Advertisement
E-Paper

দল ভাঙার প্রশ্নই নেই, জানিয়ে দিলেন মুলায়ম

ফের নাটকীয় মোড় নিল উত্তরপ্রদেশে যাদবকুলের লড়াই। স্পষ্ট ভাষায় মুলায়ম সিংহ যাদব জানিয়ে দিলেন, ‘‘সমাজবাদী পার্টি ভাঙার প্রশ্ন নেই। দলের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী অখিলেশ যাদব।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:০৫

ফের নাটকীয় মোড় নিল উত্তরপ্রদেশে যাদবকুলের লড়াই। স্পষ্ট ভাষায় মুলায়ম সিংহ যাদব জানিয়ে দিলেন, ‘‘সমাজবাদী পার্টি ভাঙার প্রশ্ন নেই। দলের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী অখিলেশ যাদব।’’

রাজনীতিকরা বলছেন, পার্টি ভাঙবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কিন্তু এক পক্ষের বেশি সময় ধরে চলা এই নাটক থেকে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে মুলায়ম সিংহ দ্বিধাবিভক্ত হয়ে রয়েছেন জেদ ও বাৎসল্যের মধ্যে। গতকালের সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, উত্তরপ্রদেশের এক ইঞ্চি জমি তিনি ছাড়বেন না। তিনি এখনও দলের প্রধান। কিন্তু অখিলেশের প্রশ্নে আর্দ্র হয়েছে তাঁর এই কঠিন পালোয়ানি মেজাজ। আজই বলেছিলেন, ‘‘আমার ছেলে ও আমার মধ্যে কোনও মতপার্থক্য নেই। আশা করছি সমস্যার দ্রুত সমাধানসূত্র পাওয়া যাবে।’’ রাতে জানিয়ে দেন, ‘‘দল ভাঙার প্রশ্নই নেই। অখিলেশই মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী হবেন। আমি সারা রাজ্যে প্রচার করব।’’

পারিবারিক কলহের জন্য মুলায়ম কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে চাইছেন তাঁর সম্পর্কিত ভাই অখিলেশ ঘনিষ্ঠ রামগোপাল যাদবকে। নাম না করে আজ তাঁর বার্তা, ‘‘দলে কিছু সমস্যা রয়েছে। সে জন্য দায়ী এক জন। সে-ই ছেলেকে ভুল পথে চালাচ্ছে।’’

দলের প্রতীক সাইকেল কোন শিবিরের দখলে থাকবে, তা নিয়ে এখনও টানাপড়েন চলছে। আজ দিল্লিতে মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার নসীম জৈদীর সঙ্গে বৈঠকে দল ও প্রতীক চিহ্নের উপর তাঁরই একমাত্র অধিকার রয়েছে বলে দাবি করেন মুলায়ম। সূত্রের খবর, কেন তাঁর ছেলে এখনও দলের সভাপতি নন সে বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যাও কমিশনকে দেন মুলায়ম। তিনি জানান, ১ জানুয়ারি রামগোপাল যাদবের জরুরি ভিত্তিতে ডাকা সভায় অখিলেশকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়েছিল। মুলায়মের দাবি, রামগোপালের ওই বৈঠক ডাকার কোনও অধিকারই ছিল না। কারণ তার আগের দিনই রামগোপালকে দল থেকে ছ’বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছিল। তাই ওই বৈঠকে সভাপতি হিসেবে অখিলেশকে বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্তও অবৈধ।

অখিলেশের বিদ্রোহের পিছনে রামগোপালই যে কলকাঠি নাড়ছেন সে বিষয়ে কার্যত নিশ্চিত মুলায়ম। তাই রামগোপালকে দল থেকে বহিষ্কারের পাশাপাশি তাঁকে রাজ্যসভার দলনেতার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এই সিদ্ধান্ত রাজ্যসভার চেয়ারম্যান হামিদ আনসারিকে লিখিত ভাবে জানিয়েও দিয়েছেন।

মুলায়মের পদক্ষেপে অবশ্য একটুও দমে যায়নি অখিলেশ-রামগোপাল শিবির। মুলায়ম নির্বাচন কমিশনে ঘুরে আসার কিছু ক্ষণের মধ্যেই সেখানে উপস্থিত হন রামগোপালরা। সূত্রের খবর, অখিলেশ শিবির নিজেদের দাবির পক্ষে দেড় লক্ষ পাতার নথি জমা দিয়েছে। তাতে দলের বিধায়ক, সাংসদ, পঞ্চায়েত প্রতিনিধি মিলিয়ে ৪৭১৬ জনের অখিলেশের পাশে থাকার হলফনামা রয়েছে। দু’পক্ষের দাবি-দাওয়া সংক্রান্ত কাগজ খতিয়ে দেখে আগামী ১৭ জানুয়ারি চূড়ান্ত রায় দেবে কমিশন। তখনই ঠিক হবে প্রতীক কার হাতে থাকবে।

রাজনীতিকদের মতে, মুলায়মের বাৎসল্য রসের পিছনে সুনির্দিষ্ট রাজনীতিও রয়েছে। মুলায়ম বিলক্ষণ জানেন, এই মুহূর্তে দলের মুখ হলেন অখিলেশ। দল যদি ভাঙে সে ক্ষেত্রে নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে রাজ্যে অন্যতম প্রধান শক্তি হিসেবে উঠে আসতে পারেন অখিলেশ। আর তখন রাজ্য-রাজনীতিতে কার্যত আরও একা হয়ে পড়বেন বৃদ্ধ মুলায়ম। তাই অখিলেশকে বার্তা দিয়ে ছেলের সঙ্গে আপসের রাস্তা খোলা রাখতে চাইছেন মুলায়ম।

অখিলেশ শিবির অবশ্য জানিয়েছে, অমর সিংহকে বহিষ্কার ও শিবপাল যাদবের ডানা ছাঁটা না পর্যন্ত সমাধান সূ্ত্র খোঁজা অর্থহীন। কারণ অখিলেশ মনে করেন, অমর সিংহ বিজেপির এজেন্ট হয়ে সপা ভাঙার কাজে সক্রিয় রয়েছেন। অন্য দিকে শিবপাল ক্ষমতায় থাকলে দল ও প্রশাসনের উপর নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হবে অখিলেশকে।

Mulayam Singh Samajwadi party
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy