দায়িত্ব নিয়েই অতীতে ফিরলেন কাছাড় জেলার নতুন সভাপতি উদয়শঙ্কর গোস্বামী। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভাল ফল করার জন্য ১৯৯১-৯২ সালের কথা মনে রেখে সবাইকে ঝাঁপাতে আহ্বান জানালেন তিনি।
উদয়বাবু কৌশিক রাইয়ের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেই জানান, ১৯৯১ সালে কাছাড়ে ছিলেন বিজেপির সাংসদ। বিধানসভা নির্বাচনে জেলায় ৪টি আসনে জেতে দল। এমন সাফল্য ছিল একেবারে অপ্রত্যাশিত। সংগঠনে তাই খুশির জোয়ার। কিন্তু কিছু দিন পরই পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির দুর্দশা প্রকট হয়। আঞ্চলিক পঞ্চায়েতে একমাত্র তাঁর স্ত্রী প্রমীলা গোস্বামী জিতেছিলেন। আর পঞ্চায়েত সভাপতি হয়েছিলেন সলিল চৌধুরী।
এ বার সাংসদ না থাকলেও কাছাড়ে ৬ বিধায়ক বিজেপির। তার উপর সরকার নিজেদের। সেই খুশিতে সংগঠনের রুটিন দায়িত্ব ভুললে যে চলবে না, তা স্মরণ করিয়ে দেন উদয়বাবু। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিটি বুথ কমিটিকে ঘরে ঘরে যেতে হবে।’’
সংগঠনে গুরুত্ব দিতে কর্মীদের পরামর্শ দেন বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার, শিলচরের বিধায়ক দিলীপকুমার পালও। তিনিও পুরনো দিনের কথা উল্লেখ করে জানান, উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বিজেপির আজকের উত্থাপনের পিছনে কাছাড়ের সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতে কাছাড়েই প্রথম বিজেপির জেলা কমিটি গঠিত হয়েছিল। তাঁর কথায়, ‘‘সংগঠনের শক্তিবৃদ্ধি আর ভোটে জেতা এক কথা নয়। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা হলেন সরকারের মুখ। তাঁদের দিকেই সকলের নজর। কার কত সম্পদ বাড়ছে, সে দিকে সবাই তাকিয়ে।’’ সবাইকে দুর্নীতিমুক্ত থাকার পরামর্শ দেন তিনি। রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য বলেন, ‘‘ভোটযুদ্ধ জেতার পর এ বার ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মানুষ ন্যায়ের জন্যই বিজেপিকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। এই সময়ে যুদ্ধের ক্লান্তিতে বসে থাকলে চলবে না। জেলাশাসকের কার্যালয় কি থানা, কোথাও দুর্নীতি হচ্ছে কি না, নজর রাখত হবে। মানুষকে হয়রানিরই শিকার হতে হলে কীসের পরিবর্তন!’’
তবে রাস্তাঘাটের কাজ হচ্ছে না বলে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগে অসন্তোষ ব্যক্ত করেন তিনি। সুবক্তা হিসেবে পরিচিত মন্ত্রী পরিমলবাবু মেজাজ হারিয়ে ফেলেন। সরকারে বসার পর কাজ শুরু করতে যে সময়ের প্রয়োজন, তা বোঝাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘অজ্ঞানীরাই ৬ মাসের মাথায় কাজ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। যাঁরা এ সব বলেন, তাঁদের কোনও জ্ঞান নেই।’’ এখন সবদিকে জাতীয় সড়কে কাজ চলছে বলে তিনি সবাইকে আশ্বস্ত করেন। কাছাড়ের মাটি ভাল নয়— মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন তরুণ গগৈয়ের সেই মন্তব্য নস্যাৎ করেন পরিমলবাবু। তিনি জানান, কাছাড়ের মাটি শক্তপোক্ত। এই মাটিতে ভাল রাস্তা বানানো যায়।
কবীন্দ্র পুরকায়স্থ পরিমলবাবুর রাজনৈতিক জীবনের শুরুর দিনগুলির স্মৃতিচারণ করেন। বদ্রীনারায়ণ সিংহের সুপারিশমতো ধলাই আসনে বিজেপির টিকিট চাইতে এসেছিলেন। তখন তিনি এমই স্কুলের প্রধানশিক্ষক। কবীন্দ্রবাবু প্রশ্ন করেছিলেন, চাকরি ছে়ড়ে ভোটে লড়তে হবে। হারলে খাবেন কী? পরিমলবাবু জবাব দিয়েছিলেন, বাজারে বাবার চায়ের দোকান রয়েছে। তাতে কাজে লেগে যাব। প্রথম বারই জিতে যান পরিমলবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy