Advertisement
১১ মে ২০২৪
২৯শে কংগ্রেসের জাতীয় সমাবেশ

বিমানের বরাত পাইয়ে দিতে ছক, আক্রমণে রাহুল

আজও রাফাল ও বিমান কেনার নয়া দরপত্র নিয়ে বন্ধু-তোষণের অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করেছেন রাহুল গাঁধী।

রাহুল গাঁধী।

রাহুল গাঁধী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৪৪
Share: Save:

লোকসভা ভোটের এক বছর বাকি। নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে হাতিয়ারও মিলেছে অনেক। ব্যাঙ্ক প্রতারণা থেকে দলিতদের ক্ষোভ, চাকরির আকাল থেকে ভয় ও ঘৃণার রাজনীতি। সঙ্গে আবার প্রতিরক্ষা-কেলেঙ্কারিও। আজও রাফাল ও বিমান কেনার নয়া দরপত্র নিয়ে বন্ধু-তোষণের অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করেছেন রাহুল গাঁধী।

কিন্তু শুধু হাতিয়ারে কী হবে, যোদ্ধারাই যদি চাঙ্গা না হয়! তাই ২০১৯-এর মহারণের জন্য এখন থেকেই সংগঠনকে চাঙ্গা করার চেষ্টা শুরু করে দিলেন কংগ্রেস সভাপতি। দিল্লি থেকেই লোকসভা ভোটের আনুষ্ঠানিক লড়াই শুরু করতে চলেছেন তিনি। ২৯ তারিখ দিল্লির জাতীয় সমাবেশের ডাক দিয়েছেন রামলীলা ময়দানে। এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক অশোক গহলৌত সদ্যই সংগঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘গোটা দেশের মানুষের মনের কথা তুলে ধরতেই দিল্লিতে জাতীয় সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে।’’

রাহুল সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পরে সব রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত নেতা ও এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদকদের বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেখানেই সকলে এক সুরে মত দেন, গোটা দেশেই মোদী সরকার সম্পর্কে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে মানুষের মধ্যে। দলিত আইন লঘু করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদেই তা স্পষ্ট। মোদীর ‘অচ্ছে দিন’, বছরে এক কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি যে ফাঁপা বুলি ছিল, তা-ও এখন লোকে বুঝতে পারছে। এর উপর ব্যাঙ্কের বিভিন্ন দুর্নীতি সামনে চলে আসাতেও প্রমাণ হয়েছে, মোদীয় কথায় ও কাজে মিল নেই। এখন প্রয়োজন হল, সব কিছু এক লপ্তে মানুষের সামনে তুলে ধরা। রাজ্যে রাজ্যে এ নিয়ে প্রচার শুরুর আগে ঢাকে কাঠি পড়ার কাজটি হোক দিল্লি থেকেই।

রামলীলা ময়দানে সমাবেশের আগে আজ মোদীর বিরুদ্ধে অস্ত্রে শান দিতে আজ ফের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে রাফাল-দুর্নীতি নিয়ে আক্রমণে যান রাহুল। তাঁর বক্তব্য, মনমোহন সরকারের আমলে ফ্রান্স থেকে ১২৬টি যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু তা বাতিল করে অনেক বেশি দামে মাত্র ৩৬টি রাফাল বিমান কিনছে মোদী সরকার। এতে ৪০ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। রাহুলের দাবি, ফ্রান্সের কাছ থেকে কম সংখ্যায় বিমান কেনা হচ্ছে, যাতে প্রধানমন্ত্রী তাঁর বন্ধুদের জন্য নতুন করে বিমান কেনার দরপত্র বার করতে পারেন। বাকি যুদ্ধবিমানগুলি এ বার মোদী-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত শিল্পপতিদের থেকে কেনা হবে। প্রধানমন্ত্রীর বন্ধুরা ওই বরাত পেতে বিদেশি সংস্থাগুলির সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধছেন।

গত কালই ১০০টি নতুন যুদ্ধবিমান কেনার জন্য প্রস্তাব আহ্বান করেছে বায়ুসেনা। যাতে খরচ পড়বে দেড় হাজার কোটি ডলারেরও বেশি। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ বা ভারতে তৈরি বিমানই কেনা হবে বলে শর্ত রাখা হয়েছে। অনিল অম্বানী থেকে গৌতম আদানির সংস্থা বিদেশি প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে যাচ্ছে।

এটা ঘটনা, যে কোনও ভোটের আগেই প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে। মোদী জমানাতেও সেটা ঘটছে। কিন্তু তার সঙ্গে যোগ হচ্ছে সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষের ক্ষোভ। অশোক গহলৌত বলেন, ‘‘দেশের পরিস্থিতি দেখলেই বোঝা যায়, মানুষ হতাশ। যে কোনও স্তরের মানুষ দমবন্ধ বোধ করছেন। ভয়, ঘৃণা, অবিশ্বাস, হিংসার পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। রাহুল গাঁধী কিন্তু বলছেন, ভালবাসা, সহিষ্ণুতা, অহিংসা দিয়েই রাজনীতি করতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE