নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে অসন্তোষ বাড়ছে। দ্রুত খসছে বিজেপির ভোটব্যাঙ্ক। বিভিন্ন সমীক্ষা তেমনই বলছে। কিন্তু মোদী-বিরোধিতার এই পরিসরটি একজোট হয়ে দখল করতে কতটা প্রস্তুত বিরোধীরা?
সম্প্রতি বিরোধী দলগুলির বৈঠকে সনিয়া গাঁধী সকলকে একজোট হওয়ার আবেদন করেছিলেন। সিংহভাগ বিরোধীই পরের লোকসভায় বিজেপিকে হারাতে আসন সমঝোতায় রাজি। সমাজবাদী পার্টির নরেশ অগ্রবাল, আরজেডির জয়প্রকাশ নায়ারণ যাদবরাও জোটের কথা তুলছেন। তা সত্ত্বেও সংসদের বাইরে এখনও পুরোপুরি দানা বাঁধছে না বিরোধী ঐক্য। কারণ, বিরোধী নেতাদের অনেকেই মনে করছেন, এখনই কোনও নির্দিষ্ট নেতাকে সামনে রেখে লড়াইয়ের সময় আসেনি। বরং আপাতত নিজেদের শক্তি বাড়ানোর দিকেই নজর দিচ্ছেন তাঁরা, যাতে ভোটের পরে নেতা বাছাইয়ে জোর খাটানো যায়।
যেমন শরদ পওয়ার। তাঁর বক্তব্য, ‘‘২০০৪ সালেও ভোটের পরে নেতা বাছাই করে দশ বছর সরকার চলেছিল। জোটের বড় দলই নেতা বাছবে। এখনও সেই সময় আসেনি।’’ মায়াবতী অন্য বিরোধীদের বলেছিলেন, ভোটের আগে কোনও সমঝোতার পক্ষে নন তিনি। অথচ সেই তিনিই কর্নাটকে আসন্ন বিধানসভা ভোটে এইচ ডি দেবগৌড়ার জেডিএস-এর সঙ্গে আসন সমঝোতা করেছেন। জেডিএস নেতা দানেশ আলি বলেছেন, ‘‘মায়াবতী কর্নাটক ভোটের আগে সমঝোতা করলেন। এটি তাঁর অবস্থান বদলই। লোকসভার আগে শুভ সঙ্কেত।’’ কিন্তু কংগ্রেসের আশঙ্কা, এর ফলে বিএসপি-জেডিএস একযোগে কর্নাটকে তাদের দলিত ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসাবে। ফলে অস্বস্তি থাকছে মায়াকে নিয়ে। কংগ্রেসের একাংশের অভিযোগ, বিরোধী নেতাদের সিবিআইয়ের ভয় দেখাচ্ছে বিজেপি। ফলে তাঁদের কেউ কেউ বৃহত্তর জোট নিয়ে এখনও ঝেড়ে কাশছেন না।
সিপিএমের পার্টি কংগ্রেসের খসড়া প্রস্তাবে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা না করার কথা বলা হয়েছে। যদিও খোদ সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি এই প্রস্তাবে একমত নন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও কোনও নেতাকে জোটের সামনে রেখে লড়াইয়ে নামতে রাজি নন। কিন্তু লোকসভায় বিরোধী জোটের সঙ্গে থাকা ছাড়া যে বিকল্প নেই, তা-ও বুঝছে তৃণমূল।
কংগ্রেসের এক নেতা অবশ্য বলছেন, ‘‘আজ নয় কাল, সব দলকেই রাহুল গাঁধীর নেতৃত্বে আসতে হবে। সবে জোটের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ভোটের উত্তাপ বাড়লেই সকলে একজোট হবে।’’ বিভিন্ন রাজ্যে পরস্পর-বিরোধী রাজনৈতিক দলের মধ্যে আসন সমঝোতা কঠিন। কিন্তু আলোচনার মাধ্যমে সেটি সম্ভব হলে সহজ অঙ্কেই যে বিজেপিকে হারানো যায়, সেটিও জানেন বিরোধীরা। কারণ, ২০১৪ সালে প্রবল মোদী-হাওয়াতেও বিজেপি মাত্র ৩১ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। সেই ভোট কমছে। তার উপরে এখন শিবসেনা, টিডিপি, অকালির মতো এনডিএ-র শরিকরাও বেসুরো গাইছে।
আর এই পরিস্থিতিই এখন উদ্বেগে রেখেছে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহকে। দানা বাঁধার আগেই বিরোধী জোট ভাঙতে তৎপর তাঁরাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy