রিঙ্কু জানতেন, এই পরিস্থিতিতে আরও উইকেট পড়লে হার বাঁচানো কঠিন হবে। মাঠে নেমে রিঙ্কু তাই মন দেন ইনিংস গড়ার কাজে। উইকেটের অন্য প্রান্তে আগ্রাসী মেজাজে থাকা অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবকে সঙ্গ দিলেন ঠান্ডা মাথায়। যখন যেমন প্রয়োজন, খুচরো রান নিয়ে স্কোরবোর্ড সচল রাখলেন। ক্যাপ্টেন সূর্যের সঙ্গে জুটিতে উঠল ৭০ রান।
যে পেল্লায় সাইজ়ের ছক্কা হাঁকানোর জন্য রিঙ্কুকে চিনেছে আসমুদ্রহিমাচল, তাঁর ব্যাট থেকে শেষ ওভারের আগে পর্যন্ত একটিও ছক্কা দেখা যায়নি। অবশেষে এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। ১৯তম ওভারের প্রথম বলটিই উড়ে গেল মাঠের বাইরে। ছোট আকারের ছয় মারেন রিঙ্কু। ডেথ ওভারে একটি ছক্কা খাওয়ার পর বোলার নিশ্চিত হলেন, তিনি লাইন এবং লেংথ বদলে ফেলবেন পুরোপুরি।
ভারতীয় মারকুটে ব্যাটারদের মধ্যে সাধারণত একটা জিনিস লক্ষ্য করা যায়। পিচ পাটা হলে তাঁরা প্রায় সকলেই ফুল ফোটান। কিন্তু বল একটু এ দিক-ও দিক করলেই সমস্ত জারিজুরি শেষ। বাউন্স আর গতির সামনে আজও অসহায় দেখায় বহু ভারতীয় ব্যাটারকে। রিঙ্কুর ক্ষেত্রে তেমনটা বলা যাবে না। তিনি বাউন্স পছন্দ করেন। সূর্যের মতোই বোলারের গতি ব্যবহার করে বল মাঠের বাইরে ফেলে দেন অনায়াসে।
ভারতীয় দলের পাঁচ নম্বরে নিজের জায়গা প্রায় পাকা করে ফেলেছেন কেকেআর তারকা। এ বার তাঁর লক্ষ্য বিশ্বকাপের বিমানেও উঠে পড়া। ইদানীং যেমন ব্যাটিং করছেন রিঙ্কু, তাতে তাঁকে বাদ দেওয়ার সাহস নির্বাচকেরা দেখাবেন কি? প্রশ্ন এখন সেটাই। কিন্তু রিঙ্কুর ব্যাট যে দলকে ক্রমাগত নির্ভরতা যুগিয়ে যাচ্ছে, ভারতের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার পর এ বার দক্ষিণ আফ্রিকাতেও দেখা যাচ্ছে।
সাধারণত সূর্যের দলের পাঁচ নম্বরে নামেন যে ব্যাটার, তিনি খুব বেশি বল খেলার সুযোগ পান না। কিন্তু মঙ্গলবার ছিল অন্য এক দিন। রিঙ্কুকে ব্যাট দোলাতে দোলাতে নামতে দেখা গেল, খেলার বয়স তখন মাত্র ৫ ওভার। অর্থাৎ, দল ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে। সেই পরিস্থিতিতে নেমেও রিঙ্কু খেললেন সাবলীল ভাবে। প্রথমে সূর্যকে সহায়তা দিয়ে গড়লেন বড় রানের জুটি। সূর্য ফিরতেই স্বমূর্তি ধরলেন কেকেআর তারকা।
ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যাটারের জাত চেনা যায় কঠিন পরিস্থিতিতে। ঠিক যেমন, মঙ্গলবার রিঙ্কু নেমেছিলেন ম্যাচের পঞ্চম ওভার শেষ হওয়ার আগেই। বোলাররা আত্মবিশ্বাসে টগবগ করে ফুটছেন। রিঙ্কু কিন্তু নিজের স্বাভাবিক খেলা বদলে ফেললেন মুহূর্তের মধ্যে। তুলে মারা নয়, জুটি গড়তে যা যা করার দরকার, কেকেআর তারকা তা-ই করে গেলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy