বাড়িতে অনেকের সঙ্গে দেখা করলেও কোনও দোষীকে আড়াল করেননি বলে জানালেন সিবিআই প্রধান রঞ্জিত সিন্হা। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের জবাবে আজ সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়েছেন রঞ্জিত।
সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে টুজি ও কয়লা কাণ্ডের তদন্ত করছে সিবিআই। সম্প্রতি শীর্ষ আদালতে রঞ্জিতের বাড়ির একটি রেজিস্টার পেশ করেন আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। ভূষণ জানান, ওই রেজিস্টারে টুজি ও কয়লা মামলার অভিযুক্ত-সহ নানা বিতর্কিত ব্যক্তির নাম রয়েছে। তাঁর অভিযোগ, ওই অভিযুক্তদের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন রঞ্জিত। এই অভিযোগের জবাবে রঞ্জিতকে হলফনামা দিতে বলেছিল শীর্ষ আদালত।
আজ সেই হলফনামা দেন রঞ্জিত। একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি অনেকের সঙ্গেই দেখা করি। তাঁদের মধ্যে অনেকেই সিবিআইয়ের সদর দফতরে আমার সঙ্গে দেখা করলে অকারণ হইচই হবে। তাই আমার বাড়িতেও একটি অফিস আছে।” রঞ্জিতের ঘনিষ্ঠদেরও দাবি, টুজি, কয়লা মামলার অভিযুক্ত-সহ নানা চরিত্রের সঙ্গে দেখা করতেই হয় সিবিআই প্রধানকে। অনেক সময়ে কোনও সিবিআই অফিসারের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ নিয়ে আসেন কোনও অভিযুক্ত। তাই এই ধরনের বৈঠকে অন্যায় কিছু নেই।
তাঁদের আরও দাবি, অনেকের সঙ্গে দেখা করলেও কাউকে আড়াল করার চেষ্টা করেননি সিবিআই প্রধান। বরং অনেক ক্ষেত্রে নিজের সহযোগীদের মতের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করেছেন। যেমন টুজি কেলেঙ্কারিতে এয়ারসেল-ম্যাক্সিস চুক্তি। এ ক্ষেত্রে সহযোগীদের মত না মেনে প্রাক্তন টেলিকম মন্ত্রী দয়ানিধি মারানের বিরুদ্ধে কড়া চার্জ আনার সিদ্ধান্ত নেন রঞ্জিত।
কয়লা কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত অন্য একটি শুনানিতে আজ সিবিআইয়ের সমালোচনা করেছে বিশেষ আদালত। শিল্পপতি কুমারমঙ্গলম বিড়লার বিরুদ্ধে মামলা ‘তাড়াহুড়ো’ করে কেন বন্ধ করা হল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষ বিচারক ভরত পরাশর। ১৯৯৩ সাল থেকে সরকারি কমিটির পছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন সংস্থাকে ২১৮টি কয়লাখনি দেওয়া হয়েছিল। সেই বণ্টন বেআইনি বলে সম্প্রতি ঘোষণা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের নির্দেশেই কয়লা কাণ্ডের বিচার চলছে বিচারক পরাশরের এজলাসে।
ওই ২১৮টি খনির তালিকায় ছিল বিড়লার সংস্থা হিন্দালকোর হাতে থাকা ওড়িশার তালাবিরাও। ওই খনি দেওয়া নিয়ে অনিয়মের অভিযোগে বিড়লা ও প্রাক্তন কয়লাসচিব পি সি পরাখের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছিল সিবিআই। সম্প্রতি তারা আদালতে জানায়, সাক্ষ্যপ্রমাণ না পাওয়ায় বিড়লা ও পরাখের বিরুদ্ধে মামলা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সরকারি কমিটির যে বৈঠকে বিড়লাকে কয়লাখনি দেওয়া হয়েছিল সেই বৈঠকের কার্যবিবরণী আজ দেখতে চান বিচারক। তদন্তকারী অফিসার (আইও) জানান, কার্যবিবরণী ‘হারিয়ে’ গিয়েছে। বিচারক পাল্টা জানান, ওই কার্যবিবরণী যে হারিয়ে গিয়েছে তা নিয়ে কোনও তদন্তকারী অফিসার বিবৃতি দেননি। বিড়লার বিরুদ্ধে মামলার কেস ডায়েরিও জমা দিতে পারেনি সিবিআই।
এর পরেই বিচারক প্রশ্ন করেন, “এত তাড়াহুড়ো করে মামলা বন্ধ করার কী প্রয়োজন ছিল?” তদন্তকারী অফিসারের ঊর্ধ্বতন কর্তাকে পরবর্তী শুনানিতে হাজির থাকার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy