Advertisement
১১ মে ২০২৪

অভিযুক্তদের চিনলেন না রুমি

পুলিশ যাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছিল, তাদের একজনকেও চিনতে পারলেন না বড়খলার বিধায়ক রুমি নাথ এবং তাঁর বিচ্ছিন্ন স্বামী জ্যাকি জাকির। ফলে প্রয়োজনীয় প্রমাণের অভাবে ২২ জন অভিযুক্তকে মুক্তি দিল করিমগঞ্জের এসিজেএম আদালত।

করিমগঞ্জ আদালতে রুমি নাথ। শুক্রবার।— নিজস্ব চিত্র।

করিমগঞ্জ আদালতে রুমি নাথ। শুক্রবার।— নিজস্ব চিত্র।

শীর্ষেন্দু সী
করিমগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৫ ০৩:৪৬
Share: Save:

পুলিশ যাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছিল, তাদের একজনকেও চিনতে পারলেন না বড়খলার বিধায়ক রুমি নাথ এবং তাঁর বিচ্ছিন্ন স্বামী জ্যাকি জাকির। ফলে প্রয়োজনীয় প্রমাণের অভাবে ২২ জন অভিযুক্তকে মুক্তি দিল করিমগঞ্জের এসিজেএম আদালত।

২০১২ সালের ২৯ জুন করিমগঞ্জের একটি হোটেলে শারীরিক নিগ্রহের শিকার হন বিধায়ক এবং তাঁর তখনকার সদ্য-বিবাহিত স্বামী জাকির। বিধায়ক রুমি নাথ তাঁর প্রথম স্বামী রাকেশ সিংহকে পরিত্যাগ করে তরুণ জ্যাকি জাকিরকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর প্রথমে করিমগঞ্জ এবং পরবর্তী সময়ে ত্রিপুরায় গিয়ে আশ্রয় নেন দু’জনে। ২৯ জুন রাতে করিমগঞ্জের হোটেলে আসেন রুমি নাথ এবং জাকির। হোটেলে দু’জন রয়েছেন, এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই করিমগঞ্জ শহরে উত্তেজনা দেখা দেয়। বিশাল জনতা হোটেলে আক্রমণ চালায়। হোটেলের ভিতরে বিধায়ক ও জাকিরকে বেধড়ক প্রহার করা হয়। পরে তাঁদের অভিযোগ ক্রমে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৭-১৪৯-৩৪২-৩২৫-৩৭৯-৩০৭ ধারায় করিমগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ সেই মামলার তদন্ত করে ২২ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে।

করিমগঞ্জের আদালতে আজই হাজিরা দেন বিধায়ক ও তাঁর এখনকার বিচ্ছিন্ন স্বামী জাকির। কিন্তু দু’জনেই চার্জশিটে নির্দিষ্ট ওই ২২ জনকে আদালতে দাঁড়িয়ে চিনতে পারেননি। ফলে আদালত মামলাটি বন্ধ করে দিয়ে অভিযুক্তদের নির্দোষ বলে ঘোষণা করেছে। মারধরের ঘটনায় সুব্রত ভট্টাচার্য, সুভাষ সোম, বাদল দাস, মনোজ গোয়ালা, শম্ভু দাস, রঞ্জিত দাস, কুটি দাস, মোহিত দত্ত, অঞ্জন নমঃশূদ্র, নারায়ণ চক্রবর্তী, সঞ্জয় মালাকার, সুমন বণিক, বাপ্পি ঘোষ, রাম দাস, সঞ্জীব বণিক, রূপা দেব, প্রণব ভৌমিক, রাজা বণিক, শঙ্কর রায়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু মামলা দায়ের করা মূল ব্যক্তি অভিযুক্তদের শনাক্ত করতে না পারায় তাঁদের ছাড় দিয়েছে আদালত। এ দিকে, রুমি নাথের সঙ্গে জ্যাকি জাকিরের বিয়ের পর একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। সেই সন্তানটি বর্তমানে জাকিরের কাছেই রয়েছে. কিন্তু দুজনের সম্পর্কের অবসান ঘটায় আজ দুজন এক সঙ্গে আদালতে হাজির হলেও কথা বলা তো দূরের কথা, একজন অন্য জনের দিকে ঘুরেও তাকাননি। করিমগঞ্জের সেই ঘটনার পর বিধায়ক আজই প্রথম করিমগঞ্জে আসেন। তাঁর নিরাপত্তা যাতে কোনও ভাবে বিঘ্নিত না হয় তার জন্য আদালত চত্ত্বরে নিরাপত্তা কঠোর করা হয়। আধা সামরিক বাহিনী থেকে আরম্ভ করে সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীও তত্পর ছিল। আদালতের কাজ ছাড়া অন্য কোনও ব্যক্তিকেই কোর্ট-চত্বরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। তবে আদালত চত্বরের বাইরে উপস্থিত হয় প্রচুর মানুষ। পুলিশের ধারণা, গাড়ি-চুরি মামলার অন্যতম অভিযুক্ত রুমি নাথকে দেখতেই ভিড় উপচে পড়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE