Advertisement
০৯ মে ২০২৪
Columbia Disaster

দ্বিতীয় বার মহাকাশে গিয়ে ফেরেননি কল্পনা, ২০ বছর আগে কী ঘটেছিল স্পেস শাটল কলম্বিয়ায়

২০০৩-এর ১ ফেব্রুয়ারি কেনেডি স্পেস সেন্টারে রীতিমতো হইচই এবং শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। কারণ মহাকাশযাত্রা শেষে পৃথিবীর বুকে ফিরে আসছিলেন ৭ মহাকাশচারী। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:১১
Share: Save:
০১ ২১
পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০০৩ সালের ১৬ জানুয়ারি ৭ মহাকাশচারীকে নিয়ে পাড়ি দিয়েছিল আমেরিকার মহাকাশযান কলম্বিয়া। অভিযানের নাম ছিল এসটিএস-১০৭। কিন্তু ১৫ দিনের মাথায় কাজ সেরে পৃথিবীতে ফেরার পথে মহাশূন্যে ধ্বংস হয় এই যান। মৃত্যু হয় ৭ মহাকাশচারীরই। মৃত্যু হয়েছিল ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকার মহাকাশচারী এবং মহাকাশযান বিশেষজ্ঞ কল্পনা চাওলারও।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০০৩ সালের ১৬ জানুয়ারি ৭ মহাকাশচারীকে নিয়ে পাড়ি দিয়েছিল আমেরিকার মহাকাশযান কলম্বিয়া। অভিযানের নাম ছিল এসটিএস-১০৭। কিন্তু ১৫ দিনের মাথায় কাজ সেরে পৃথিবীতে ফেরার পথে মহাশূন্যে ধ্বংস হয় এই যান। মৃত্যু হয় ৭ মহাকাশচারীরই। মৃত্যু হয়েছিল ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকার মহাকাশচারী এবং মহাকাশযান বিশেষজ্ঞ কল্পনা চাওলারও।

০২ ২১
চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি সেই ঘটনা ২০ বছরে পা দিতে চলল। কী ভাবে ঘটে ওই দুর্ঘটনা? তার নেপথ্য কারণই বা কী, তা নিয়ে চর্চা চলছে দু’দশক ধরে। কী ভাবে কেটেছিল কল্পনাদের শেষের মুহূর্ত, তার নাগাল পাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।

চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি সেই ঘটনা ২০ বছরে পা দিতে চলল। কী ভাবে ঘটে ওই দুর্ঘটনা? তার নেপথ্য কারণই বা কী, তা নিয়ে চর্চা চলছে দু’দশক ধরে। কী ভাবে কেটেছিল কল্পনাদের শেষের মুহূর্ত, তার নাগাল পাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।

০৩ ২১
২০০৩-এর ১ ফেব্রুয়ারি আমেরিকার কেনেডি স্পেস সেন্টারে রীতিমতো হইচই এবং শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। কারণ মহাকাশযাত্রা শেষে পৃথিবীর বুকে ফিরে আসছিলেন ৭ মহাকাশচারী। তাঁদের অভ্যর্থনা জানানোর জন্য অপেক্ষায় ছিল সারা বিশ্ব।

২০০৩-এর ১ ফেব্রুয়ারি আমেরিকার কেনেডি স্পেস সেন্টারে রীতিমতো হইচই এবং শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। কারণ মহাকাশযাত্রা শেষে পৃথিবীর বুকে ফিরে আসছিলেন ৭ মহাকাশচারী। তাঁদের অভ্যর্থনা জানানোর জন্য অপেক্ষায় ছিল সারা বিশ্ব।

০৪ ২১
পূর্ব পরিকল্পনা মতো মহাকাশযানটিকে পৃথিবীতে সঠিক ভাবে অবতরণ করাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন কেনেডি স্পেস সেন্টারের মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। কিন্তু শেষমেশ আর সেই পরিকল্পনা কর্যকর করা যায়নি।

পূর্ব পরিকল্পনা মতো মহাকাশযানটিকে পৃথিবীতে সঠিক ভাবে অবতরণ করাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন কেনেডি স্পেস সেন্টারের মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। কিন্তু শেষমেশ আর সেই পরিকল্পনা কর্যকর করা যায়নি।

০৫ ২১
কলম্বিয়া যানের প্রধান দায়িত্বে ছিলেন রিক হাজ়ব্যান্ড। অবতরণের বিষয়ে তাঁকেই যাবতীয় নির্দেশ দিচ্ছিলেন নাসার ‘এন্ট্রি ফ্লাইট ডিরেক্টর’ লেরয় কেন।

কলম্বিয়া যানের প্রধান দায়িত্বে ছিলেন রিক হাজ়ব্যান্ড। অবতরণের বিষয়ে তাঁকেই যাবতীয় নির্দেশ দিচ্ছিলেন নাসার ‘এন্ট্রি ফ্লাইট ডিরেক্টর’ লেরয় কেন।

০৬ ২১
রিককে পৃথিবীতে প্রবেশের বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছিলেন। এর মাধ্যমেই মহাকাশে ২৮তম অভিযান সম্পন্ন করার কথা ছিল কলম্বিয়ার।

রিককে পৃথিবীতে প্রবেশের বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছিলেন। এর মাধ্যমেই মহাকাশে ২৮তম অভিযান সম্পন্ন করার কথা ছিল কলম্বিয়ার।

০৭ ২১
কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পর পরই পৃথিবীতে ফিরে আসার তোড়জোড় শুরু করেন কল্পনা, রিক-সহ ৭ মহাকাশচারী। আর তার পরই ঘটে গিয়েছিল সেই বিপর্যয়।

কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পর পরই পৃথিবীতে ফিরে আসার তোড়জোড় শুরু করেন কল্পনা, রিক-সহ ৭ মহাকাশচারী। আর তার পরই ঘটে গিয়েছিল সেই বিপর্যয়।

০৮ ২১
এসটিএস-১০৭ উৎক্ষেপণের সময়, এই যানের বাইরের জ্বালানি ট্যাঙ্ক থেকে নিরোধক ফোমের একটি টুকরো ভেঙে যায় এবং সেই টুকরো গিয়ে আঘাত করে যানটির অরবিটারের বাম ডানায় থাকা তাপ সুরক্ষা যন্ত্রে।

এসটিএস-১০৭ উৎক্ষেপণের সময়, এই যানের বাইরের জ্বালানি ট্যাঙ্ক থেকে নিরোধক ফোমের একটি টুকরো ভেঙে যায় এবং সেই টুকরো গিয়ে আঘাত করে যানটির অরবিটারের বাম ডানায় থাকা তাপ সুরক্ষা যন্ত্রে।

০৯ ২১
পৃথিবীতে পুনঃপ্রবেশের আগে, মহাকাশচারীরা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত থাকলেও তাঁদের কিছু করার ছিল না। কারণ, মাঝ আকাশে ওই অংশটি সারাইয়ের কোনও সুযোগ ছিল না।

পৃথিবীতে পুনঃপ্রবেশের আগে, মহাকাশচারীরা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত থাকলেও তাঁদের কিছু করার ছিল না। কারণ, মাঝ আকাশে ওই অংশটি সারাইয়ের কোনও সুযোগ ছিল না।

১০ ২১
কলম্বিয়া যখন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে পুনঃপ্রবেশ করে, তখন যানের ‘টেলিমেট্রি’ সিস্টেমে দেখা গিয়েছিল যে, হাইড্রোলিক তরলের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে কম। তবে বাকি সব পরিমাপ ঠিক ছিল। তাই যানের অভ্যন্তরে কোনও সমস্যা হয়েছিল বলে ধরতেই পারেননি কল্পনা এবং তাঁর দল।

কলম্বিয়া যখন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে পুনঃপ্রবেশ করে, তখন যানের ‘টেলিমেট্রি’ সিস্টেমে দেখা গিয়েছিল যে, হাইড্রোলিক তরলের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে কম। তবে বাকি সব পরিমাপ ঠিক ছিল। তাই যানের অভ্যন্তরে কোনও সমস্যা হয়েছিল বলে ধরতেই পারেননি কল্পনা এবং তাঁর দল।

১১ ২১
পুনঃপ্রবেশ পদ্ধতির সূচনা করার পরে, আঘাতের কারণে আগে থেকেই ক্ষতি হয়েছিল তাপ সুরক্ষা যন্ত্রের। গরম বায়ুমণ্ডলীয় গ্যাসের তাপ থেকে যানকে বাঁচানোই ছিল সেই যন্ত্রের কাজ।

পুনঃপ্রবেশ পদ্ধতির সূচনা করার পরে, আঘাতের কারণে আগে থেকেই ক্ষতি হয়েছিল তাপ সুরক্ষা যন্ত্রের। গরম বায়ুমণ্ডলীয় গ্যাসের তাপ থেকে যানকে বাঁচানোই ছিল সেই যন্ত্রের কাজ।

১২ ২১
কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে ওই যন্ত্র বায়ুমণ্ডলীয় গ্যাসের তাপ সহ্য করার ক্ষমতা হারিয়েছিল। তাপ সহ্য করতে না পেরে কলম্বিয়ার অভ্যন্তরীণ ডানার কাঠামোতে আগুন ধরে যায়। সেই আগুন সারা মহাকাশযানে ছড়িয়ে পড়ে।

কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে ওই যন্ত্র বায়ুমণ্ডলীয় গ্যাসের তাপ সহ্য করার ক্ষমতা হারিয়েছিল। তাপ সহ্য করতে না পেরে কলম্বিয়ার অভ্যন্তরীণ ডানার কাঠামোতে আগুন ধরে যায়। সেই আগুন সারা মহাকাশযানে ছড়িয়ে পড়ে।

১৩ ২১
‘স্পেস সেফটি’ পত্রিকা অনুযায়ী, বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের পরই কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে সমস্ত যোগাযোগ হারিয়ে ফেলে কলম্বিয়া। কিছু ক্ষণ পরে মাঝ আকাশেই বিস্ফোরণ ঘটায় ভেঙে পড়ে যানটি।

‘স্পেস সেফটি’ পত্রিকা অনুযায়ী, বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের পরই কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে সমস্ত যোগাযোগ হারিয়ে ফেলে কলম্বিয়া। কিছু ক্ষণ পরে মাঝ আকাশেই বিস্ফোরণ ঘটায় ভেঙে পড়ে যানটি।

১৪ ২১
ভূপৃষ্ঠের ৬১ কিমিরও বেশি উচ্চতা থেকে মহাকাশযানটি শব্দের ১৮ গুণ গতিতে নীচের দিকে নেমে আসে। মাটিতে পড়ে টুকরো টুকরো হয়ে পড়ে যানটি।

ভূপৃষ্ঠের ৬১ কিমিরও বেশি উচ্চতা থেকে মহাকাশযানটি শব্দের ১৮ গুণ গতিতে নীচের দিকে নেমে আসে। মাটিতে পড়ে টুকরো টুকরো হয়ে পড়ে যানটি।

১৫ ২১
১ ফেব্রুয়ারি আকাশে দাবানল এবং স্ফুলিঙ্গের সাক্ষী হয় আমেরিকার বহু মানুষ। চিরতরে হারিয়ে গিয়েছিল কলম্বিয়া। পরে ৭ মহাকাশচারীকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়েছিল।

১ ফেব্রুয়ারি আকাশে দাবানল এবং স্ফুলিঙ্গের সাক্ষী হয় আমেরিকার বহু মানুষ। চিরতরে হারিয়ে গিয়েছিল কলম্বিয়া। পরে ৭ মহাকাশচারীকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়েছিল।

১৬ ২১
কলম্বিয়ার তার আগের অভিযানেও একই জিনিস ঘটেছিল। কিন্তু সেই বার প্রবল কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

কলম্বিয়ার তার আগের অভিযানেও একই জিনিস ঘটেছিল। কিন্তু সেই বার প্রবল কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

১৭ ২১
কলম্বিয়ার বিপর্যয়ের পর, দুই বছরের জন্য এই ধরনের মহাকাশ অভিযান বন্ধ ছিল এবং একটি কঠোর তদন্ত শুরু হয়েছিল। তদন্ত শেষে প্রকাশ পায় যে, মহাকাশযানটি পৃথিবীর মাটি ছোঁবে না সেই ভাগ্য নির্ধারিত হয়েছিল ২৭ জানুয়ারিতেই।

কলম্বিয়ার বিপর্যয়ের পর, দুই বছরের জন্য এই ধরনের মহাকাশ অভিযান বন্ধ ছিল এবং একটি কঠোর তদন্ত শুরু হয়েছিল। তদন্ত শেষে প্রকাশ পায় যে, মহাকাশযানটি পৃথিবীর মাটি ছোঁবে না সেই ভাগ্য নির্ধারিত হয়েছিল ২৭ জানুয়ারিতেই।

১৮ ২১
শাটলের বাইরে জ্বালানি ট্যাঙ্কের একটি অংশ ভেঙে যাওয়ার কারণে মহাকাশযানের একটি ডানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

শাটলের বাইরে জ্বালানি ট্যাঙ্কের একটি অংশ ভেঙে যাওয়ার কারণে মহাকাশযানের একটি ডানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

১৯ ২১
নিহত মহাকাশচারীদের মধ্যে রিক এবং কল্পনা ছাড়াও ছিলেন উইলিয়াম সি ম্যাককুল, মাইকেল পি. অ্যান্ডারসন, ডেভিড এম ব্রাউন, লরেল ক্লার্ক, ইলান রেমন।

নিহত মহাকাশচারীদের মধ্যে রিক এবং কল্পনা ছাড়াও ছিলেন উইলিয়াম সি ম্যাককুল, মাইকেল পি. অ্যান্ডারসন, ডেভিড এম ব্রাউন, লরেল ক্লার্ক, ইলান রেমন।

২০ ২১
মহাকাশচারীদের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছিল সারা বিশ্ব। কল্পনার  মৃত্যুতে শোকের ছায়া দেখা গিয়েছিল ভারতেও।

মহাকাশচারীদের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছিল সারা বিশ্ব। কল্পনার মৃত্যুতে শোকের ছায়া দেখা গিয়েছিল ভারতেও।

২১ ২১
কল্পনা ১৯৮৮ সালে নাসাতে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৯৭ সালের ১৯ নভেম্বর কল্পনা তাঁর প্রথম মহাকাশ যাত্রা করেন। তিনিই ছিলেন প্রথম ভারতীয় মহিলা, যিনি মহাকাশ অভিযানে গিয়েছিলেন।

কল্পনা ১৯৮৮ সালে নাসাতে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৯৭ সালের ১৯ নভেম্বর কল্পনা তাঁর প্রথম মহাকাশ যাত্রা করেন। তিনিই ছিলেন প্রথম ভারতীয় মহিলা, যিনি মহাকাশ অভিযানে গিয়েছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE