Advertisement
১১ মে ২০২৪

ঢাক পিটিয়ে, বাহবা পেয়ে দিলখুশ মোদী

খাসি দামামায় দু’টো কাঠি দিয়ে তাল মেলানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছিল বটে নভিশ ছাত্রটি, কিন্তু বাকি বাজনদারদের সঙ্গে তালটা ঠিক মিলছিল না। পাশে দাঁড়ানো বায়েন নেতা তখন নিজেই ছাত্রের হাত থেকে কাঠি নিয়ে নিলেন। একেবারে হাতে ধরে দেখিয়ে দিলেন তালের ছন্দ। যোগ্য ছাত্র শেখানো ছন্দে কাঠি মেলাতেই শিক্ষক তাঁর পিঠ চাপড়ে দিলেন, সাবাশ।

মাদলের সঙ্গে বাজাচ্ছিলেন কাঁসর। কিন্তু দামামা বাজাতে গিয়েই বিপত্তি। মিলছিল না ছন্দ। পাশে দাঁড়ানো বায়েন নেতা তখন তালটা ঠিক করে দেন। তাল মিলতেই ছাত্রের পিঠ চাপড়ে দেন শিক্ষক। ছাত্রটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার মেঘালয়ের মাওফলাংয়ে এ ভাবেই সময় কাটালেন তিনি। ছবি: পিটিআই।

মাদলের সঙ্গে বাজাচ্ছিলেন কাঁসর। কিন্তু দামামা বাজাতে গিয়েই বিপত্তি। মিলছিল না ছন্দ। পাশে দাঁড়ানো বায়েন নেতা তখন তালটা ঠিক করে দেন। তাল মিলতেই ছাত্রের পিঠ চাপড়ে দেন শিক্ষক। ছাত্রটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার মেঘালয়ের মাওফলাংয়ে এ ভাবেই সময় কাটালেন তিনি। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৬ ০৩:২৮
Share: Save:

খাসি দামামায় দু’টো কাঠি দিয়ে তাল মেলানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছিল বটে নভিশ ছাত্রটি, কিন্তু বাকি বাজনদারদের সঙ্গে তালটা ঠিক মিলছিল না। পাশে দাঁড়ানো বায়েন নেতা তখন নিজেই ছাত্রের হাত থেকে কাঠি নিয়ে নিলেন। একেবারে হাতে ধরে দেখিয়ে দিলেন তালের ছন্দ। যোগ্য ছাত্র শেখানো ছন্দে কাঠি মেলাতেই শিক্ষক তাঁর পিঠ চাপড়ে দিলেন, সাবাশ।

সাদা চুল-দাড়ির ওই ছাত্রটির কাছে ঢাক বাজানোর অভিজ্ঞতা নতুন নয়। কিন্তু শেষ কবে ছন্দমিলের সাফল্যে কেউ তাঁর পিঠে চাপড়েছে তা কারওরই মনে পড়ে না। দেশের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বলয়ে থাকা নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী পিঠের সেই বাহবাটুকু নিয়েই টুইটে লেখেন, ‘‘দেশের মালিক আমার মতো প্রধান সেবককে পিঠ চাপড়ে সাবাশি দিলেন। এর চেয়ে বড় সৌভাগ্য আর কী হতে পারে?’’ ফেসবুকেও সেই সাবাশি পাওয়ার ভিডিও ক্লিপিং দিয়েছেন তিনি। শুধু দামামা নয়, খোল-কাঁসর বাজিয়ে, কোমর দুলিয়ে মেঘালয়ের বৃষ্টিভেজা সকালে মাওফলাংয়ের আনন্দ একেবারে লুটেপুটে নিলেন প্রধানমন্ত্রী। রইল পড়ে প্রোটোকলের আগল, নিরাপত্তার আঁটুনি।

গত কাল কর্মব্যস্ত দিনের পরে আজ সকালে নরেন্দ্র মোদী একেবারে শিলং ঘুরতে আসা আমুদে পর্যটক। সকাল থেকে আকাশের মুখ ভার। তাই সেন্ট মেরি গির্জা ও রামকৃষ্ণ মিশনের যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল হয়ে যায়। বৃষ্টি ধরতেই, কনভয় ছোটে মাওফলাংয়ের দিকে।

আদিম কাল থেকে খাসির বাসিন্দারা ওই মাওফলাংয়ের পবিত্র জঙ্গল বা ‘লাও কিন্টাং’-এ শিকার করেন না, গাছ কাটেন না। মাওফলাংয়ে এই প্রথম দেশের প্রধানমন্ত্রীর পা পড়ল। সেখানে গিয়ে খাসি ও জয়ন্তীয়া পাহাড়ের লোকবাদ্য আর লোকনৃত্য দেখে-শুনে এমনই মুগ্ধ মোদী, যে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে নিজেই নাচিয়ে, বাজিয়েদের মধ্যে মিশে গেলেন। হাতে তুলে নিলেন কাঁসর। কখনও বাজালেন খাসি ঢাক। আলতো কোমর দোলালেন নর্তকীদের সঙ্গেও।

মাওফলাং গ্রামের এক দিকে রয়েছে খাসি হেরিটেজ ভিলেজ। সেখানে ঘুরে দেখলেন খাসিদের জীবনযাত্রার নমুনা, কখনও আবার স্থানীয় কামারশালায় গিয়ে হাতে নিয়ে দেখলেন তাদের তৈরি তালা, দা, বাসন-কোসন। স্থানীয়দের তৈরি ওষধি চা খেয়ে স্থানীয় শিল্পীদের সঙ্গে ‘চায়ে পে চর্চা’ও সেরে নিলেন তিনি। মোদীর সঙ্গে ছিলেন রাজ্যপাল ভি সম্মুগনাথম, মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা ও উত্তর-পূর্ব উন্নয়নমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ। অবশ্য বৃষ্টিভেজা ও আগাছায় ঢাকা গহন বনে মোদী ঢোকেননি। খাসি উন্নয়ন পরিষদের কর্তাদের কাছে ধর্মবিশ্বাস ও অরণ্য সংরক্ষণের কাহিনী খুঁটিয়ে শোনেন।

সেখান থেকে আপার শিলংয়ের এলিফ্যান্ট জলপ্রপাতে যান প্রধানমন্ত্রী। নিরাপত্তাকর্মীদের চিন্তা উড়িয়ে পাহাড়ি সিঁড়ি বেয়ে জলপ্রপাতের একেবারে নীচে পর্যন্ত যান প্রধানমন্ত্রী। ছবি তোলার আবদার মেটান হাসিমুখে। টুইটে লেখেন, ‘‘মেঘালয়ে এলে এলিফ্যান্ট জলপ্রপাত অবশ্যই ঘুরে যাবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE