নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যে সফরের আগেই ‘টিম-রাহুল’ তৈরির কাজ শুরু করে দিলেন সনিয়া গাঁধী। শুধু সংগঠনে নতুনদের ঠাঁই দেওয়া নয়, সার্জারির কাজটিও শুরু করলেন একই সঙ্গে।
ঘটনাচক্রে আজই দিল্লি পুরভোটের ফল প্রকাশ হয়েছে। তাতে গত বিধানসভার তুলনায় আসন ও ভোট অনেকটা বাড়লেও তৃতীয় স্থানে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে রাহুল গাঁধীর দলকে। এই হারের পর দিল্লির প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অজয় মাকেন ও নির্বাচনে দিল্লির দায়িত্বে থাকা পি সি চাকো ইস্তফা দিয়েছেন। কিন্তু সংগঠনেরহাল ফেরাতে এমন একটি দিনেই রাহুলের জন্য দলবল গড়ে দেওয়ার কাজে হাত দিলেন সনিয়া। মে-র প্রথম দিনেই মোদীর রাজ্য গুজরাতে সফর শুরু করছেন রাহুল। তার আগে সে রাজ্যের দায়িত্বে থাকা দলের সাধারণ সম্পাদক গুরুদাস কামাতকে সরিয়ে তাঁর জায়গায় আনা হল রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতকে। সঙ্গে এআইসিসি-র সম্পাদক পদে আনা হল এক মহিলা-সহ চার নবীন মুখকে।
এই নতুন চার মুখের মধ্যে তিন জন বিধায়ক, এক জন সাংসদ। তিন জনই গুরুদাস কামাতের রাজ্য মহারাষ্ট্র থেকে। এক জন মধ্যপ্রদেশের। কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতা বলেন, ‘‘অভিজ্ঞ ও তরুণদের মিশেলেই তৈরি হচ্ছে রাহুলের নতুন টিম। আজ তার প্রথম পদক্ষেপ হল। কিন্তু সার্জারির কাজটি রাহুলকে না দিয়ে সনিয়া নিজেই করলেন।’’ উত্তরপ্রদেশের ভোটের পর থেকেই বিরোধী জোটকে একজোট করতে সক্রিয় সনিয়া। রাহুল প্রথমে দলের বৃদ্ধদের পুরোপুরি বাদ দিয়ে নতুনদের নিয়ে টিম গড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু সনিয়াই তাতে বাদ সাধেন। নবীনদের পাশাপাশি অভিজ্ঞদের রেখেই তিনি এগোতে চাইছেন।
আরও পড়ুন: কৃষি করের প্রশ্ন নেই, ব্যাখ্যা জেটলির
এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরেই দলের সব পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন গুরুদাস কামাত। যদিও তিনি এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসেই তিনি অব্যাহতি চেয়েছিলেন। গত বুধবার রাহুল গাঁধীর সঙ্গে দেখা করে ফের ইস্তফার কথা বলেন। অনেক দিন ধরেই মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বিবাদ চলছে কামাতের। তখনও এক বার ইস্তফা দিয়েছিলেন। আজ দলের সূত্রে বলা হয়, গুজরাত হাতছাড়া হলেও কামাতের হাতে এখনও রাজস্থানের দায়িত্ব আছে। শীঘ্রই নতুন কাউকে রাজস্থানের দায়িত্ব দিয়ে কামাতের হাত থেকে সেটিও কেড়ে নেওয়া হতে পারে। গহলৌত, পৃথ্বীরাজ চৌহানদের মতো প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীদের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছেন সনিয়া-রাহুল।
কংগ্রেসের মুখপাত্র অজয় কুমার আজ বলেন, ‘‘নতুন টিম আসার পর এ বারে মোদীর গুজরাতে কংগ্রেসের জয় নিশ্চিত।’’ কিন্তু অশোক গহলৌতকে গুজরাতে কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামাল দিতে হবে। ক’দিন আগেই শঙ্করসিন বাঘেলাকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরার জন্য তাঁর অনুগত বিধায়করা চাপ দেন। কিন্তু প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ভরতসিন সোলাঙ্কিও মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী হতে চান। আহমেদ পটেলকে সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়। আজ সোলাঙ্কি ফোন করে রাহুলের সভার আগেই অশোক গহলৌতকে গুজরাতে আমন্ত্রণ জানান। আর এ ঘটনায় গুজরাতে দলের পরিচিত গোষ্ঠীকোঁদলের আঁচও ফের স্পষ্ট হল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy