আন্তর্জাতিক মহিলা দিবসের দিন হাজারিবাগের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে ঊষাদেবী রাঁচী এসেছিলেন ‘স্বনির্ভর মহিলা’-দের এক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে। অনুষ্ঠান শেষে গ্রামে ফিরে তাঁর কপালে জুটল অপবাদ ও লাঞ্ছনা। তাতেই শেষ নয় গ্রামের বিচারসভার নির্দেশে ওই মহিলাকে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে মারধর করে চুল কেটে দেওয়া হয়।
মহিলা সংগঠনগুলির দাবি, হাজারিবাগের দারু থানার প্রত্যন্ত গ্রামের এই ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, যতই ঢাকঢোল পিটিয়ে আন্তর্জাতিক মহিলা দিবস পালন করা হোক না কেন গ্রামের মহিলাদের অবস্থা খুব একটা কিছু পাল্টায়নি। উষাদেবী পুলিশে অভিযোগ দায়ের করলেও এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দারুর কবিলাসি গ্রামের বাসিন্দা উষাদেবী রাঁচীর অনুষ্ঠান শেষে বাসে করে ফিরে আসেন হাজারিবাগের ঝুমরায়। ঝুমরায় ফিরতে ফিরতেই রাত হয়ে যায়। সেখান থেকে প্রায় ঘণ্টাখানেক দূরে তাঁর গ্রাম। উষার কথায়, ‘‘বাসস্ট্যান্ডে দেখা হয়ে যায় আমাদের পাশের গ্রামের এক পাড়াতুতো দাদার সঙ্গে। তাঁর সঙ্গেই রাতে বাড়ি ফিরে আসি।’’ অত রাতে পাড়াতুতো দাদার সঙ্গে বাড়ি ফেরাটাকে ‘ভাল চোখে’ দেখেনি গ্রামবাসীদের একাংশ। পরের দিনই বসে বিচারসভা। বিচারসভায় উষাকে চরিত্রহীন বলে অপবাদ দেওয়া হয়। চুল কেটে দেওয়া হয়।
ঘটনার এতদিন পরে কেন থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন ওই মহিলা?
উষাদেবী জানান, তিনি তাঁর শ্বশুর, শাশুড়ির সঙ্গে থাকেন। পরিবারকে একঘরে করে দেওয়া হয়েছে। সে কারণেই প্রথমে অভিযোগ জানানোর সাহস হয়নি তাঁদের। তিনি বলেন, ‘‘আমার স্বামী গোয়ায় ঠিকা শ্রমিকের কাজ করেন। তাঁকে ফোনে বিষয়টি জানাই।’’ গত কাল স্বামী গ্রামে ফেরেন। তারপরই তিনি স্ত্রীকে নিয়ে গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।
হাজারিবাগের এসপি অনুপ বিরথারের গোচরে আসার পর ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। উষাদেবীর স্বামী সন্তোষ মাহাতো বলেন, ‘‘স্ত্রীকে ঘর থেকে বের করে না দিলে আমাকেও মারধর করবে বলে হুমকি দিচ্ছে গ্রামবাসীরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy