আমাদের এক একজনের ক্ষেত্রে ঘাম হওয়ার পরিমাণ আলাদা হলেও, ঘাম আটকানোর কোনও উপায় নেই। উচিতও নয়। আমাদের শরীর অতিরিক্ত জল এবং কিছু মিনারেল ঘাম হিসেবে বার করে দেয়। এই ঘাম কিন্তু আসলে গন্ধবিহীন। ত্বকের উপরের স্তরে পৌঁছনোর পর বিভিন্ন ব্যাকটিরিয়ার সঙ্গে মেশার ফলেই ঘামে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়।
শরীরের দুর্গন্ধ দূর করতে হলে প্রথমেই তার কারণ জানা দরকার। হাইজিনের অভাব বা ঘাম থেকে গন্ধ হলে তা প্রতিকার করা অপেক্ষাকৃত সহজ। কিন্তু যদি কোনও শারীরিক অসুস্থতার কারণে তা হয়ে থাকে, তা হলে তার প্রতিকার বেশ সময়সাপেক্ষ।
ডিওডোর্যান্ট বা পারফিউম হচ্ছে ঘামের গন্ধ তাড়ানোর হাতেগরম উপায়। একটা সময়ের পর এতে কাজ না হলে কয়েকটি সর্তকতা মেনে চলুন...
• শরীরের যে সব জায়গায় ঘাম হয়, তা শুকনো রাখার চেষ্টা করুন।
• আন্ডারআর্মস, স্তনের নীচে, কানের পিছনের অংশ, কোমর, হাঁটু ও কনুইয়ের ভাঁজ, হাতের তালু ইত্যাদি অংশেই মূলত ঘাম বেশি জমে বলে নিয়মিত এই অংশ পরিষ্কার রাখা দরকার।
• প্রতিদিন পরিষ্কার শুকনো অন্তর্বাস পরবেন। আধশুকনো বা অপরিষ্কার অন্তর্বাস কিন্তু ব্যাকটিরিয়া বহন করে।
• যে সব মেটিরিয়ালের পোশাকে ঘাম হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, তা এড়িয়ে চলুন।
• ঘামে ভেজা পোশাক দ্বিতীয়বার না পরাই ভাল। একান্তই যদি পরতে হয়, তা হলে তা রোদে শুকিয়ে নিতে পরাই ভাল।
• ঘামের দুর্গন্ধ কমানোর প্রধান দাওয়াই সঠিক হাইজিন। স্নানের আগে সাবান বা বডিওয়াশ ব্যবহার করুন। পুরো শরীর লুফার সাহায্যে ভাল ভাবে স্ক্রাব করলে দুর্গন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা কমবে।
• স্নানের জলে পছন্দসই এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে নিতে পারেন। না হলে পাতিলেবুর রস এবং খানিকটা বেকিং সোডা মিশিয়ে স্নান করলেও উপকার পাবেন।
• শরীরের অন্য কোনও জায়গায় না হলেও, অতিরিক্ত ঘােমর কারণে আন্ডারআর্মসে দুর্গন্ধের সমস্যায় ভোগেন অনেকেই। কারণটা সেই ব্যাকটিরিয়া। আন্ডারআর্মস নিয়মিত শেভ বা ওয়্যাক্স করলে ওই অংশে ব্যাকটিরিয়া জমতে পারে না। ফলে দুর্গন্ধও হয় না।
• পাতিলেবুর রস শরীরের পিএইচ লেভেল কমিয়ে দেয়, ফলে ব্যাকটিরিয়া তৈরি হতে পারে না। একটি লেবুকে দু’ভাগ করে তার একটি অংশ নিয়ে বগলের নীচে ঘষে ফেলুন। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে স্নান সারুন। এটা রোজই করতে পারেন, যত দিন না গন্ধ দূর হচ্ছে।
• প্রয়োজনে এক টেবিল চামচ বেকিং সোডা ও লেবুর রস মিশিয়ে নিয়ে আন্ডারআর্মসে লাগান। রোজ একবার করে করলে এক সপ্তাহের মধ্যেই দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি।
• ব্যাকটিরিয়া থেকে হওয়া দুর্গন্ধকে দূর করতে অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার ‘আলাদিনের প্রদীপ’ হতে পারে। এটি একটি তুলোর বলে ভিজিয়ে ঘাম হওয়ার জায়গাতে রেখে দু’-তিন মিনিট অপেক্ষা করুন। তার পর মুছে ফেলুন। দিনে দু’বার করুন। ঈষদুষ্ণ গরম জলে অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার মিশিয়ে স্নানও করতে পারেন।
• টম্যাটোর অ্যান্টিসেপটিক উপাদান ব্যাকটিরিয়াকে মেরে ফেলে বলে ঘাম থেকে আর দুর্গন্ধ সৃষ্টি হতে পারে না। টম্যাটো দিয়ে স্ক্রাব করলেও ভাল ফল পাবেন।
• বিটের অ্যান্টিব্যাকটিরিয়াল উপাদানও ব্যাক্টিরিয়া নষ্ট করে। বিটের রসে তুলো ভিজিয়ে ঘাম হওয়ার জায়গাতে ঘষুন। শুকিয়ে এলে ঈষদুষ্ণ জলে ধুয়ে ফেলুন।
• পারফিউম লাগানোর সময় কবজিতে বা অন্য জায়গাতেও ঘষবেন না। এতে দীর্ঘস্থায়ী হয় না গন্ধ। আর যে অংশ বেশি ঘামে, সেখানে বারবার ডিও লাগান। তবে লাগানোর আগে জায়গাটা যেন শুকনো থাকে, লক্ষ রাখবেন।
• খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন আনুন। ভাজা খাবার, অতিরিক্ত তেল ঘামের গন্ধের কারণ হতে পারে।
এই ধরনের খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy