সুরেশ সোনি
নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ আরএসএস নেতা সুরেশ সোনিকে ফের সঙ্ঘের কাজে ফেরানোর তোড়জোড় শুরু হল। মধ্যপ্রদেশে ব্যপম দুর্নীতিতে নাম জড়ানোর পরে সঙঘ এই নেতাকে এক বছরের জন্য ছুটিতে পাঠিয়েছিল। আরএসএস সূত্রের খবর, আগামী মাসে উত্তরপ্রদেশের কানপুরে সঙ্ঘের ‘প্রান্ত প্রচারক’দের নিয়ে চার দিনের বৈঠক হবে। সেই বৈঠকে সোনিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
সোনি এক দশকের বেশি সময় ধরে বিজেপি এবং আরএসএসের মধ্যে যোগাযোগ রাখার দায়িত্ব পালন করে এসেছেন। লোকসভা নির্বাচনের আগে মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থ়ী হিসেবে তুলে ধরার পিছনে সঙ্ঘের তরফে অন্যতম নেপথ্য কারিগরও ছিলেন তিনি। কিন্তু গত বছর মধ্যপ্রদেশের ব্যপম কেলেঙ্কারিতে তাঁর নাম আসার পর তাঁকে ছুটিতে পাঠানো হয়।
গত বছর ব্যাপম কেলেঙ্কারি নিয়ে তখন সংসদ তোলপাড় চলছিল। কংগ্রেস গোটা অধিবেশন স্তব্ধ রেখেছিল দুর্নীতির অভিযোগ তুলে। সঙ্ঘ নেতৃত্বও তখন নিজেদের কলুষমুক্ত রাখতে চাইছিলেন। তখন সঙ্ঘের তরফে জানানো হয়েছিল, পড়াশোনার জন্য এক বছর ছুটি নিয়েছেন সোনি। ব্যপম নিয়ে অভিযোগের ঝড় এখন থিতিয়ে এসেছে। নতুন করে সেই অভিযোগ আর তোলে না বিরোধীরা। তা ছাড়া, কয়েক রাজ্যে নির্বাচন রয়েছে সামনে। উত্তরপ্রদেশ যার অন্যতম। এই অবস্থায় ফের সোনিকে সঙ্ঘের কাজে ফেরানোর তোড়জোড় শুরু হল।
সঙ্ঘ সূত্র অবশ্য জানাচ্ছে, সোনির ‘ঘর ওয়াপসি’ হলেও এখনই তাঁকে পুরনো দায়িত্বে ফেরানোর কথা ভাবা হচ্ছে না। কারণ, আরএসএস-প্রধান মোহন ভাগবত ইতিমধ্যেই কৃষ্ণ গোপালকে বিজেপি ও সঙ্ঘের মধ্যে সংযোগ রক্ষার দায়িত্ব দিয়েছেন। আরএসএসের আর এক নেতা দত্তাত্রেয় হোসবলে-কে দেওয়া হয়েছে উত্তরপ্রদেশ দেখার ভার। এই রাজ্যের নির্বাচনে সঙ্ঘ পুরোদস্তুর সাহায্যও করছে বিজেপি-কে। এই পরিস্থিতিতে সোনি ফের সক্রিয় হলে তাঁকে অন্য কোনও দায়িত্বও দেওয়া হতে পারে। কী সেই দায়িত্ব, তা অবশ্য স্পষ্ট নয় সঙ্ঘেরই অনেকের কাছে।
লোকসভা ভোটের আগে গোয়ায় বিজেপির কর্মসমিতির বৈঠকে যখন মোদীর নাম প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করার জন্য ধাপে ধাপে তুলে ধরা হচ্ছিল, সে সময় দলের প্রবীণ নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী প্রবল বিরোধিতা করেন। গরহাজির থাকেন বৈঠকে। পরে ইস্তফাও দেন। তখন আডবাণীর অন্যতম দাবিই ছিল, সঙ্ঘ-বিজেপির সমন্বয়ের দায়িত্ব থেকে সোনিকে সরাতে হবে। সে সময় আডবাণীর মানভঞ্জন করেন স্বয়ং ভাগবত। আডবাণীকে নিরস্ত্র করতে সোনির ডানা ছাঁটা হয়। কৃষ্ণ গোপাল ও দত্তাত্রেয় হোসবলে-কে সামনে নিয়ে আসেন ভাগবত। ব্যপম নিয়ে প্রবল চাপের মুখে শেষে ছুটিতেই পাঠিয়ে দেওয়া হয় সোনিকে।
বিজেপির একটি সূত্রের বক্তব্য, ‘‘গত বছরের ঝড় এখন থেমে গিয়েছে। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীও যদি সোনিকে ফেরত আনার ব্যাপারে ইচ্ছে প্রকাশ করেন, সেটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। সামনে অনেকগুলি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। সেখানে সঙ্ঘের সাহায্য নিয়েই কাজ করতে চায় বিজেপি।’’ বিজেপি সূত্রটির মতে, সম্পর্ক ভাল থাকলে সমন্বয়ের কাজটিও সুষ্ঠু ভাবে হয়। দলে ও সরকারে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগের ব্যাপারেও সঙ্ঘের মত নেওয়া হয়। সুব্রহ্মণ্যম স্বামীকে রাজ্যসভায় আনার পিছনেও সঙ্ঘের প্রভাব ছিল। যা নিয়ে সরকারকেই এখন বিপাকে পড়তে হচ্ছে নানা ভাবে। এ সব নানা রকম বিষয় সামলাতে সঙ্ঘ ও দলের মধ্যে সমন্বয় যত বাড়ে, ততই ভাল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy