দুগ্গাপুজো মানেই ছুটি। আর ছুটি মানেই ঘুরতে যাওয়া। আমাদের বাড়িতে এমনটাই হয়ে এসেছে।
আঁকাবাঁকা পাহাড়ি রাস্তার ঢাল বেয়ে এ বছর চলে যাই একেবারে মেঘের কোলে।
গন্তব্য সিকিম।
সিকিমের রাজধানী গ্যাংটক হয়ে যাত্রা শুরু। ঘড়িতে তখন ন’টা। পৌঁছলাম হোটেলে। সে দিন তেমন কোনও পরিকল্পনা ছিল না। বাঙালি মানেই কেনাকাটা মাস্ট। তাই বিকেলের দিকে গুটিগুটি পায়ে রওনা হলাম এমজি মার্গের দিকে। হোটেল থেকে কাছেই। কেনাকাটা সেরে সন্ধের দিকে হোটেল ফেরত।
পরের দিন বেরিয়ে পড়লাম গ্যাংটকের আশপাশের এলাকাগুলো ঘুরে দেখতে। গন্তব্য বিশ্বের তথা এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম মনাস্ট্রি রমটেক। খুব শান্ত ও আর মনোরম পরিবেশের জন্য খ্যাত। ফিরতেই ইচ্ছে করছিল না।
পরের দিন আমরা রওনা দিই পেলিংয়ের দিকে। পাহাড়ি রাস্তা পেরিয়ে চললাম পেলিং। দু’পাশে ধস নেমেছে। যখন পেলিংয়ের হোটেলে এসে নামলাম, দুপুর ১টা। এ বার বাধ সাধল বৃষ্টি। দু’দিন কার্যত হোটেলবন্দি বৃষ্টির চোখরাঙানিতে। শেষমেশ বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই চললাম কাঞ্চনঝঙ্ঘা জলপ্রপাত দেখতে। রিম্বি জলপ্রপাতও দেখলাম। বেশ বড়। এর পর আমরা গেলাম খেচিপেরি হ্রদের কাছে। স্থানীয় বাসিন্দারা হ্রদটিকে পবিত্র বলে মনে করে। বলা ভাল, পাহাড়ে বৃষ্টিও কিন্তু মন ছুঁয়ে যায়।
পরের ঠিকানা রাবাংলা। মনের মধ্যে নতুন করে দানা বাঁধছিল রোমাঞ্চ। পাহাড়ের সব থেকে উঁচুতে একটা কটেজে ছিলাম আমরা। কাঠের বাড়ি। সুন্দর করে সাজানো গোছানো। ব্যালকনি থেকে নীচের ঘরগুলো দেখতে খুব ভাল লাগছিল। আর ভাল লাগছিল পাহাড়ের ওপর মেঘের আনাগোনা।
রাতের দিকে অঝোরে বৃষ্টি নামল। পাহাড়ের মাথায় আমাদের কটেজটা। তাই একটু ভয় ভয়ই করছিল। পরের দিন আমরা গ্যাংটক এলাম নাথুলা দেখতে। ভারত ও চিন সীমান্ত। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে হার মানিয়ে দেয় হাড়কাঁপুনি ঠান্ডা।
ভ্রমণ শেষ। এ বার ঘরে ফেরার পালা। পরের দিন সকাল ৭টায় বেরিয়ে পড়লাম হোটেল থেকে।
চেপে বসলাম তিস্তা-তোর্সা এক্সপ্রেসে। আসার পথে স্মৃতি রোমন্থণ করতে করতে এলাম। ছাংগু হ্রদের সৌন্দর্য, বাবা মন্দিরের ইতিহাস, মাথার উপর দিগন্ত বিস্তৃত আকাশ আর পায়ের নীচে মেঘের আনাগোনা...।
কী করে যাবেন: হাওড়া বা শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে চেপে নিউ জলপাইগুড়ি জংশন। সেখান থেকে গাড়ি করে সোজা গ্যাংটক।
কখন যাবেন: বর্ষা বাদ দিয়ে যে কোনও সময়ই পাহাড়ে যাওয়ার পক্ষে ভাল। শীত কালে গেলে বরফ দেখার সৌভাগ্য হবে।
কোথায় থাকবেন: থাকা-খাওয়ার জন্য গ্যাংটক-পেলিংয়ে প্রচুর হোটেল।
পুজো এক্সপ্রেস
পুজোর মরসুমে কোথায় গেলেন? উট দেখলেন নাকি উটকামন্ড? সিংহ পেলেন গিরে নাকি শ্রীলঙ্কায় খুঁজলেন ধনপতির সিংহল? চেনা ছকের বাইরে সেই বেড়ানোর গল্প লিখুন অনধিক ৫০০ শব্দে আর পাঠিয়ে দিন আমাদের। জানান যাতায়াত, থাকা-খাওয়ার হালহকিকত। ছবি (নিজেদের ছাড়া) দিন। পাঠান এই ঠিকানায়:
সম্পাদক (সেন্ট্রাল বেঙ্গল)
আনন্দবাজার পত্রিকা
৬, প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলিকাতা — ৭০০০০০১
অথবা, করুন ই-মেল:
abpnm15@gmail.com
(*সম্পাদকের নির্বাচনই চূড়ান্ত। লেখা ও ছবি ফেরতযোগ্য নয়।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy