মরেও শান্তি নেই লোহারডাগায়!
অস্থি বিসর্জনের জলটুকুও মিলছে না সেখানে। কারণ, প্রচণ্ড গরমে শুকিয়ে কাঠ শ্মশানঘাটের লাগোয়া নদীগুলি। উপায় খুঁজে না পেয়ে ফটক বন্ধ হয়ে গিয়েছে অনেক শ্মশানেই। দেহ নিয়ে ঘুরপাক খেতে হচ্ছে মৃতের আত্মীয়-বন্ধুদের!
কয়েক দিন আগের কথা। লোহারদাগার কাছাড়ি মোড়ের কাছে কোয়েল নদীর তীরে ঠুঠি অম্বা শ্মশানে পৌঁছে শ্মশান-বন্ধুদের চক্ষু চড়কগাছ। ঘাটের দরজাই যে বন্ধ সেখানে। সেখানকার কর্মীরা হাতজোড় করে জানিয়েছিলেন— নদীতে এক ফোঁটাও জল নেই। অস্থি বিসর্জন করা যাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়েই শ্মশান বন্ধ রাখা হয়েছে।
শ্মশান-বন্ধুদের ওই দলে ছিলেন রাম যাদব। তিনি বলেন, “মনে তখনই খটকা লেগেছিল। কোয়েল নদীর যখন এই অবস্থা, তখন বাকিগুলির হাল আরও খারাপ হবে বলে বুঝতে পেরেছিলাম।’’ তিনি জানান, শহরের অন্য শ্মশানঘাটের ছবিটাও ছিল একই। সদর শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে নন্দিনী নদীর তীরের একটা শ্মশানে কিছুটা জল রয়েছে বলে খবর পেয়ে সে দিকে ছুটেছিলেন সকলে। অবশেষে সেখানেই দেহটির অন্তিম সংস্কার করা হয়।
শুধু অস্থি বিসর্জনই নয়, মস্তক মুণ্ডন থেকে স্নান— পারলৌকিক সে সব কাজের জন্যও জলের দরকার। নদী তো দূর, লোহারডাগার কয়েকটি শ্মশানে পুরসভার জলের পাইপেও জল পাওয়া যাচ্ছে না। শুকিয়ে গিয়েছে কুয়োও।
ঠুঠি অম্বা শ্মশানের এক কর্মী জানিয়েছেন, শবদেহ নিয়ে আসা লোকেদের তাঁরা বাড়ি থেকেই জলভরা পাত্র নিয়ে আসার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছেন।
কোয়েল নদীর শ্মশানঘাট ছাড়া লোহারডাগা শহরের কাছেই রয়েছে শঙ্খ নদী লাগোয়া শ্মশান। দু’টি জায়গাতেই চলছে জলের হাহাকার। শহরের আশপাশে নন্দিনী নদী, সুকরি নদী, কান্দিনী নদীর তীরেও রয়েছে শ্মশান। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, সুকরি নদীর তীরের বালি খুঁড়ে জল বের করে কোনও রকমে পারলৌকিক কাজকর্ম সারছেন মৃতদের আত্মীয়রা।
স্থানীয় কংগ্রেস বিধায়ক সুখদেব ভগতের কথায়, “প্রতি বছর গরমে জেলার নদীগুলির অনেকটাই শুকিয়ে যায়। কিন্তু শ্মশান বন্ধ হওয়ার মতো পরিস্থিতি আগে কখনও হয়নি। এই বিষয়ে জেলার ডিসির সঙ্গে আলোচনা করছি। বৃষ্টি না নামলে নদীর তীরের বালি খুঁড়ে জলের খোঁজ করা ছাড়া উপায় নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy