দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নসীম জইদী।- ফাইল চিত্র।
সাংবিধানিক ভাবে, ভোটারদের ভোট দিতে বা না দিতে বাধ্য করানো যায় না। তাই দেশের সব বৈধ ভোটারকে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়, বাধ্যতামূলক ভাবে। আমাদের মতো বিপুল জনসংখ্যার দেশে তেমন প্রশাসনিক পরিকাঠামোরও অভাব রয়েছে। এমনটাই মনে করেন দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নসীম জইদী। তবে তিনি এও জানিয়েছেন, সচেতনতা বাড়ায় ভারতে ভোটদাতারা আগের চেয়ে অনেক বেশি সংখ্যায় ভোটকেন্দ্রে যাচ্ছেন, ভোট দিচ্ছেন। এ ব্যাপারে শহরে তুলনায় কিছুটা বেশি অনীহা থাকলেও, গ্রামাঞ্চল বা মফস্সল শহরগুলিতে সেই উৎসাহ অনেকটাই বেড়েছে।
এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়ে দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জইদী বলেছেন, ‘‘ভারত বিশ্বের খুব অল্প কয়েকটি দেশের অন্যতম, যেখানে ভোটারদের সংখ্যা উল্লেখজনক ভাবে বেড়েছে। কিন্তু, তা আরও বাড়ানোর জন্য বাধ্যতামূলক ভোট ব্যবস্থা চালু করাটা যুক্তিগ্রাহ্য নয়। দেশের বিপুল জনসংখ্যার জন্যই।’’
জইদীর কথায়, ‘‘আকার, আয়তনে যে দেশগুলি ছোট, যে সব দেশের জনসংখ্যা কম, সেখানে ভোট ব্যবস্থাকে বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে। কিন্তু আমাদের মতো বিপুল জনসংখ্যার দেশে তা সম্ভব নয়।’’
‘কাম্যও নয়’, মনে করেন ভারতের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সাংবিধানিক ভাবে কাউকে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে বা না ভোট দিতে বাধ্য করানো যায় না। ২০১৪-র সাধারণ নির্বাচনে দেশে বৈধ ভোটারের সংখ্যা ছিল ৮৫ কোটি। কিন্তু সেই নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট এবং না ভোট দিয়েছিলেন মোট ৫৫ কোটি ভোটার। বাকি ৩০ কোটি বৈধ ভোটার ভোট দেননি। ভোট ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক হলে তো ওই ৩০ কোটি বৈধ ভোটার, যাঁরা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট বা না ভোট দেননি, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হয়!’’
আরও পড়ুন- হোঁচট দিয়েই যাত্রা শুরু করল জিএসটি
দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার মনে করেন, তা প্রশাসনিক ভাবেও সম্ভব নয়, পর্যাপ্ত কর্মীর অভাবে। বিপুল ব্যয়ের জন্য। জইদীর কথায়, ‘‘ওই ৩০ কোটি বৈধ ভোটারকে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে ভোট দেওয়ানোর জন্য জন্য যে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে হবে, তার খরচও বিপুল।’’
তা হলে কী করণীয়?
তা হলে কী করণীয়, সেই উপায়ও জইদী বাতলেছেন ওই সাক্ষাৎকারে। সেটা হল- ভোটার প্রশিক্ষণ কর্মসূচি। ভোট পড়ার হার দেশে কম ছিল বলে নির্বাচন কমিশন কয়েক বছর আগে ‘সিস্টেম্যাটিক ভোটার এডুকেশন ইলেক্টোরাল পার্টিসিপেশন প্রোগ্রাম (এসভিইইপি) নিয়েছিল। জইদীর দাবি, তাতে কিছুটা সুফল মিলেছে। ভোটারদের সংখ্যা বেড়েছে। ভোটের হার বেড়েছে।
তার পরেও কিছু অসুবিধা রয়েছে। সেগুলি কী কী?
জইদীর কথায়, ‘‘গ্রামাঞ্চলের তুলনায় শহরে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট বা না ভোট দিতে যাওয়ার উৎসাহ অনেকটাই কম। শহুরে যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে তা আরও কম। শহরের মানুষ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার চেয়ে প্রশাসনের সমালোচনা করতে, ভুলত্রুটি নিয়ে আলোচনা করতে বেশি ভালবাসেন। আর শহরের যুব সম্প্রদায়ের বড় অংশটা মনে করে, ভোট দিয়ে কী হবে! কিছুই তো আর বদলাবে না!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy