প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নগদহীন (ক্যাশলেস) দেশ গড়ার ডাকের প্রতিবাদে ফের তোপ দাগলেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী রবিবার টুইট করেছেন, ‘‘সব চেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত লোকেরাই দুর্নীতি বন্ধ করার কথা বলছে! নোট বাতিল করা হয়েছে শুধু মোদীবাবু এবং তাঁর ঘনিষ্ঠদের স্বার্থে। নোট বাতিলের অর্থ ভারতীয় অর্থনীতিকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়া।’’ কেন্দ্রীয় সরকারের আচরণকে ‘উদ্ধত’ এবং ‘ধ্বংসাত্মক’ আখ্যা দিয়ে মমতার অভিযোগ, ‘‘দুনিয়ার বৃহত্তম গণতন্ত্রকে ধ্বংসের চেষ্টা হচ্ছে!’’
তৃণমূলের মহাসচিব তথা শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ দিন জানিয়েছেন, মোদীর ক্যাশলেস তত্ত্বের অসারতা প্রমাণ করতে তাঁরা পথে নামবেন। আগামী বুধবার থেকে শুক্রবার, তিন দিন রাজ্যের ব্লকে ব্লকে আম জনতাকে সঙ্গে নিয়ে সভা-মিছিল করবেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। তৃণমূল নেতৃত্বের যুক্তি, বেশির ভাগ গ্রামে ব্যাঙ্কের এটিএম পরিষেবা এখনও গড়েই ওঠেনি। বাস্তব পরিস্থিতি যখন এ রকম, তখন দেশকে ‘ক্যাশলেস’ করার আহ্বান অর্থহীন এবং সেই চেষ্টা করা হলে গ্রামের মানুষ বিপদে পড়বেন।
নগদহীন অর্থনীতির দিকে দেশকে নিয়ে যাওয়ার বিরুদ্ধে এ দিন মুখ খুলেছেন রাজ্যের আর এক মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ও। বোলপুরের গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে রাজ্যের ‘এমজিএনআরইজিএ এমপ্লয়িজ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর প্রথম রাজ্য সম্মেলনে পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘দেশের ৭৫% মানুষ যেখানে ক্যাশের উপরে নির্ভরশীল, সেখানে ক্যাশলেস ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে! প্রধানমন্ত্রী উদ্ভ্রান্তের মতো দেশ চালাচ্ছেন!’’ একশো দিনের কাজের টাকা সরাসরি শ্রমিকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানোর বিরোধিতা করে সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘৩০% গ্রামে ব্যাঙ্ক নেই। কোথাও সাইকেলে গিয়ে টাকা দিতে হয়। আবার কোথাও দু’-দুটি নদী পার করে ব্যাঙ্কে আসতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে একশো দিনের কাজের টাকা সরাসরি ব্যাঙ্কে পাঠানোর কথা বলছেন প্রধানমন্ত্রী!’’
বিজেপি অবশ্য মোদীর ক্যাশলেস তত্ত্বের যুক্তি বোঝাতে ইতিমধ্যেই পথে নেমেছে এবং আক্রমণের মুখেও পড়েছে। উত্তর দমদমের প্রতাপগড় বাজার এলাকায় এ দিনই সকালে নোট বাতিলের সমর্থনে বিজেপি-র মিছিলে তৃণমূল কর্মীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় আহত তিন জন দলীয় কর্মীকে কামারহাটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।