পরিবেশপ্রেমীদের চাপে শিলিগুড়িতে সব রকম প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের ব্যবহার এখনও যে নিষিদ্ধ তা মানল রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ।
বুধবার সকালে শিলিগুড়ির বিভিন্ন পরিবেশ প্রেমী সংগঠন এবং প্রাক্তন জনপ্রতিনিধিরা পর্ষদের শিলিগুড়ি আঞ্চলিক অফিসে স্মারকলিপি দিতে যান। জাতীয় গ্রিন ট্রাইবুনালের জারি করা গত ৩০ সেপ্টেম্বরের একটি নির্দেশ ঘিরে শিলিগুড়িতে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বির্তক তৈরি হয়। প্লাস্টিক ব্যবসায়ীদের একটি অংশ দাবি করেন, নিষেধাজ্ঞাটি বাতিল করে দিয়েছে ট্রাইবুনাল। তার জেরে শিলিগুড়ি শহর জুড়ে ফের প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের ব্যবহার শুরুর অভিযোগ উঠলেও, পর্ষদের তরফে কোনও ঘোষণা কেন করা হয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন স্মারকলিপি দিতে আসা প্রতিনিধিরা। পর্ষদের তরফে সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারায় শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়র পরিষদের সদস্য সুজয় ঘটক সেখানে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। আধিকারিকদের উদ্দেশ্য করে সুজয়বাবু বলেন, “অপব্যাখ্যার ঘটনা পর্ষদের অজানা নয়। তবু কেন কোনও বিবৃতি জারি হচ্ছে না, কেনই বা কোন পদক্ষেপ করা হচ্ছে না? আপনাদের পদক্ষেপ করতে হবে।”
এর পরেই পর্ষদের আধিকারিকরা জানান, গ্রিন ট্রাইবুনাল শিলিগুড়িতে কোনও ধরনের প্ল্যাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করা যাবে, এই মর্মে কোনও নির্দেশ দেয়নি। বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে আধিকারিকরা জানান। পরে যোগাযোগ করা হলে, পর্ষদের আঞ্চলিক অফিসের অন্যতম কর্তা গৌতম পাল বলেন, “ট্রাইবুনালের নির্দেশ খতিয়ে দেখেছি। সেখানে পদ্ধতিগত কিছু ত্রুটির কথা উল্লেখ্য করে নির্দেশটি আপাতত নিষ্ক্রিয় রাখার কথা বলা হয়েছে। তার মানে কখনই এমন নয় যে এখন শিলিগুড়িতে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের ব্যবহার চলবে। ট্রাইবুনাল একটি নির্দেশ দিয়েছেন। সেই মতো পদক্ষেপ করা হচ্ছে।” গৌতমবাবুর কথায়, “শিলিগুড়ির স্পর্শকাতর পরিবেশের কথা ভাবনাচিন্তা করে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের ব্যবহার রুখতে দ্রুত নির্দেশ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। কোনভাবেই যাতে ব্যবহার শুরু না হতে পারে, তার জন্য এবারের নির্দেশ আরও কঠিন হবে।”
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের শিলিগুড়ির আঞ্চলিক অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রাইবুনালের নির্দেশ নিয়ে উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে বিশদে একটি রিপোর্ট রাজ্য দফতরে পাঠানো হয়েছে। তাতে শিলিগুড়ির বিভিন্ন সংগঠনের দাবি-দাওয়া নিয়েও একটি ‘নোট’ রয়েছে। যার ভিত্তিতে পর্ষদের রাজ্য দফতর জনশুনানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সূত্রের খবর, আগামী মাসের মধ্যেই সেই প্রক্রিয়া সেরে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে। পর্ষদ জানিয়েছে, নতুন করে নিষেধাজ্ঞার নির্দেশ জারির আগে জনশুনানি সহ অনান্য প্রক্রিয়ার তদারকি করতে পর্ষদের শিলিগুড়ি আঞ্চলিক অফিসের এক আধিকারিক বর্তমানে কলকাতাতে রয়েছেন।
ন্যাফের মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, “পর্ষদের কর্তাদের এ দিনের বিবৃতির পরে এটা পরিষ্কার যে, এখনও কাউকে ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করতে দেখলে প্রশাসনের তরফে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।” শিলিগুড়ি পুরসভার প্রাক্তন মেয়র পরিষদ সুজয় ঘটক, সৌমেন নাগ, সঞ্জীবন দত্ত রায়, অমিত সরকার সহ ন্যাফ, শিলিগুড়ি ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন, সূর্যনগর সমাজকল্যাণ সমিতি, শিলিগুড়ি ভলান্টারি ব্লাড ডোর্নাস ফোরাম, নর্থ বেঙ্গল এক্সপ্লোরার্স ক্লাব, গ্রিন এনভায়রনমেন্ট প্রিজারভেশন সোসাইটি-সহ আরও বেশ কয়েকটি সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy