানতে পারে তার আসল নাম মহম্মদ নাভেদ। তবে উসমান হোক বা নাভেদ- বছর কুড়ির ওই যুবক আজমল কসাবের স্মৃতিকেই ফের উস্কে দিল।
এই সংক্রান্ত আরও খবর...
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy