দ্য জাঙ্গল বুক-এর মোগলির কথা নিশ্চয় মনে আছে? মানবসন্তান হয়েও জঙ্গলে পশুদের মধ্যে থেকে পশুদের মতোই আচরণ ছিল তার। মানুষও হয়েছিল জঙ্গলের পশুদের মধ্যেই।
গল্পের মোগলি নয়, এ বার বাস্তবের ‘মোগলি’-র খোঁজ মিলল উত্তরপ্রদেশের বরাইচে কাটরানিয়াঘাট অরণ্যে। তবে এ ছেলে নয়, একটি ১০ বছরের মেয়ে।
কী ভাবে এই ‘মোগলি’র খোঁজ মিলল?
আরও খবর: মদ খেয়ে গাড়ি চালালে জরিমানা ১০ হাজার
মাস দুয়েক আগে স্থানীয় গ্রামবাসীদের কয়েক জন কাটরানিয়াঘাট অরণ্যে কাঠ কাটতে গিয়ে একটি দৃশ্য দেখে থমকে যান। একটি বছর দশেকের মেয়েকে ঘিরে রয়েছে এক দল হনুমান। সম্পূর্ণ নগ্ন, বড় বড় চুল, অনেকটা পশুর মতোই দেখতে লাগছিল মেয়েটিকে। সে নির্বিকারে ওই হনুমানের দলের সঙ্গে ‘কথা বলছে’! গভীর অরণ্যে এ রকম অবস্থায় একটি বাচ্চা মেয়েকে দেখে সবাই অবাক হয়ে যান। হনুমানগুলোর কাছ থেকে তাঁরা মেয়েটাকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেই হনুমানগুলো তেড়ে আসে তাঁদের দিকে। কয়েক জনকে আক্রমণও করে বলে জানান গ্রামবাসীরা। এ রকম কয়েক বার মেয়েটিকে আনতে গিয়ে হনুমানের তাড়া খেয়ে ফিরে এসেছেন গ্রামবাসীরা।
অবশেষে তাঁরা স্থানীয় পুলিশ থানায় বিষয়টি জানান। পুলিশের একটি দল মেয়েটির খোঁজে বেরিয়ে তার খোঁজ না পেয়ে ফিরে আসে। এক দিন পুলিশের ১০০ পরিষেবার একটি টহলরত গাড়ি কাটরানিয়াঘাট অরণ্যের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশকর্মীরা মেয়েটিকে হনুমানের দলের সঙ্গে দেখতে পায়। মেয়েটিকে হনুমানের দলের কাছ থেকে কোনও রকমে উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র নিয়ে যায়। এক পুলিশকর্মী জানান, মেয়েটিকে আনার সময় হনুমানের দল গাড়ির পিছন পিছন তাড়া করছিল।
মেয়েটিকে পরে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিত্সক ডি কে সিংহ জানান, মেয়েটির গায়ে ও হাতে ক্ষত ছিল। মনে হচ্ছিল অনেক দিন খেতে পায়নি। হাসপাতালেও সে চার হাত-পায়ে হাঁটছিল। খেতে চাইছিল না। নখ, চুল বিশাল বড় হয়ে গিয়েছিল। মেয়েটি কথা বলে না, শুধু আওয়াজ করতে পারে।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, মেয়েটিকে কেউ জঙ্গলে ছেড়ে গিয়ে গিয়েছিল। অনেক দিন ধরে হনুমানের দলের সঙ্গে থাকতে থাকতে তার স্বভাবে পরিবর্তন আসে। মেয়েটিকে সুস্থ করে আপাতত হোমে পাঠানের চেষ্টা চলছে। খোঁজ চালানো হচ্ছে মেয়েটির পরিবারেরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy