Advertisement
১০ মে ২০২৪

জল্পনা শেষ, ইস্তফাই দিলেন রাজ্যপাল শীলা

গত কাল এড়িয়ে গিয়েছিলেন ‘গুজব’ বলে। আজ রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলন করে শীলা দীক্ষিত জানিয়ে দিলেন, কেরলের রাজ্যপাল পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তিনি। নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর শীলা-সহ এই নিয়ে আট জন রাজ্যপালকে সরে যেতে হল। এ ছাড়া মিজোরামের রাজ্যপাল কমলা বেনিওয়ালকে আগেই বরখাস্ত করা হয়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৪ ০৩:২৯
Share: Save:

গত কাল এড়িয়ে গিয়েছিলেন ‘গুজব’ বলে। আজ রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলন করে শীলা দীক্ষিত জানিয়ে দিলেন, কেরলের রাজ্যপাল পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তিনি। নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর শীলা-সহ এই নিয়ে আট জন রাজ্যপালকে সরে যেতে হল। এ ছাড়া মিজোরামের রাজ্যপাল কমলা বেনিওয়ালকে আগেই বরখাস্ত করা হয়েছিল। উত্তরাখণ্ডের রাজ্যপাল আজিজ কুরেশি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ইস্তফার জন্য চাপ সৃষ্টির অভিযোগ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন। এঁদের সকলকেই নিয়োগ করেছিল ইউপিএ সরকার।

কেন্দ্র আজ রাজস্থান, কর্নাটক, মহারাষ্ট্র ও গোয়ায় নতুন রাজ্যপাল নিয়োগ করেছে। এঁদের মধ্যে উল্লেখজনক মুখ কল্যাণ সিংহ। তাঁর গন্তব্য হতে চলেছে রাজস্থান। উত্তরপ্রদেশের তিন বারের মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণকে এর আগে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের দায়িত্ব দিয়ে পাঠানোর পরিকল্পনা করেছিলেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু সে সময়ে রাজি হননি কল্যাণ। উল্টে তিনি সক্রিয় রাজনীতিতেই থাকার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। বিজেপি সূত্রের খবর, উত্তরপ্রদেশের আগামী বিধানসভা নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়ার বাসনা ছিল কল্যাণের। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ যুগলবন্দি শুরু হওয়ার পরেই কল্যাণকে সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে যাওয়ার বার্তা দেওয়া হতে থাকে। বিজেপির এক নেতার কথায়, “প্রবীণতন্ত্রকে সরানোর প্রক্রিয়া যে শুরু হয়ে গিয়েছে, তা কল্যাণকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।” এরই মধ্যে আজ বিজেপি নতুন সংসদীয় বোর্ড ঘোষণা করে। তাতে জায়গা পাননি লালকৃষ্ণ আডবাণী বা মুরলী মনোহর জোশীর মতো বর্ষীয়ান নেতারাও। বিজেপি সূত্রের খবর, পরিস্থিতি বুঝে কল্যাণ শেষমেশ রাজ্যপাল হতে রাজি হয়ে যান।

গোয়ার রাজ্যপাল হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে হিন্দি সাহিত্যিক মৃদুলা সিংহকে। এক সময়ে তিনি বিজেপি মহিলা মোর্চার সভানেত্রী ছিলেন। কর্নাটক ও মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল হচ্ছেন যথাক্রমে ভাজুভাই রুদাভাই ভালা এবং সি বিদ্যাসাগর রাও। ভাজুভাই গুজরাতের সৌরাষ্ট্র এলাকার পটেল সম্প্রদায়ের নেতা। রাজ্য রাজনীতিতে তিনি মোদী-ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। বিদ্যাসাগর রাও ছিলেন অটলবিহারী বাজপেয়ীর মন্ত্রিসভার সদস্য। তেলঙ্গানার এই নেতার সঙ্গেও প্রধানমন্ত্রীর সুসম্পর্ক রয়েছে। চলতি বছরেই মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে রাওয়ের নিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

এ দিকে শীলার ইস্তফার পর কমনওয়েলথ গেমস দুর্নীতির তদন্ত জোরকদমে শুরু করার জন্য সরকারকে বার্তা দিচ্ছে বিজেপির একটি বড় অংশ। লোকসভা নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি ঘোষণার ঠিক আগে নিয়োগ করা হয়েছিল শীলাকে। কেন্দ্রে সরকার বদল হওয়া ইস্তক তাঁকে সরাতে বিজেপির অন্দরমহল থেকেই ক্রমশ চাপ আসছিল মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের উপর। শীলার বিরুদ্ধে কমনওয়েলথ দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ রয়েছে। দিল্লি বিজেপির একটি বড় অংশ চাইছে, বিধানসভা নির্বাচনের আগেই সেই অভিযোগের যথাযথ তদন্ত শুরু হোক। সে ক্ষেত্রে অরবিন্দ কেজরীবালের মতোই দুর্নীতি প্রশ্নে কংগ্রেসকে আক্রমণ করা যাবে।

সরকারি সূত্রের খবর, মোদী ক্ষমতায় আসার পরেই এক বার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অনিল গোস্বামী ফোন করে শীলাকে নিজে থেকে ইস্তফা দিতে অনুরোধ করেছিলেন। সে যাত্রায় দিল্লি উড়ে এসে মোদী-রাজনাথের সঙ্গে বৈঠক করে গদি বাঁচাতে সক্ষম হয়েছিলেন শীলা। কিন্তু এ যাত্রায় আর পারলেন না। গুজব ছিল, কেরল থেকে মিজোরামে পাঠানো হতে পারে তাঁকে।

আজ শীলা বলেন, “আমি গত কালই (রাষ্ট্রপতির কাছে) ইস্তফা দিয়ে এসেছিলাম।” ভবিষ্যতে তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরে যাবেন কি না, তা অবশ্য আজ স্পষ্ট করেননি দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়েছেন, পদত্যাগপত্র গৃহীত হওয়ার সরকারি ঘোষণার পরেই তিনি মুখ খুলবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

sheila dixit governor bjp nda
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE