Advertisement
E-Paper

আধার আইনকে চ্যালেঞ্জ, সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্নের মুখে মমতা সরকার

সব ক্ষেত্রে আধার নম্বর জোড়া নিয়ে প্রথম থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৭ ১২:৩৩
আধার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্নের মুখে রাজ্য সরকার।

আধার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্নের মুখে রাজ্য সরকার।

আধার কার্ড বাধ্যতামূলক, কেন্দ্রীয় এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টে বড়সড় ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার। সুপ্রিম কোর্টের মতে, ওই বিরোধিতা করতে গিয়ে তারা আধার আইনটাকেই চ্যালেঞ্জ করে বসেছে। সংবিধানগত ভাবে কোনও রাজ্য সরকার এমনটা করতে পারে না বলেই সোমবার মন্তব্য করেছে শীর্ষ আদালত। বয়ান পাল্টে ফের নতুন করে আবেদন করার জন্য রাজ্য সরকারকে চার সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে। আদালতের মত মেনেই তা করা হবে বলে জানিয়েছেন রাজ্য সরকারের আইনজীবীরা।

ফোন থেকে জন ধন, আয়কর থেকে ভাতা— সবেতেই আধার নম্বর জোড়ার নির্দেশ দিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। তা চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকারের তরফে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন ফাইল করা হয়। এ দিন বিচারপতি এ কে সিক্রি এবং বিচারপতি অশোক ভূষণের ডিভিশন বেঞ্চে ওই আবেদনের শুনানি ছিল। ওই বেঞ্চ জানায়, রাজ্য সরকার যে বয়ানে আবেদন করেছে তাতে আধার সংক্রান্ত আইনটিকেই চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। বিচারপতিরা প্রশ্ন তোলেন, কী ভাবে একটি রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় আইনকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে?

আরও পড়ুন: পাহাড়ে আধাসেনা সরলে যাবে রাজ্যের দক্ষ পুলিশ

কোনও রাজ্য সরকার সংসদে পাশ হওয়া একটি আইনকে এ ভাবে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে না বলেই বেঞ্চের মত। ওই বেঞ্চের আরও পর্যবেক্ষণ, এর পর কোনও রাজ্যের বিধানসভা বা বিধানপরিষদে পাশ হওয়া আইনকেও কেন্দ্র চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে! এবং গোটাটাই সংবিধানের জন্য স্বাস্থ্যকর নয়। তবে কি কেন্দ্রীয় আইনকে কোনও ভাবেই চ্যালেঞ্জ জানান যায় না? বেঞ্চের মতে, যায়। কোনও ব্যক্তি বা অসরকারি সংগঠন এই চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে। এর পরেই আদালতের মন্তব্য, যদি ব্যক্তি হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই চ্যালেঞ্জ জানান, তবে আদালতে তা গ্রাহ্য। কিন্তু, যে ভাবে তাঁর সরকার এই চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে, তাতে আবেদনটাই খারিজ হয়ে যায়।

এর পরেই রাজ্য সরকারের দুই আইনজীবী কপিল সিব্বল এবং কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আদালতকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, এই পিটিশন রাজ্য সরকার নয়, শ্রম দফতর করেছে। তখন আদালত কপিল সিব্বলকে বলে, এ কথা তিনি বলতে পারেন না। কারণ, শ্রম দফতর রাজ্য সরকারেরই একটি অংশ। আর এ ক্ষেত্রে পিটিশনটি রাজ্যের মুখ্য সচিবের মাধ্যমেই ফাইল হয়েছে। বেঞ্চ আরও বলে, চ্যালেঞ্জের এই বয়ান পাল্টালেই তা শোনা সম্ভব। নচেৎ নয়। এ জন্য রাজ্য সরকারকে চার সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়। তখন কপিল আদালতকে জানান, বয়ান পাল্টেই ফের আবেদন করা হবে। পরে বিকেলে নবান্নে সাংবাদিকদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সুপ্রিম কোর্ট যা বলেছে রাজ্য সরকার মেনে নিয়েছে। এবং সেই মতোই নতুন করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হবে।

রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে যে বয়ানে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে গিয়েছে, সেই একই কথা সম্প্রতি শোনা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখেও। গত সপ্তাহের বুধবার তৃণমূলের সম্মেলনে তিনি দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে নির্দেশ দেন, কেউ মোবাইলের সঙ্গে আধার জুড়বেন না। মানুষের ব্যক্তি পরিসরে হাত দেওয়ার অধিকার কারও নেই। ব্যক্তি হিসাবে তিনি যে কথা বলতে পারেন, সরকার সেই বয়ানে কেন্দ্রীয় আইনকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে না বলেই আইনজীবীদের একাংশ এ দিন মন্তব্য করেছেন।

Mamata Banerjee SC মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আধার Aadhaar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy