আরে আরে করছোটা কী? সাবধান! এ সব করতে যেও না! যোগাযোগ করতে গেলেই ওরা (ভিনগ্রহীরা) জেনে ফেলবে, এই ব্রহ্মাণ্ডে আমাদের অস্তিত্ব। ওদের এ সব জানতে দিও না। প্রযুক্তির দিক থেকে ওরা আমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে। আমরাও এই ব্রহ্মাণ্ডে আছি, জানলে হিতে বিপরীত হতে পারে!
যে কেউ বললে কানে তোলার দরকারই হত না। কিন্তু পরামর্শটা দিয়েছেন খোদ স্টিফেন হকিং। কেন তাঁর এই পরামর্শ, বোঝাতে গিয়ে প্রবাদপ্রতিম এই ব্রিটিশ পদার্থবিজ্ঞানী একটি মনে রাখার মতো উপমা দিয়েছেন। বলেছেন, ‘‘ভিনগ্রহীদের সঙ্গে আমাদের প্রথম যোগাযোগের সময়ের অবস্থাটা হবে আমেরিকা আবিষ্কারের মতো। ক্রিস্টোফার কলম্বাস প্রথম আমেরিকার ভূখণ্ডে নামার পর সেখানকার আদি আমেরিকানরা তাঁর সঙ্গে ঠিক যে ব্যবহারটা করেছিল, ভিনগ্রহীরাও আমাদের সঙ্গে তেমনটাই করতে পারে!’’
‘স্টিফেন হকিং’স ফেভারিট প্লেসেস’ নামের ওই নতুন অনলাইন ফিল্মে এই পরামর্শ দিতে দেখা গিয়েছে হকিংকে। ওই ফিল্মে ‘এসএস হকিং’ নামের একটি মহাকাশযানে চাপিয়ে দর্শকদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে হকিংয়ের পছন্দ করা ব্রহ্মাণ্ডের পাঁচটি জায়গায়। দেখানো হয়েছে ওই মহাকাশযানটি উড়ে যাচ্ছে ১৬ আলোকবর্ষ দূরের একটি ভিনগ্রহের পাশ দিয়ে। যার নাম- ‘গ্লিয়েস ৮৩২-সি’। পৃথিবীর মতো বাসযোগ্য হওয়ার যথেষ্টই সম্ভাবনা রয়েছে এই ভিন গ্রহের।
ভিনগ্রহীরা দেখতে কেমন হবে? বিজ্ঞানীদের কল্পনায়
ফিল্মে হকিং বলেছেন, ‘‘এক দিন ‘গ্লিয়েস ৮৩২-সি’র মতো কোনও ভিন গ্রহ থেকে আমরা পেতেই পারি ভিনগ্রহীদের পাঠানো কোনও সিগন্যাল বা ‘বার্তা’। কিন্তু আমাদের সেই ‘বার্তা’র জবাব দেওয়াটা খুব বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।’’
কেন? কেন এ কথা বলছেন হকিং?
‘কৃষ্ণগহ্বর (ব্ল্যাক হোল) ততটা কালো নয়’, এ কথাটা প্রায় ৫০ বছর আগে যিনি এক রকম অব্যর্থ ভাবেই বলতে পেরেছিলেন, সেই হকিং এ বারও বলছেন, ‘‘ওই ভিনগ্রহীরা আমাদের চেয়ে অনেক অনেক বেশি শক্তিশালী হবে। আমাদের চেয়ে অনেক অনেক বেশি বুদ্ধিমান হবে। তারা আমাদের সহজে দেখতেও পারবে না। আমরা যেমন খুব সহজে, খালি চোখে ব্যাকটেরিয়াদের দেখতে পারি না। ওরাও (ভিনগ্রহীরা) তেমন আমাদের দেখতে পারবে না চট করে।’’
ভিনগ্রহীরা দেখতে কেমন হবে? বিজ্ঞানীদের কল্পনায়
সত্যি-সত্যিই কি ভিনগ্রহীরা রয়েছে এই ব্রহ্মাণ্ডের কোনও অজানা, অচেনা মুলুকে?
হকিং বলেছেন, ‘‘যতই বয়স বাড়ছে, এ ব্যাপারে আমার বিশ্বাস ততই আরও জোরালো হচ্ছে। এখন আমি আরও জোরালো ভাবে বলছি, ভিনগ্রহীরা আছেই আছে এই ব্রহ্মাণ্ডের কোথাও না কোথাও। আমরা মোটেই একা নই এই ব্রহ্মাণ্ডে। প্রায় জীবনভর তাদের কথা ভেবেছি। এখন ওই ভিনগ্রহীদের খুঁজে বের করার জন্য একটি আন্তর্জাতিক প্রয়াস (ব্রেকথ্রু লিস্ন) শুরু হয়েছে। আমি তার নেতৃত্বও দিচ্ছি।’’ গত বছরেই হকিং বলেছিলেন, ‘‘আমরা যদি অদূর ভবিষ্যতে ভিনগ্রহীদের হদিশ পাইও, প্রযুক্তির দিক থেকে তারা আমাদের চেয়ে অন্তত কয়েকশো কোটি বছর এগিয়ে থাকবে।’’
ও দিকে রবিবার থেকেই দক্ষিণ-পশ্চিম চিনে বসানো বিশ্বের বৃহত্তম রেডিও টেলিস্কোপটি ভিনগ্রহীদের খুঁজে বের করার অভিযান শুরু করেছে। চিনের সরকারি সংবাদ সংস্থা জিনহুয়া জানাচ্ছে, দুর্গম পার্বত্য গুইঝাউ প্রদেশেই বসানো হয়েছে ওই ‘ফাইভ হান্ড্রেড মিটার অ্যাপারচার স্ফেরিক্যাল রেডিও টেলিস্কোপ (ফাস্ট)। যার প্রতিফলকটি (রিফ্লেক্টর) ৩০টি আন্তর্জাতিক ফুটবল মাঠের দৈর্ঘ্যের সমান। ওই টেলিস্কোপটির অন্যতম কাজই হবে ভিনগ্রহীদের সন্ধান।
আরও পড়ুন- আমাদের ব্রেনও রং বদলায় রাগে, দুঃখে, বিস্ময়ে, অভিমানে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy