৩৩ বছর পর এই বুড়ো বয়সে যে আবার একটি কঠিন পরীক্ষায় ফের বসতে হবে, সেটি হয়ত ভাবেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
ক’দিন আগে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এক কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছিলেন। লোকসভা নির্বাচনের সময় মোদী নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে জানিয়েছিলেন, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও গুজরাত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতোকত্তর পাশ করেছেন তিনি। কিন্তু তথ্য জানার অধিকারে বারবার আবেদন করা সত্ত্বেও কোনও বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই কোনও উত্তর আসেনি। সন্দেহের গন্ধ পেতেই কেজরীবাল এটিকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে লুফে নেন। অবশেষে আজ প্রধানমন্ত্রীকে স্বস্তি দিয়ে গুজরাত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিল, প্রথম শ্রেণিতেই রাজনীতি বিজ্ঞানে স্নাতোকত্তর পাশ করেছেন নরেন্দ্র মোদী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম এন পটেল জানান, ৬২.৩ শতাংশ নম্বর নিয়ে রাজনীতি বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর পাশ করেছেন মোদী। এবং সালটি ১৯৮৩ সাল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নরেন্দ্র মোদীর স্নাতকের বিবরণের কোনও হদিস দিতে পারেনি। এর আগেও তথ্য জানার অধিকার আইনে মোদীর শিক্ষাগত যোগ্যতার সবিস্তার বিবরণ চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় তা দিতে বারণ করে দেয়। মানা করে গুজরাত বিশ্ববিদ্যালয়ও। আজ অবশ্য এর ব্যাখ্যা দিয়ে গুজরাত বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রথমত একজন ছাত্রের তথ্য অন্য কেউ চাইলে দেওয়া হয় না। আর তার উপর কুড়ি বছরের পুরনো কোনও তথ্যও বিশ্ববিদ্যালয় দিতে বাধ্য নয়। এখন তথ্য কমিশন এই তথ্য চাইলে সেটি জানিয়ে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন- জোড়া ইস্যু নিয়ে ফের উত্তাল হতে চলেছে সংসদ থেকে সড়ক
কিন্তু গুজরাতে মোদী ঘনিষ্ঠ শিবির বলছে, দিল্লি থেকে ইঙ্গিত আসার পরেই দলের পক্ষ থেকে গুজরাত বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় নথি ঘেঁটে বের করা হয় নরেন্দ্র মোদীর বিবরণ। যদি কোনও ভাবে প্রমাণ হত, নির্বাচনের সময় ভুল তথ্য দিয়েছেন মোদী, তাহলে বড়সড় বিপাকে পড়তে হত তাঁকে। বহিরাগত হিসেবে স্নাতকোত্তর পড়েছিলেন মোদী। দুই বছরের এই কোর্স যখন মোদী পাশ করেন, তখন তাঁর বয়স ছিল ৩৩। আর কাকতলীয়ভাবে তার ঠিক ৩৩ বছর পর আবার তাঁকে এই বিষয়ে সাফাই দিতে হল আজ। রাজনীতি বিজ্ঞান পড়বার সময় তিনি ইওরোপীয়ন রাজনীতি, ভারতের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ ও রাজনীতির মনস্তত্ত্ব নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। মোট ৮০০ নম্বরের মধ্যে ৪৯৯ পেয়ে প্রথম শ্রেণিতেই পাশ করেছেন তিনি।
মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি লিখে কেজরীবাল অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষাগত যোগ্যতার বিবরণ ইচ্ছা করে চেপে রাখা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘এমন অভিযোগ আসছে, প্রধানমন্ত্রীর কাছে কোনও ডিগ্রিই নেই। দেশের মানুষ সত্য জানতে চায়। তা সত্ত্বেও দেশের সামনে ডিগ্রির বিবরণী প্রকাশ্যে আনা হচ্ছে না। এটি ঠিক নয়।’’ এরপরেই তথ্য কমিশন প্রধানমন্ত্রী সচিবলায়ের কাছে সবিস্তারে বিষয়টি জানতে চায়। বিষয়টি জানানো হয় প্রধানমন্ত্রীকেও। তারপরেই নড়েচড়ে বসে গোটা তন্ত্র। গুজরাত বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইলপত্র ঘেঁটে শেষপর্যন্ত বার করা হয় মোদীর মার্কশিট। সেটি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ের কাছেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy