ফাইল চিত্র।
ভূস্বর্গ ভয়ঙ্কর। দার্জিলিংও টালমাটাল।
তাই এ বার পুজোয় ভ্রমণপিপাসু বাঙালিকে টানছে দক্ষিণ ভারত। বাঙালির এই চাহিদা মাথায় রেখেই তাঁদের ‘হমসফর’ বা সফর-সুহৃদ হয়ে উঠতে চাইছে রেল মন্ত্রক।
মধ্যবিত্ত, স্বাচ্ছন্দ্যসন্ধানী যাত্রীদের কথা মাথায় রেখে দাক্ষিণাত্যে পাড়ি দেওয়ার জন্য চালু করা হচ্ছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত নতুন হমসফর এক্সপ্রেস। দক্ষিণ-পূর্ব রেল সূত্রের খবর, বিজয়ওয়াড়াগামী ‘হমসফর এক্সপ্রেস’ হাওড়া থেকে যাত্রা শুরু করবে ১৭ জুন, শনিবার। আপাতত চলবে সপ্তাহে এক দিন। তার পরে চাহিদা বুঝে সফরের দিন বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন রেলকর্তারা।
‘হমসফর এক্সপ্রেস’ অবশ্য এই প্রথম নয়। গোটা দেশে এর আগে এই গোত্রের সাতটি দূরপাল্লার ট্রেন চালু হয়েছে। তার মধ্যে হাওড়া থেকে (ভায়া বেঙ্গালুরু) যশবন্তপুরের ট্রেনও রয়েছে। রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু ঘোষণা করেছিলেন, এ বছর এই ধরনের ১১টি ট্রেন চালু করা হবে। হমসফর এক্সপ্রেসের বৈশিষ্ট্য মেনে সব ট্রেনেই থাকছে ১৬টি এসি থ্রি-টিয়ার কামরা। থাকছে প্যান্ট্রিকারও। তবে খাবার নেওয়া বাধ্যতামূলক নয়। এই ট্রেনের কামরা রাজধানী এক্সপ্রেসের কামরার চেয়েও দামি। রাজধানী, শতাব্দী, দুরন্ত এক্সপ্রেসের মতো ‘ডায়নামিক ফেয়ার’ (ধাপে ধাপে ভাড়া বৃদ্ধি)-এর ব্যবস্থা থাকছে এই ট্রেনেও। নতুন হমসফর এক্সপ্রেস ধরে ভুবনেশ্বর-বিশাখাপত্তনম-রাজামুন্দ্রি হয়ে বিভিন্ন জায়গায় বেড়ানোর সুযোগ থাকছে। ওড়িশার কোথাও বা বিশাখাপত্তনম-আরাকু উপত্যকায় ঘোরার রাস্তাও খোলা। এই ট্রেনে বিজয়ওয়াড়া গিয়ে সেখান থেকে হায়দরাবাদ, চেন্নাই বা কেরল চলে যাওয়াও সহজ হবে।
রেলকর্তাদের ধারণা, কাশ্মীরের সঙ্গে সঙ্গে দার্জিলিঙের পরিস্থিতি ক্রমশ ঘোরালো হয়ে উঠতে থাকায় শেষ বেলায় বহু বাঙালি পর্যটকই পাহাড়-সুমদ্রে ঘেরা কেরল কিংবা অন্ধ্র-তামিলনাডুর দিকে ঝুঁকবেন। ইতিমধ্যে অনেকেই উত্তরবঙ্গের টিকিট কেটে ফেলেছেন। তাঁদেরও অনেকে হয়তো তা বাতিল করে দক্ষিণ ভারতে যাওয়ার রাস্তা খুঁজবেন। তাই পরে হাওড়া থেকে দক্ষিণে যাওয়ার আরও কয়েকটি স্পেশ্যাল ট্রেন দিতে পারেন রেল-কর্তৃপক্ষ। আপাতত পুজোর মাস তিনেক আগে বিজয়ওয়াড়াগামী ট্রেনটি চালু করে বাঙালির মন বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করছেন তাঁরা।
ট্রেনে পুজোয় বেড়াতে যাওয়ার বুকিং অবশ্য ইতিমধ্যে প্রায় শেষ। পুজোর আগে-পরে দিন দশেক প্রায় সব ট্রেনেই ‘ওয়েটিং লিস্ট’ বা অপেক্ষার তালিকা দীর্ঘ। পূর্ব রেল সূত্রের খবর, উত্তরবঙ্গের টিকিটের চাহিদা বেশি। দেহরাদূন, হরিদ্বার, কালকার অনেক ট্রেনেই ‘অপেক্ষা-তালিকা’ ১৫০ ছাড়িয়ে গিয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলে বেঙ্গালুরু, বিশাখাপত্তনম বা তিরুঅনন্তপুরম যাওয়ার ঝোঁকটাও বেশ জোরদার। এমনিতেই যশবন্তপুর, চেন্নাই, সেকেন্দরাবাদ, আমদাবাদের দিকে পড়ুয়া ও রোগীদের ভিড় লেগে থাকে। তার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে পুজোর পর্যটকের ভিড়। দক্ষিণের দিকে চাহিদা আরও বাড়বে বলে মনে করছে রেল। সেই জন্য আরও বিশেষ ট্রেন চালানোর কথা ভেবে রাখছেন রেলকর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy