গাছের সঙ্গে বাঁধা শিশুটির পায়ের চেন খোলা হচ্ছে। ছবি- টুইটারের সৌজন্যে।
ফুটপাথের পাশে গাছের সঙ্গে চেন দিয়ে বাঁধা ৮ বছরের একটা মেয়ে। সন্ধ্যা পর্যন্ত তাকে ওই ভাবেই বেঁধে রাখা হয় গাছের সঙ্গে। আর বয়সে সামান্য বড় হলেও তার একরত্তি বোন পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া লোকজনের দিকে বাড়িয়ে দিচ্ছে কৌটো। মায়া, মমতায় কেউ কেউ সেই কৌটোয় এক বা দু’টাকার কয়েন ফেলছেন। কেউ দু’টি শিশুকে না দেখা ভান করে পাশ কাটিয়ে বেড়িয়ে যাচ্ছেন।
দিল্লির খুব ব্যস্ত আনন্দ বিহার মেট্রো স্টেশনের সামনের ফুটপাথে। গত কয়েক মাস ধরে এ ভাবেই রোজগার করছিল দুই বোন। ব্যস্ত মেট্রো স্টেশন বলে দিনে কম করে ৩০০ টাকা রোজগারও হত তাদের। বুধবার রাতে ওই অবস্থায় দুই বোনকে ভিক্ষাবৃত্তি করতে দেখে দিল্লির মহিলা কমিশনের এক পরিদর্শকদল। তাদের উদ্ধার করে পাঠানো হয় ‘হোম’-এ।
আরও পড়ুন- ‘ধর্ষণের আগে প্রত্যেক বার প্রার্থনা করানো হত’
আরও পড়ুন- হরিধ্বনি শুনলেই আতঙ্কে কাঁটা গোটা পাড়া
তাঁরা একটি বোনের কাছে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন, তাদের বাড়ি ফুটপাথেই। আনন্দ বিহার মেট্রো স্টেশনের সামনে।
দিল্লির মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন স্বাতী মালওয়াল এ খবর জানিয়ে বলেছেন, নজরে পড়ার পরেই তাঁরা দু’টি শিশুকে নিয়ে যান তাঁদের ফুটপাথের ‘বাড়ি’তে। সেখানে গিয়ে দেখেন, শিশুদু’টির মা গর্ভবতী। আর তার পাশেই রয়েছে তার মাদকাসক্ত স্বামী। কথা বলার মতো অবস্থাও নেই তার।
একটি শিশুকে কেন গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা ছিল, জানতে চাইলে তার গর্ভবতী মা মহিলা কমিশনের সদস্যদের জানান, ওই শিশুটিও মাদকাসক্ত বলে তাকে গাছের সঙ্গে ওই ভাবে চেন দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। স্বাতী জানিয়েছেন, চেন দিয়ে বাঁধা শিশুটির অবস্থা এতটাই কাহিল যে কথা বলতে পারে না। এর পর মহিলা কমিশনের সদস্যরা শিশুদু’টির মাকে বুঝিয়েসুজিয়ে পুলিশ নিয়ে যান কাছেপিঠের একটা ‘হোম’-এ যান। সেখানে তাঁরা রেখে আসেন শিশুদু’টিকে।
দিল্লিতে কত শিশু পথে পথে ভিক্ষাবৃত্তি করে, মা, বাবাকে টাকার টোপ দিয়ে কারা সেই সব শিশুকে নামাচ্ছে ভিক্ষাবৃত্তিতে, হালে দেশের রাজধানী শহরের বিভিন্ন রাস্তা, গলিঘুঁজি ঘুরে তার তদন্তে নেমেছেন মহিলা কমিসনের সদস্যরা।
উদ্ধার করে ওই শিশুদের বিভিন্ন ‘হোম’-এর হাতে তুলে দেওয়াটাই আপাতত লক্ষ্য মহিলা কমিশনের। কিন্তু পথে পথে ভিক্ষাবৃত্তি করা শিশুদের তুলনায় দিল্লিতে ‘হোম’-এর সংখ্যা পর্যাপ্ত নয়। তাই ওই শিশুদের নিরাপদ আশ্রয় দেওয়ার জন্য নাগরিকদের কাছে ‘হোম’ বা ‘হোম’ বানানোর জায়গা দেওয়ারও আর্জি জানানো হয়েছে দিল্লির মহিলা কমিশনের তরফে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy