স্টিফেন হকিং।
পছন্দ না হলে আমরা জামাকাপড় বদলাই। ঘর-বাড়ি বদলাই। জমি-জিরেতও।
কিন্তু পছন্দ না হলে কেউ কখনও নিজের গলার স্বর বদলে নিয়েছেন, এমন শুনেছেন কি?
নিজের গলার স্বরে তাঁর কিন্তু একেবারেই অরুচি ধরে গিয়েছে। আমরা যে গমগমে স্বরটা শুনে চলেছি গত ৩২ বছর ধরে।
তাই তাঁর এত দিনের এত সাধের গলার স্বরটা এ বার বদলাতে চান প্রবাদপ্রতিম বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং। আর স্টিফেন হকিং চাইলে কি না হয়! কে না চাইবেন হকিংয়ের গলায় তাঁর নিজের স্বরটা শুনতে? তিনি যে স্টিফেন হকিং, যাঁকে গোটা বিশ্ব স্যালুট দিয়ে চলেছে গত পাঁচ দশক ধরে।
তাই হকিংয়ের গলায় তাঁর স্বরটাই ‘বাজুক’, এই ইচ্ছায় হলিউড কাঁপানো, দাপানো অভিনেতাদের লম্বা লাইন পড়ে গিয়েছে হকিংয়ের বাড়ির সামনে। অ্যাপ্লিকেশনের পর অ্যাপ্লিকেশন। তার সঙ্গে বিনোদন জগতের নামীদামি সেলেব্রিটিরা তাঁদের ভয়েসের অডিও ক্যাসেটও পাঠাতে শুরু করে দিয়েছেন হকিংয়ের কাছে।
কিন্তু না, তাঁর গবেষণার মতোই বড্ড খুঁতখুতে স্বভাব হকিংয়ের! একের পর এক সেলিব্রিটিকে ‘নো’ বলে দিচ্ছেন! তাঁদের কারও স্বরই তার পছন্দ হচ্ছে না।
হকিংয়ের গলায় নিজের স্বর শুনবেন বলে কারা লাইন দিয়েছেন, জানেন?
হলিউড কাঁপানো নক্ষত্র লিয়াম নীসন, আন্না কেন্ড্রিক ও এডি রেডমেন। ২০১৪-য় ‘দ্য থিয়োরি অফ এভরিথিং’-এ তিন জনই অভিনয় করেছিলেন হকিংয়ের চরিত্রে। আর তার পরেও হকিংয়ের ‘গলার স্বর’ হওয়ার জন্য তাঁদের অডিশন দিতে হচ্ছে বলে ভেতরে ভেতরে কিছুটা তেতেও রয়েছেন ওই তিন অভিনেতা। তাঁদের ঘনিষ্ঠ মহলে সে কথা তাঁরা কবুলও করে ফেলেছেন।
একই চেষ্টা করেছেন বিশিষ্ট শেফ গর্ডন র্যামসেও। র্যামসেকে দেখতে কিছুটা বিদঘুটে! টিভিতে তাঁকে দেখতে আর শুনতে অভ্যস্ত হয়ে গেলেও এখনও দর্শকদের বিরক্তি ঢাকা-চাপা থাকে না। র্যামসে আবার একটু হালকা স্বভাবের। লোক হাসাতে ভালবাসেন। তাই হকিং সরাসরি ‘নো’ বলে দিয়েছেন র্যামসেকে। হকিং বলেছেন, ‘‘আমার গলার স্বরটা ও রকম শুনতে লাগলে লোকে আমাকে সিরিয়াসলি নেবেন না। হেসে ফেলবেন!’’ ওই কথা শুনে তো র্যামসের মুখ চুন! ভাবছেন, কেন সাধ করে গিয়েছিলেন হকিংয়ের সেক্রেটারির কাছে!
ট্যালেন্ট শো’য়ের জাজ হিসেবে বিখ্যাত সাইমন কাওয়েলকেও সরাসরি ‘নো’ বলে দিয়েছেন হকিং।
সে-ও না হয় মেনে নেওয়া গেল!
কিন্তু লিয়াম নীসনের মতো ডাকসাইটে অভিনেতা একেবারে কাঁচুমাচু মুখে হকিংয়ের কাছে দরখাস্ত পাঠিয়েছিলেন, ‘‘আমার গলার স্বরটা এক বার শুনে দেখুন, প্লিজ। খুব গভীরতা আছে। সেক্সিও। কেমন একটা ফিজিক্স, ফিজিক্স গন্ধ আছে যেন...!’’
না, গলাতে পারেননি হকিংকে। তাঁকেও শুনতে হয়েছে ‘নো’!
হকিংয়ের পছন্দ হয়েছে মাইকেল কেনের গলার স্বর। এমনটাই শোনা যাচ্ছে তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রে।
১৯৬৩ সালে অ্যামিওট্রপিক ল্যাটেরাল স্ক্লেরোসিস রোগে আক্রান্ত হন হকিং। তখনও তিনি কথা বলতে পারতেন তাঁর নিজের গলার স্বরেই। কিন্তু ’৮৫ সালে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পর ডাক্তাররা তাঁর ঘাড়ে ছিদ্র করে একটি টিউব ঢোকানোর পর নিজের বাকশক্তি হারিয়ে পেলেন হকিং। তার পর থেকেই হকিংয়ের গলার স্বর নিয়ন্ত্রণ করে একটি কম্পিউটারভিত্তিক যোগাযোগব্যবস্থা। যার প্রযুক্তি-প্রকৌশল ‘ইন্টেল কর্পোরেশন’-এর।
আরও পড়ুন- মহাকাশে যাবেন শীঘ্রই, আনন্দে আর উচ্ছ্বাসে ভাসছেন স্টিফেন হকিং
ট্যাক্সির চেয়ে কম ভাড়ায় মহাকাশ ঘোরানোর কথা ভাবছে ইসরো
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy