Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ফাঁসির বিকল্প খুঁজতে প্রস্তাব কোর্টের

ঋষি মলহোত্র নামে দিল্লি হাইকোর্টের এক আইনজীবী এ নিয়ে শীর্ষ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। তাঁর বক্তব্য, কাউকে ফাঁসিতে ঝোলানো হলে মৃত্যু পর্যন্ত তাকে যে অপরিসীম যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়, তা কোনও ভাবেই কাম্য নয়। এবং সেই সময়ে তাঁর মর্যাদাহানিও হয়।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৫০
Share: Save:

অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা উচিত কিনা তা নিয়ে শুধু ভারতে নয়, গোটা বিশ্ব জুড়েই বিতর্ক উঠেছে বারবার। এ দেশেও এর

আগে বহুবার মৃত্যুদণ্ড তুলে দেওয়ার দাবি উঠেছে। কিন্তু সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুদণ্ডই বহাল থেকেছে ভারতে।

কিন্তু মৃত্যুদণ্ড হিসেবে ফাঁসি কতটা যথাযথ, এ বার তা নিয়েই প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট। যে কারওরই মৃত্যু যন্ত্রণাহীন ও মর্যাদাপূর্ণ হওয়া উচিত— এমন মত দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট এ দিন কেন্দ্রীয় সরকারকে ফাঁসির পরিবর্তে অন্য কোনও বিকল্প পন্থা খোঁজার নির্দেশ দিয়েছে।

ঋষি মলহোত্র নামে দিল্লি হাইকোর্টের এক আইনজীবী এ নিয়ে শীর্ষ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। তাঁর বক্তব্য, কাউকে ফাঁসিতে ঝোলানো হলে মৃত্যু পর্যন্ত তাকে যে অপরিসীম যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়, তা কোনও ভাবেই কাম্য নয়। এবং সেই সময়ে তাঁর মর্যাদাহানিও হয়।

ঋষির সঙ্গে সহমত পোষণ করে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর বেঞ্চ এ দিন জানিয়েছে, সরকারের উচিত আধুনিক বিজ্ঞানের সাহায্য নিয়ে মৃত্যুর অন্য কোনও যন্ত্রণাহীন পন্থা খুঁজে বের করা। এ বিষয়ে সরকারকে একটি নোটিসও জারি করেছে সর্বোচ্চ আদালত। আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্রকে তার উত্তর দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিচারপতি মিশ্র এ দিন বলেন, ‘‘বহু শতাব্দী ধরেই বলা হয়ে থাকে, যন্ত্রণাহীন মৃত্যুর সমতুল্য আর কিছুই নেই। যে কোনও মানুষের মৃত্যুই শান্তিপূর্ণ ভাবে হওয়া উচিত, যন্ত্রণায় নয়।’’ অবশ্য এর সঙ্গেই আদালত মনে করিয়ে দিয়েছে, সংবিধান অনুসারে মৃত্যুদণ্ডের সাজা নয়,

বরং মৃত্যুদণ্ডের পদ্ধতি নিয়েই কথা বলছে তারা।

সংবিধানের ৩৫৪ ধারা অনুযায়ী, ফাঁসির মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ডকেই স্বীকৃত ও বাধ্যতামূলক করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু শুক্রবার সর্বোচ্চ আদালত মনে করিয়ে দিয়েছে, ভারতীয় সংবিধান সব সময়েই প্রগতিশীল ও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তনযোগ্যও। যে কোনও মানুষের মৃত্যুই মর্যাদাপূর্ণ হওয়া উচিত। ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী, এক জন মানুষের মর্যাদাপূর্ণ মৃত্যু তার মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকারের মধ্যে পড়ে।

তবে শুনানির সময়ে বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় মনে করিয়ে দেন, আমেরিকায় মৃত্যুদণ্ডের ক্ষেত্রে ইঞ্জেকশন ব্যবহার করা হয়, সে ক্ষেত্রেও অন্তত ৪৫ মিনিট যন্ত্রণা পেতে হয় সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে। তিন সপ্তাহ বাদে ফের এ মামলার শুনানি হবে বলে জানিয়েছে আদালত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Convict Peace Pain Supreme Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE