Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
National News

তিব্বতিদের সংরক্ষণ-পুনর্বাসন নিয়ে প্রতিবাদ অরুণাচলে

উত্তরাখণ্ড ও হিমাচল প্রদেশের পরে দেশের তৃতীয় রাজ্য হিসেবে 'টিবেটান রিহ্যাবিলিটেশন পলিসি অ্যাক্ট, ২০১৪' বা টিআরপিএ লাগু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডুর নেতৃত্বাধীন অরুণাচল মন্ত্রিসভা। কিন্তু রাজ্যের সবচেয়ে বড় ছাত্র সংগঠন আপসু (অল অরুণাচল প্রদেশ স্টুডেন্টস ইউনিয়ন) ও নেফা মানবাধিকার সংগঠন ওই আইনের তীব্র প্রতিবাদ করে দাবি তুলেছে, ভূমিপুত্রদের স্বার্থবিরোধী আইন লাগু করার সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।

রাজ্যের সবচেয়ে বড় ছাত্র সংগঠন আপসু (অল অরুণাচল প্রদেশ স্টুডেন্টস ইউনিয়ন) ও নেফা মানবাধিকার সংগঠন ওই আইনের তীব্র প্রতিবাদ করেছে। প্রতীকী ছবি।

রাজ্যের সবচেয়ে বড় ছাত্র সংগঠন আপসু (অল অরুণাচল প্রদেশ স্টুডেন্টস ইউনিয়ন) ও নেফা মানবাধিকার সংগঠন ওই আইনের তীব্র প্রতিবাদ করেছে। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৭ ১৬:৫৫
Share: Save:

এই প্রথম বরাবরের নিশ্চিন্ত ঠাঁই অরুণাচল প্রদেশে বিরোধের মুখ পড়লেন তিব্বতিরা। উত্তরাখণ্ড ও হিমাচল প্রদেশের পরে দেশের তৃতীয় রাজ্য হিসেবে 'টিবেটান রিহ্যাবিলিটেশন পলিসি অ্যাক্ট, ২০১৪' বা টিআরপিএ লাগু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডুর নেতৃত্বাধীন অরুণাচল মন্ত্রিসভা। কিন্তু রাজ্যের সবচেয়ে বড় ছাত্র সংগঠন আপসু (অল অরুণাচল প্রদেশ স্টুডেন্টস ইউনিয়ন) ও নেফা মানবাধিকার সংগঠন ওই আইনের তীব্র প্রতিবাদ করে দাবি তুলেছে, ভূমিপুত্রদের স্বার্থবিরোধী আইন লাগু করার সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।

চিন পোতালা প্রাসাদ দখল করার পরে, ১৯৫৯ সালের ৩০ মার্চ তাওয়াং সীমান্ত পার হয়ে ভারতে পালিয়ে এসেছিলেন দলাই লামা। তাঁকে অনুসরণ করে পশ্চিম কামেংয়ের পাশাপাশি মেচুকা, আনিনি ও অন্যান্য সীমান্ত দিয়েও ভারতে ঢোকেন প্রায় ৮০ হাজার তিব্বতি। তদনীন্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু তিব্বতি শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে সম্মত হওয়ার পরে গত ৫০ বছরে অন্তত দেড় লক্ষ তিব্বতি ভারতে এসেছেন। বর্তমানে অরুণাচল, হিমাচল, উত্তরাখণ্ড, উত্তরবঙ্গ, অসম, মেঘালয়, কর্নাটক, ওড়িশা মিলিয়ে তিব্বতি শরণার্থীর সংখ্যা ১,২০,০০০। হিমাচল ও কর্ণাটকেই তিব্বতিদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ভারত সরকার তাদের জন্য বিনামূল্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য পরিষেবা, বৃত্তির ব্যবস্থা করেছে। টিআরপিএ আইনে চাকরিতেও তাদের সংরক্ষণের সুবিধে দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন

তিন তালাক রায় নিয়ে টুইট করে ট্রোলড কাইফ

দলাই লামার প্রথম ঘাঁটি হিসেবে তাওয়াং শুধু বৌদ্ধদের নয়, অরুণাচলের সকলের কাছেই পবিত্র স্থান। সেখানকার মন পা উপাজাতি বা মেচুকার মেম্বা উপজাতিরাও আদতে তিব্বতি। মন পা উপজাতির প্রতিনিধি, প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী দোর্জি খান্ডুর ছেলে পেমা খান্ডু এখন মুখ্যমন্ত্রী। তার নেতৃত্বে মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নেয় টিআরপিএ-২০১৪ আইন রাজ্যে পুরোপুরি লাগু হবে।

কিন্তু আপসু ও অন্যান্য সংগঠনের দাবি, 'বেঙ্গল ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার রেগুলেশন, ১৮৭৩' আইন রাজ্যে লাগু। তার ভিত্তিতে, ভূমিপুত্রদের স্বার্থ সুরক্ষিত করতে বহিরাগতদের ইনারলাইন পারমিট নিয়ে রাজ্যে আসতে হয়। বহিরাগতরা সচরাচর রাজ্যে জমি, সম্পত্তি বা ব্যবসার মালিক হতে পারেন না। টিআরপিএ আইন মানতে হলে ওই আইন অগ্রাহ্য করতে হবে। তিব্বিতিদের রাজ্যে সম্পত্তির অধিকার, চাকরিতে সংরক্ষণের সুযোগ দিলে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন ভূমিপুত্ররা। অভিযোগ, পেমা নিজে মন পা হওয়ায় তিব্বতিদের পক্ষে আইন লাগু করছেন। এতে অন্য উপজাতিদের উপরে চাপ সৃষ্টি হবে।

আরও পড়ুন

কানহাইয়াকে কালি দিতে গিয়ে প্রহৃত

আপসুর বক্তব্য, পৃথক রাজ্য হওয়ার পর থেকেই স্থানীয় উপজাতিদের স্বার্থ রক্ষা ও বহিরাগতদের আগ্রাসন থেকে অরুণাচলকে বাঁচাতে তাদের লড়াই চলছে। আশ্রয়ের নামে রাজ্যে স্থায়ী ঘাঁটি গড়ছে শরণার্থীরা। চাকমা-হাজোং শরণার্থীরাও অরুণাচলে নাগরিকত্ব চাইছে। আপসু ও এনআইএইচআরও (নেফা ইন্ডিজেনাস হিউম্যান রাইটস অরগানাইজেশন)-এর মতে, টিআরপিএ লাগু হলে চাকমা-হাজোংদের পুনর্বাসন ও নাগরিকত্বের দাবি জোরদার হবে। তিব্বতিদের একই সুযোগ দিলে, নীতিগত ভাবে তখন চাকমা-হাজোংদের মানা করা যাবে না। মানবাধিকার কর্মীদের মতে, শুধু অর্থনৈতিক সমস্যাই নয়, তিব্বতিরা রাজ্যের জনবিন্যাস, উপজাতিদের স্বাতন্ত্র্য ও সামাজিক বিন্যাসেও প্রভাব ফেলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE