Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ওঁরা কার চর, রহস্য-নাটক

নেপথ্যে রয়েছে নিজামুদ্দিন দরগায় চাদর চড়ানোর মতো মামুলি ঘটনা। সেই সূত্র ধরে কাহিনি দৌড়েছে দিল্লি থেকে করাচি-লাহৌরে। পাকিস্তানের মাটিতে তিন দিন ধরে ভারতের দুই ধর্মগুরুর অজ্ঞাতবাসের নাটক।

অনমিত্র সেনগুপ্ত
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৭ ০৩:৩১
Share: Save:

নেপথ্যে রয়েছে নিজামুদ্দিন দরগায় চাদর চড়ানোর মতো মামুলি ঘটনা। সেই সূত্র ধরে কাহিনি দৌড়েছে দিল্লি থেকে করাচি-লাহৌরে। পাকিস্তানের মাটিতে তিন দিন ধরে ভারতের দুই ধর্মগুরুর অজ্ঞাতবাসের নাটক। তার পর মুক্তি, দিল্লি ফেরা। আর সেখানেই শুরু নতুন রহস্যের। দিল্লির নিজামুদ্দিন দরগার দুই ধর্মগুরু ‘এজেন্ট’ না ‘ডবল এজেন্ট’— এই রহস্য সমাধানে এখন নেমে পড়েছে ভারত ও পাকিস্তানের দুই গুপ্তচর সংস্থা ‘র’ ও ‘আইএসআই’।

১৪ মার্চ। লাহৌরের ইকবাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন কাউন্টারে দাঁড়িয়ে হজরত নিজামুদ্দিন দরগার ৮০ বছরের ধর্মগুরু সৈয়দ আসিফ নিজামি ও তাঁর ভাইপো নাজিম নিজামি। ৮ মার্চ পাকিস্তানে পৌঁছনো দুই ভারতীয় তত দিনে ঘুরে ফেলেছেন করাচির আত্মীয়ের বাড়ি, লাহৌরের বাবা ফরিদের দরগা। তাঁদের ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর এজেন্ট বলে দাবি করে বসেছে পাক সংবাদমাধ্যমের একাংশ। অস্বস্তির ওই আবহে ইমিগ্রেশনের ঠিক আগেই দুই ধর্মগুরুর দিকে এগিয়ে যান পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-র দুই কর্তা। জানান, কিছু প্রশ্ন রয়েছে। ভারতীয় গোয়েন্দারা বলছেন, তিন দিন লাহৌর থেকে দূরে একটি ক্ষেতের মধ্যে সেফ হাউসে রাখা হয় দু’জনকে।

প্লেটে দফায় দফায় বিরিয়ানি, আর জেরা— দু’টোই শুরু হয়। একটাই প্রশ্ন, পাক-বিরোধী মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট (এমকিউএম) সংগঠনের জন্য কী নির্দেশ পাঠিয়েছে ‘র’? আলতাফ হুসেনের ওই সংগঠনের মাধ্যমে কী পরিকল্পনা রয়েছে ভারতের? সেই নির্দেশ পৌঁছতেই কি তাঁরা করাচি গিয়েছিলেন?

কেন এই জেরা বা কে এই আলতাফ— জানতে পিছিয়ে যেতে হবে। পাকিস্তানের সরকার বিরোধী মুহাজির আন্দোলনের রাশ রয়েছে এমকিউএম সংগঠনের হাতে। করাচি কেন্দ্রিক এই আন্দোলনের নেতা আলতাফ হুসেন। পাক সরকারের রোষানলে পড়ে আলতাফ থাকেন লন্ডনে। তবে কিছু দিন আগে নিজামুদ্দিনের দরগার আমন্ত্রণে তিনি চাদর চড়াতে এসেছিলেন। নিজামুদ্দিন দরগাতে তিনি ঢোকা মাত্রই আইএসআইয়ের নজরদারির আওতায় চলে আসেন সেখানকার ধর্মগুরুরা। তার পরেই ধর্মগুরুরা হারিয়ে যায়। দিল্লিতে হইচইয়ের পরে দুই ধর্মগুরুকে ছেড়ে দেয় পাকিস্তান। আইএসআই নিজামুদ্দিনের দরগার লোকেদের ভারতের চর বলে মনে করে। তবু জেরায় এত ভাল ব্যবহার দেখে খটকায় নয়াদিল্লি। প্রশ্ন উঠেছে, অজ্ঞাতবাসের সময়ে কি ধর্মগুরুদের মগজধোলাই করে ফেলল পাকিস্তান? পাকিস্তানের চোখে যারা ‘এজেন্ট’ ছিল তাঁরাই কি এখন ‘ডবল এজেন্ট’ হয়ে ইসলামাবাদের জন্য কাজ করছে?

গোয়েন্দারা বলছেন, এখনই তা বলা যাচ্ছে না। নজর রাখা হচ্ছে। তবে বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর অভিযোগ, ওই দুই ধর্মগুরু পাক চর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hazrat Nizamuddin dargah clerks
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE