Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

রামদেব-ঘনিষ্ঠের সঙ্গে বৈঠক সইদের

লস্কর-ই-তইবার প্রধান হাফিজ সইদের সঙ্গে রামদেবের সহযোগী বেদপ্রতাপ বৈদিকের বৈঠক নিয়ে সোমবার উত্তাল হল সংসদ। কেন্দ্রই বৈদিককে সইদের সঙ্গে দেখা করতে পাঠিয়ে থাকতে পারে বলে দাবি করেছে কংগ্রেস। মোদী সরকারের পাল্টা দাবি, তাদের সঙ্গে বৈদিক-সইদ বৈঠকের সম্পর্ক নেই। বিতর্কের পর ভারতীয় রাজনীতিকদের “সংকীর্ণ মানসিকতা”কে ব্যঙ্গ করেছেন সইদ।

সইদ-বৈদিক বৈঠকের এই ছবিই ছড়িয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

সইদ-বৈদিক বৈঠকের এই ছবিই ছড়িয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৪ ০৩:৪১
Share: Save:

লস্কর-ই-তইবার প্রধান হাফিজ সইদের সঙ্গে রামদেবের সহযোগী বেদপ্রতাপ বৈদিকের বৈঠক নিয়ে সোমবার উত্তাল হল সংসদ।

কেন্দ্রই বৈদিককে সইদের সঙ্গে দেখা করতে পাঠিয়ে থাকতে পারে বলে দাবি করেছে কংগ্রেস। মোদী সরকারের পাল্টা দাবি, তাদের সঙ্গে বৈদিক-সইদ বৈঠকের সম্পর্ক নেই। বিতর্কের পর ভারতীয় রাজনীতিকদের “সংকীর্ণ মানসিকতা”কে ব্যঙ্গ করেছেন সইদ। বৈদিক জানিয়েছেন, এটা এমন কিছু বড় বিষয় নয়।

সাংবাদিক বেদপ্রতাপ বৈদিক রামদেবের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। সরকারি সূত্রে খবর, তিনি ‘বিবেকানন্দ ফাউন্ডেশন’ সংস্থার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। ওই সংস্থাটির সঙ্গে আরএসএসের যোগ রয়েছে। ‘বিবেকানন্দ ফাউন্ডেশন’-এর মূল কর্মকর্তা ছিলেন অজিত ডোভাল। বর্তমানে তিনি মোদী সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা।

চলতি মাসের গোড়ায় পাকিস্তানের একটি সংস্থার আমন্ত্রণে সে দেশে যায় ভারতীয় রাজনীতিক ও সাংবাদিকদের একটি দল। দলটির নেতা ছিলেন কংগ্রেস নেতা মণিশঙ্কর আইয়ার। ওই প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবেই বৈদিক পাকিস্তানে যান। ২ জুলাই সইদের সঙ্গে এক ঘণ্টা কথা বলেন তিনি।

ওই বৈঠকের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত হওয়ার পরে বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা শুরু হয়। সইদ ভারত ও আমেরিকার ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায় রয়েছেন। দিল্লির দাবি, মুম্বইয়ে ২৬/১১-র হামলার মূল চক্রী সইদ। তাঁর বিরুদ্ধে প্রমাণও ইসলামাবদকে দেয় দিল্লি। তবে সেই প্রমাণ উড়িয়ে দিয়েছে পাক আদালত। সইদের দাবি, তিনি জামাত-উদ-দাওয়া নামে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন চালান। ভারত ও আমেরিকার মতে, জামাত লস্করেরই অন্য রূপ। পাকিস্তানে নানা মঞ্চে ভারত-বিরোধী উত্তেজক বক্তৃতা দেন সইদ।

গত কালই কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহ টুইটারে প্রশ্ন তোলেন, বৈদিক কি এনডিএ সরকারের দূত হিসেবেই সইদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন? আজ সংসদে এই প্রশ্ন তোলেন কংগ্রেস সাংসদরা। গোলমালের জেরে দু’বার রাজ্যসভার অধিবেশন স্থগিত রাখতে হয়। রাজ্যসভায় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেন, “সইদের সঙ্গে কোনও সাংবাদিকের বৈঠক হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু তার সঙ্গে সরকারের কোনও যোগ নেই। সরকার কাউকে সইদের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেয়নি।” ভারত সরকার এখনও সইদকে জঙ্গি বলেই মনে করে বলে সাফ জানিয়েছেন জেটলি।

স্পষ্টতই জেটলির জবাবে খুশি হননি বিরোধীরা। বৈদিককে গ্রেফতারের দাবিও করেছে কোনও কোনও শিবির।

লস্কর নেতার সঙ্গে তাঁর বৈঠক নিয়ে ঝড় উঠলেও বিশেষ ভাবান্তর নেই বৈদিকের। তিনি জানিয়েছেন, অন্য কারও দূত হয়ে সইদের সঙ্গে তিনি দেখা করেননি। পাক সাংবাদিকদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে। তাঁরাই সইদের সঙ্গে বৈঠকের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। বৈদিকের দাবি, “ সইদ যে ভুল তত্ত্ব প্রচার করেন তা প্রমাণ করতেই তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলাম। এটা আমার কাছে তেমন বড় বিষয় নয়। আমি নেপালের মাওবাদী ও তালিবানের সঙ্গেও দেখা করেছি। সংসদে হইচই হলে আমিই প্রচার পাব।” টুইটারে তাঁর কটাক্ষ, “সইদের সঙ্গে দেখা করতে হলে কংগ্রেস নেতাদের প্যান্ট ভিজে যেত।”

সংসদে গোলমাল নিয়ে ভারতকে কটাক্ষ করেছেন সইদও। টুইটারে তিনি জানিয়েছেন, বৈদিকের সঙ্গে তাঁর বৈঠক নিয়ে হইচই ভারতীয় রাজনীতিকদের সংকীর্ণ মানসিকতার পরিচয়। সইদের কথায়,“২৬/১১ হামলা নিয়ে ভারত পাকিস্তানকে যা প্রমাণ দিয়েছে তা নিয়ে বৈদিকের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। ভারত পাক আদালতকে কেন বিশ্বাস করে না তা ওঁর কাছে জানতে চাই।” সইদের দাবি, মোদী পাকিস্তানে এলে জামাত-উদ-দাওয়া বিক্ষোভ দেখাবে কি না তা জানতে চেয়েছিলেন বৈদিক। তিনি জানিয়ে দেন, রাজনৈতিক বিক্ষোভে অংশ নেয় না জামাত-উদ-দাওয়া।

সহযোগীকে বাঁচাতে এগিয়ে এসেছেন রামদেবও। তাঁর বক্তব্য, “বৈদিক সাংবাদিক ও দেশপ্রেমিক। সইদের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের পিছনে নিশ্চয় কোনও কারণ আছে। তিনি সইদের মন বদলের চেষ্টাও করে থাকতে পারেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ramdeb hafiz saeed bedpratap baidik
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE