Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

আরএসএসের জমি ঠেকাতে চান কারাট

বিজেপি-কে রুখতে গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ ঐক্য কী ভাবে গড়ে তোলা হবে, তা নিয়েই প্রবল বিতর্ক চলছে সিপিএমে।

রাজ্য সম্মেলনের তৃতীয় দিনে ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে বক্তব্য রাখছেন প্রকাশ কারাট। —নিজস্ব চিত্র।

রাজ্য সম্মেলনের তৃতীয় দিনে ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে বক্তব্য রাখছেন প্রকাশ কারাট। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৮ ০৪:১৩
Share: Save:

ভোটের কৌশল নিয়ে মাথা কম ঘামালেও চলবে। রাস্তায় নেমে গণভিত্তি তৈরি করে বিজেপি-আরএসএসের মোকাবিলাই প্রথম কাজ বলে মনে করছেন প্রকাশ কারাট।

বিজেপি-কে রুখতে গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ ঐক্য কী ভাবে গড়ে তোলা হবে, তা নিয়েই প্রবল বিতর্ক চলছে সিপিএমে। কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর জোট গড়়াই বিজেপি-কে ঠেকানোর উপযুক্ত কৌশল কি না, ত্রিপুরায় বামেদের বিপর্যয়ের পরে সেই প্রশ্ন আরও জোরালো হয়েছে। এমতাবস্থায় সিপিএমের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক জোর দিচ্ছেন, সব ধরনের অ-বিজেপি সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে গণসংগ্রামের উপরে। তাঁর যুক্তি, গণ-আন্দোলন শক্তিশালী হলে তার উপরে দাঁড়িয়েই নির্বাচনী কৌশল তৈরি করা যাবে।

রাস্তার লড়াই-ই যে আশু কর্তব্য, সেই বিষয়ে অবশ্য সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্বে এখন বিশেষ দ্বিমত নেই। তবে কারাট এখনও মনে করেন, কংগ্রেসের ডেকে আনা নব্য উদার অর্থনীতিকেই বিজেপি আরও আগ্রাসী চেহারা দিয়েছে। কাজেই সেই কংগ্রেসের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা চলে না। আর ইয়েচুরি শিবিরের প্রশ্ন, রাস্তার আন্দোলনে একসঙ্গে থেকে ভোটে এসে কংগ্রেসের মতো কোনও দলের জন্য দরজা বন্ধ— এমন কৌশল কি জনমানসে গ্রহণযোগ্য হতে পারে? যে বিতর্কের ফয়সালার জন্য এপ্রিলে হায়দারাবাদ পার্টি কংগ্রেস পর্যন্ত অপেক্ষা সিপিএমে।

রাজ্য সম্মেলনের তৃতীয় দিনে ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে সাম্প্রদায়িকতার মোকাবিলা সংক্রান্ত একটি আলোচনায় কারাট বলেছেন, বিজেপি সাম্প্রদায়িক— শুধু এই প্রচারে কাজ হওয়ার নয়। আরএসএস এবং তাদের প্রভাবিত অন্তত ৪০টি সংগঠন শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সমাজকল্যাণ-সহ নানা ক্ষেত্রে মানুষের মধ্যে গিয়ে যে জমি তৈরি করে দিচ্ছে, ভোটে তারই ফসল তুলছে বিজেপি। আরএসএসের ওই সামাজিক কাজকর্মের সঙ্গে এঁটে উঠতে না পারলে শুধু ভোটে আসন-ভাগ করে কোনও লাভ নেই। একই দিনে দলের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম অবশ্য বলেছেন, বিজেপির বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো তৃতীয় ফ্রন্ট করে ভোট ভাগ নয়। তাঁরা সরাসরি লড়াই চান।

নিজের যুক্তি প্রতিষ্ঠায় কারাট আবার টেনেছেন ত্রিপুরা-প্রসঙ্গ। তাঁর কথায়, ‘‘ওখানে আমরা ভুল প্রমাণিত হয়েছি। কংগ্রেসের গোটা দলটাই বিজেপি হয়ে যাওয়ার পরে বাম-বিরোধী সব ভোট তারাই টেনে নিয়েছে। তার পরেও উপজাতি এলাকায় আমাদের ভাল কাজের জোরে সফল হব ভেবেছিলাম। কিন্তু পাহাড়ে, আদিবাসী এলাকায় আরএসএস লেগে থেকে মানুষকে প্রভাবিত করে ফেলেছে এবং বিজেপি পরে টাকা খরচ করেছে। আমরা তা রুখতে পারিনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE