উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। ছবি তাঁরই টুইটার হ্যান্ডলের সৌজন্যে।
যিনি সে দিন অক্সিজেন সিলিন্ডার জোগাড় করার জন্য পরের দিন সকাল পর্যন্ত ছোটাছুটি করেছিলেন, দোরে দোরে ঘুরেছিলেন এ হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালের, সিলিন্ডারের দাম চোকানোর জন্য নিজের ডেবিট কার্ডটা পর্যন্ত দিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর জুনিয়রকে, গোরক্ষপুরের বাবা রাঘব দাস মেডিক্যাল (বিআরডি) কলেজের সেই চিকিৎসক কাফিল আহমেদকে কোনও কারণ না দেখিয়েই তাঁর যাবতীয় দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, ১১ অগস্ট রাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে প্রথম টেলিফোনটি আসে এনসেফেলাইটিস বিভাগের দায়িত্বে থাকা শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ কাফিল আহমেদের কাছেই। সেই টেলিফোনে তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়, খুব শিগগিরই বন্ধ হয়ে যাবে অক্সিজেন সরবরাহ। তৈরি থাকুন।
আরও পড়ুন- চিনের বিমানবন্দরে ‘অপমানিত’ ভারতীয়রা, প্রতিবাদ জানাল দিল্লি
আরও পড়ুন- শোভা সেনের জীবনাবসান
সঙ্গে সঙ্গেই তৎপর হয়ে ওঠেন আহমেদ। অক্সিজেন সাপোর্টে থাকা কত বেশি শিশুকে কী ভাবে বাঁচানো যায়, সেই চিন্তাতে তিনি গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন রাস্তায়। ঘুরতে শুরু করেন এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে। ফোন করতে শুরু করেন অন্যান্য হাসপাতালে তাঁর ডাক্তার বন্ধুদের। প্রথমে যে হাসপাতালটিতে গিয়েছিলেন, তাঁরা আহমেদকে দেয় তিনটি সিলিন্ডার। নিজের গাড়িতে চাপিয়ে সেই সিলিন্ডারগুলি তিনি নিয়ে আসেন বিআরডি হাসপাতালে। আবার বেরিয়ে পড়েন আরও সিলিন্ডার জোগাড় করার জন্য। গোটা রাত ঘোরেন রাস্তায় রাস্তায়। পরের দিন সকাল পর্যন্ত ঘোরেন এই হাসপাতাল থেকে ওই হাসপাতালে। পরের দিন, শুক্রবার সকালে যখন বিআরডি হাসপাতালে অক্সিজেন এক রকম নিঃশেষ হয়ে যায়, তখন চিকিৎসক আহমেদ তাঁর জুনিয়রদের বলেছিলেন, অ্যাম্বু-ব্যাগ থেকে অক্সিজেন বের করে মরণোন্মুখ শিশুদের বাঁচাতে। তারই মধ্যে রাতভর হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরে মোট ১২টি অক্সিজেন সিলিন্ডার জোগাড় করে ফেলেন তিনি।
সেই চিকিৎসক কাফিল আহমেদ (ডান দিকে)। -ফাইল চিত্র।
এর পরেই অক্সিজেন সিলিন্ডারের এক স্থানীয় সরবরাহকারীর কাছ থেকে ফোন আসে চিকিৎসক আহমেদের কাছে। তাঁকে বলা হয়, নগদ টাকা হাতে পেলে হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডার পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সেই টাকা মেটানোর জন্য আহমেদ তাঁর নিজের ডেবিট কার্ডটি সঙ্গে সঙ্গে দিয়ে দেন তাঁর জুনিয়রকে। বলেন, ওই কার্ড দিয়ে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে আসতে। তার মধ্যেই অবশ্য অক্সিজেনের অভাবে শিশুগুলির মৃত্যু হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy