ছবি: সংগৃহীত।
নিছক হোঁচট খাওয়া নয়, নোট বাতিল ও জিএসটি-র ধাক্কায় নরেন্দ্র মোদীর আমলে আর্থিক বৃদ্ধি রীতিমতো মুখ থুবড়ে পড়েছে। এমন সুযোগ ছাড়ে কে! একেবারে খাপ খোলা তলোয়ার নিয়ে নরেন্দ্র মোদী-অরুণ জেটলির বিরুদ্ধে নেমে পড়লেন রাহুল গাঁধী।
গত কাল সরকারেরই পূর্বাভাস জানিয়েছে, চলতি অর্থবর্ষে জিডিপি-র বৃদ্ধির হার নামবে ৬.৫ শতাংশে। এ নিয়ে বিরোধীরা গত কালই সরকারের নীতিকে বিঁধেছিলেন। আজ মোদীর ‘বিভেদের রাজনীতি’ ও অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির ‘পারদর্শিতার অভাব’কেই দুষলেন কংগ্রেস সভাপতি।
রাহুলের খোঁচা সামাল দিতে এবং মোদীর মুখ বাঁচাতে জেটলি এ দিনও ফের পুরনো তত্ত্বই আউড়েছেন। তাঁর দাবি, এই ধাক্কা সাময়িক। নোট বাতিল এবং জিএসটি-র দৌলতে বৃদ্ধির হার কমেছে মেনে নিয়েও অর্থমন্ত্রীর দাবি, অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।
মোদী জমানার আর্থিক হাল ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রাহুল জানান, গত ১৩ বছরে নতুন লগ্নি সব থেকে তলানিতে। ব্যাঙ্কের ঋণের বৃদ্ধি ৬৩ বছরে সর্বনিম্ন। নতুন কর্মসংস্থান ৮ বছরে সর্বনিম্ন। কৃষিতে বৃদ্ধিও কমছে। বাড়ছে রাজকোষ ঘাটতি, থমকে থাকা প্রকল্পের সংখ্যা। রাহুলের কটাক্ষ, ‘‘ মোদীর গ্রস ডিভাইসিভ পলিটিক্সের সঙ্গে অর্থমন্ত্রী জেটলির জিনিয়াস যোগ হয়ে ভারতকে এ সবই দিয়েছে!’’
মোদী জমানার আর্থিক হালকে বিঁধতে রাহুল আসরে নামিয়েছেন ইউপিএ-আমলের অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম এবং শিল্প-বাণিজ্য মন্ত্রী আনন্দ শর্মাকেও। রাহুলের পরিকল্পনা, জানুয়ারি মাস জুড়ে কংগ্রেস নেতারা বিভিন্ন শহরে গিয়ে গিয়ে মোদী জমানায় অর্থনীতির দুরবস্থা নিয়ে প্রচার করবেন।
এত দিন আর্থিক নীতির জন্য শুধু মোদীকেই নিশানা করতেন রাহুল। এখন জেটলিকেও ছাড়ছেন না তিনি। জেটলি অবশ্য নিজের দলের মধ্যেই সমালোচনায় বিদ্ধ হচ্ছেন। বাজপেয়ী সরকারের অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিন্হা এ দিন অর্থনীতির বেহাল দশা নিয়ে জেটলিকে তীব্র কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘‘বিশ্ব অর্থনীতি দ্রুত এগোচ্ছে। দেশে স্থিতিশীল সরকার। যুদ্ধ নেই, সঙ্কট নেই। তা-ও বৃদ্ধির হার মাত্র ৬.৫ শতাংশ! চার বছরে সর্বনিম্ন। অর্থমন্ত্রী দারুণ কাজ করছেন বটে!’’
সব মহলের চাপের মুখে আজ জেটলি দাবি করেন, অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। তার প্রমাণ হল, ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া ঋণের পরিমাণ বাড়ছে। ইউকো ব্যাঙ্কের প্ল্যাটিনাম জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে জেটলি বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কের ঋণ ঠিক করে বৃদ্ধির গতি কী হবে। ঋণের বৃদ্ধি বাড়ছে। পুঁজির জোগান বাড়লে ঋণের পরিমাণও বাড়বে।’’
এই বক্তব্য উড়িয়ে চিদম্বরমের পাল্টা দাবি, ব্যাঙ্কের ঋণ বৃদ্ধির গতি যথেষ্ট শ্লথ। অর্থনীতির পক্ষে যা ভাল নয়। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘চিনির প্রলেপ দিয়ে, মিথ্যে ঢাক পিটিয়ে আর বাস্তবটা লুকনো যাবে না!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy