Advertisement
০৭ মে ২০২৪

বিস্ফোরক শাহরুখ: দেশে এখন চরম অসহিষ্ণুতা

অসহিষ্ণুতার প্রশ্নে এ বার মুখ খুললেন শাহরুখ খান। সোমবার একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘‘দেশে এই মুহূর্তে চরম অসহিষ্ণুতার পরিবেশ।’’ এ দিন তাঁর ৫১তম জন্মদিন উপলক্ষে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে শাহরুখ বলেন, ‘‘লোকজন কোনও কিছু না ভেবেই মন্তব্য করে ফেলছেন। ধর্মীয় ভাবেও অসহিষ্ণুতা... ধর্ম নিরপেক্ষ হিসেবে নয়, এক জন দেশপ্রেমিক যখন এমন মন্তব্য করেন তখন সেটা জঘন্য অপরাধ।’’

জন্মদিনেই বিস্ফোরক। ছবি: টুইটারের সৌজন্যে।

জন্মদিনেই বিস্ফোরক। ছবি: টুইটারের সৌজন্যে।

সংবাদ সংস্থা  শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৫ ১৬:৩৩
Share: Save:

অসহিষ্ণুতার প্রশ্নে এ বার মুখ খুললেন শাহরুখ খানও। ‘দেশে এই মুহূর্তে চরম অসহিষ্ণুতার পরিবেশ’ বলে সোমবার মন্তব্য করলেন বলিউড বাদশা।

এ দিন তিনি ৫১-য় পা দিয়েছেন। জন্মদিনে সংবাদ মাধ্যমকে শাহরুখ বলেন, ‘‘ইদানীং অনেকে কোনও কিছু না ভেবেই মন্তব্য করে ফেলছেন। ধর্মকে কেন্দ্র করে অসহিষ্ণুতা দেখানো হচ্ছে।’’ তাঁর মতে, ‘‘আপনি যদি দেশপ্রেমী হন, তবে অবশ্যই সম্পূর্ণটা নিয়ে দেশকে ভালবাসতে হবে। কখনই অঞ্চলগত ভাবে বা ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ করা ঠিক নয়।’’

গোটা দেশ অসহিষ্ণুতা এবং বহুত্ববাদের প্রশ্নে এই মুহূর্তে সরব। সাহিত্য থেকে ইতিহাস, এমনকী চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত মানুষেরা প্রতিবাদে সামিল হচ্ছেন। চিন্তাবিদ থেকে বিরোধী রাজনৈতিক শিবির— সকলেই সরকারকে ভূমিকার সমালোচনা করছেন। নয়নতারা সহগল বা দিবাকর বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো অনেকেই রাষ্ট্রীয় পদক ফিরিয়ে দিয়েছেন এবং দিচ্ছেন। এমন একটা সময়ে শাহরুখের বিস্ফোরক মন্তব্য সাড়া ফেলে দিয়েছে। তবে কি তিনিও সেই পথে হাঁটবেন? জবাবে অভিনেতা বলেন, ‘‘এখনও তেমন করে সিদ্ধান্ত নিইনি। কিন্তু, যাঁরা পদক ফিরিয়েছেন তাঁদের আমি সম্মান করি। যদি তাঁরা মনে করেন, তাঁদের এই ভূমিকা পরিস্থিতির মোড় ঘোরাতে পারবে, সেটা খুবই সাহসী এবং সত্ পদক্ষেপ।’’

শাহরুখের মতে, দেশের ধর্ম নিরপেক্ষ ভাবমূর্তি তুলে ধরতে অনেক সময় ‘তিন খান’-এর কথা তুলে ধরা হয়। এ দিন তারই প্রতিবাদ করে তিনি বলেন, ‘‘শাইনিং ইন্ডিয়ার প্রমাণ হিসেবে আমাদের শাইনিং দরকার নেই।’’ পাশাপাশি শাহরুখ মনে করিয়ে দিয়েছেন, নৈতিক প্রশ্নে সব সময় তাঁর পক্ষে মুখ খোলা সম্ভব হয় না। সেটা করাটা তাঁর পক্ষে খুবই কঠিন। কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘‘অন্য অনেকে যে ভাবে সদর্থক প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন, আমি তেমন কোথাও অংশ নেইনি। বাক্‌ স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলতে পারি। কিন্তু, তার পরই একটা শ্রেণির মানুষ আমার বাড়িতে ইট-পাটকেল ছুঁড়বেন।’’ এমনকী তাঁর সিনেমাও ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। শুটিংও বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা শাহরুখের।

এ দেশে তাঁর জন্ম। এ দেশেই তাঁর বেড়ে ওটা। এমনকী এক জন পেশাদার অভিনেতা হিসেবে তাঁর কর্মক্ষেত্রও এই দেশে। এই প্রসঙ্গ তুলে শাহরুখ এ দিন বলেন, ‘‘এর পরে নিশ্চয়ই আমি ভারতীয় কি না সেই প্রশ্ন তোলার কোনও জায়গা নেই। এ দেশে থাকার অধিকার আমার থেকে অন্য কারও বেশি নেই।’’ বলিউড বাদশার পরিবারেও ধর্ম নিয়ে কোনও বাড়াবাড়ি নেই। তাঁর বাড়িতে যে যাঁর ইচ্ছে অনুযায়ী ধর্ম মেনে চলেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমার ছেলেমেয়েরা মাঝেমাঝেই বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে, তারা হিন্দু না মুসলমান এই ভেবে! আমি বলি, খ্রিস্টান নয় কেন?’’ আর সেই জায়গা থেকেই তাঁর প্রশ্ন, ‘‘এক জন মানুষের খাদ্যাভ্যাস কী হবে সেটা কোনও ভাবে ইস্যু হতে পারে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE