Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

ছন্দে ফেরার মুখেই আবার বৃষ্টি, বেহাল চেন্নাই

কিছু সময় রেহাই দিয়েই আবার সে এসেছে ফিরে। প্লাবিত শহরটা যখন সবে একটু দম ফেলবে বলে ভাবছে, তখনই ফের বেশ কিছু এলাকায় মেঘের তর্জনী। শুরু হয়েছে ভারী বর্ষণ।

উদ্ধারকাজে ব্যস্ত সেনাকর্মীরা। চেন্নাইয়ে শুক্রবার। ছবি: পিটিআই।

উদ্ধারকাজে ব্যস্ত সেনাকর্মীরা। চেন্নাইয়ে শুক্রবার। ছবি: পিটিআই।

সংবাদসংস্থা
চেন্নাই শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:৫৩
Share: Save:

কিছু সময় রেহাই দিয়েই আবার সে এসেছে ফিরে। প্লাবিত শহরটা যখন সবে একটু দম ফেলবে বলে ভাবছে, তখনই ফের বেশ কিছু এলাকায় মেঘের তর্জনী। শুরু হয়েছে ভারী বর্ষণ।

এখনও পর্যন্ত সাড়ে দশ হাজারেরও বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ঠিকই। কিন্তু কয়েক লক্ষ মানুষকে তাড়া করছে জল-যন্ত্রণা। যে কারণে আজ মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার কেন্দ্র আর কে নগর পরিদর্শনে গিয়ে ঘেরাওয়ের মুখে পড়েন চার প্রবীণ মন্ত্রী। সাধারণ মানুষ তাঁদের উপরে এমন ভাবে চড়াও হতে পারে, ভাবেননি মন্ত্রীরা। তাই বেগতিক দেখে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন তাঁরা।

দীপাবলির সময় থেকে শুরু হওয়া দুর্যোগের পরে আজই প্রথম সরকারি ভাবে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বিদ্যুৎমন্ত্রী নাথম বিশ্বনাথন এবং মুখ্যসচিব জ্ঞানদেশিকান। মানুষের ক্ষোভ প্রশমনে তাঁরা বলেন, ‘‘দ্রুততার সঙ্গে উদ্ধারকাজ চলছে। পৌঁছনো হচ্ছে ত্রাণসামগ্রীও।’’ কিন্তু তাতে শান্ত হচ্ছেন না বাসিন্দারা। অনেক জায়গাতেই সরকারি অফিসাররা গিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়ছেন বলে দাবি করা হয়েছে সরকারি সূত্রে।

কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর আজ বলেছেন, ‘‘চেন্নাই নজিরবিহীন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাক্ষী। এই অবস্থা থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত। নগরায়ন এবং শহর-চালনার ক্ষেত্রে কতটা ভেবেচিন্তে এগোতে হবে, সেই কথা ফের ভাবতে বাধ্য করবে চেন্নাই।’’

শহরাঞ্চলের মধ্যে কোদমবক্কম, টি নগর, অ্যাডেয়ার, কোট্টুপুরম এবং শহরতলির তাম্বরম এলাকায় আজ ফের শুরু হয়েছে বৃষ্টি। কখনও কখনও টানা ভারী বর্ষণও। যদিও আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে হাল্কা বৃষ্টির সম্ভাবনার কথাই বলেছিল হাওয়া অফিস। তবে কাল থেকে কিছু ক্ষণ বৃষ্টি না হওয়ায় সামান্য কিছুটা হলেও উন্নতি হয়েছে তামিলনাড়ুর রাজধানীর। অ্যাডেয়ার এবং কৌউম নদীর জলস্তর অনেকটা নেমেছে। আংশিক ভাবে ফেরানো গিয়েছে মোবাইল ফোন পরিষেবা। কোনও কোনও এলাকায় রাস্তাঘাটে বেরোতে দেখা গিয়েছে লোকজনকে। সেই সব জায়গায় জল সরেছে বৃষ্টির বিরতিতে। সামান্য সংখ্যায় নামতে দেখা গিয়েছে সরকারি কিছু বাসকে। তবে রাস্তার অবস্থা ভয়াবহ। জল সরলেও জমে রয়েছে আবর্জনার স্তূপ। তবে এর মধ্যেই মাদ্রাজ হাইকোর্টের মাদুরাই বেঞ্চ তামিলনাড়ু সরকারকে আজ বলেছে, আটকে থাকা লোকজনকে বিনামূল্যে বাসে করে নিরাপদ জায়গায় কী ভাবে নিয়ে আসা যায়, তার ব্যবস্থা করতে। কিন্তু বিদ্যুৎ সংযোগ না ফেরায় দুর্ভোগ চলছেই।

আরও পড়ুন, বিপদের উপর বিপদ, বিমান ভাড়া আকাশছোঁয়া

রেল যোগাযোগ এখনও বিপর্যস্ত। হাওড়া থেকে শনিবারও কোনও ট্রেন চেন্নাই রওনা দিতে পারবে না। একই ভাবে চেন্নাই থেকে কলকাতা ফেরার সম্ভাবনা নেই কোনও ট্রেনের। কিছু কিছু সড়কে জল সরলেও গাড়ি চালানোর জন্য তেল নেই অনেকের কাছেই। ইন্ডিয়ান অয়েল জানিয়েছে, সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় তেল পাঠাতে পারছে না তারা। বড় বড় আবাসনে আবার অন্য সমস্যা। জল তোলার পাম্প অকেজো হয়ে পড়েছে।

উদ্ধারকাজে গতি আনতে জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী আরও ২০টি দলকে ডেকেছে। বাহিনীর ডিজি ও পি সিংহ জানিয়েছেন,
আজ থেকে মোট ৫০টি দল উদ্ধারে নামবে। দুর্গতদের খাবারও পৌঁছে দেবে তারা। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আজ চেন্নাই যান সেনাপ্রধান দলবীর সিংহ সুহাগ।

পাশাপাশি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে আমেরিকাও। মার্কিন বিদেশ দফতরের উপমুখপাত্র মার্ক টোনার বলেছেন, চেন্নাইয়ের মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই আমরা। ভারত সরকাকে যে কোনও ধরনের সহায়তা করার জন্য তৈরি আমেরিকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

rain chennai difficulty
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE