Advertisement
০৭ মে ২০২৪

নিরাপত্তায় প্রচুর ফাঁক, দ্বিতীয় বার জঙ্গি হানার মুখে পড়ত পঠানকোট

পঠানকোট বায়ুসেনা ঘাঁটিতে প্রথম দফায় জঙ্গি হামলার হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই আবার এক দফা জঙ্গি হামলার আশঙ্কা ছিল বলে দাবি করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৬ ০৮:৫৪
Share: Save:

পঠানকোট বায়ুসেনা ঘাঁটিতে প্রথম দফায় জঙ্গি হামলার হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই আবার এক দফা জঙ্গি হামলার আশঙ্কা ছিল বলে দাবি করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

পঠানকোট হামলার অল্প কিছু দিন পরেই বায়ুসেনা ঘাঁটির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যান স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী, হামলার পরেও ঘাঁটির নিরাপত্তা নিশ্ছিদ্র করার বিষয়ে সরকারি উদ্যোগ চোখে পড়েনি। একাধিক জায়গায় তখনও ভাঙা ছিল পাঁচিল। সেগুলিতে পাহারারও কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি। অথচ, এই ভাঙা পাঁচিলের সুযোগ নিয়ে ঘাঁটিতে অবাধে ঢুকতে পেরেছিল জঙ্গিরা। সংসদীয় কমিটির সদস্যরা জানাচ্ছেন, সে সময় স্থানীয় গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা জানতে পারেন, তখনও বেশ কিছু জঙ্গি আশপাশের গ্রামেই গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে এবং তারা ফের ওই ঘাঁটিতে হামলা চালানোর ছক কষছে।

ওই কমিটির চেয়ারম্যান প্রদীপ ভট্টাচার্য আজ দাবি করেন, ‘‘গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেই জঙ্গিদের বিষয়ে জানতে পেরেছিলাম। গ্রামবাসীরাই জানায়, ওই জঙ্গিরা ফের একই ধাঁচের হামলার পরিকল্পনা করছে। দ্রুত তা কেন্দ্রকে জানানো হয়। এর পরেই বিএসএফ, সিআরপিএফ এবং সেনাবাহিনী গোটা এলাকা জুড়ে তল্লাশি অভিযান শুরু করে।’’

কমিটির দাবি তারা সরকারকে পঠানকোট সংক্রান্ত রিপোর্ট দেওয়ার পরেই ওই বায়ুসেনা ঘাঁটির নিরাপত্তা কয়েক গুণ বাড়ানো হয়েছে। তবে একই সঙ্গে ‘তদন্তের জন্য’ পাক গোয়েন্দাদের বায়ুসেনা ঘাঁটিতে ঢুকতে দেওয়ার সিদ্ধান্তের সমালোচনাও করা হয়েছে কমিটির রিপোর্টে। কমিটির মতে, ভারতীয় গোয়েন্দারা পাকিস্তানে যাওয়ার ছাড়পত্র পাননি। উল্টে পাক গোয়েন্দাদের পাঠানকোটের সামরিক ঘাঁটিতে ঢুকতে দেওয়ায় তার নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়েছে।

জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বর্তমানে সেই রাজ্যে রয়েছেন। কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, যে ভাবে গত এক মাস ধরে জম্মু-কাশ্মীরে সেনা ও জঙ্গিদের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধেছে তা যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলেই মনে করছেন সদস্যরা। বেড়েছে জঙ্গি অনুপ্রবেশের ঘটনাও। বছরের এই সময়ে পাহাড়ে বরফ গললে পাক সেনার সাহায্যে ভারতে জঙ্গি অনুপ্রবেশ এমনিতেই বেড়ে যায়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর, বর্তমানে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর অন্তত তিরিশটি জায়গায় শ’খানেক জঙ্গি ভারতে ঢোকার জন্য ওত পেতে রয়েছে। তাদের সাহায্য করছে পাক সেনা। কমিটি সদস্যরা তাই মনে করছেন, দুর্গম বলে সীমান্তের যে সব জায়গায় কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া সম্ভব নয়, সেখানে অবিলম্বে নাইট- ভিশন ক্যামেরা, লেজার-রশ্মির বেড়া দেওয়ার কাজ শুরু করুক কেন্দ্র। সংসদীয় কমিটির মতে, এই ব্যবস্থা করা না হলে কখনওই দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না। সামান্যতম অসতর্কতার সুযোগেই জঙ্গিরা ঢুকবে। হামলা চালাবে ফের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE