The Challenges Aditya L-1 mission has to face while getting to its Final Halo orbit dgtl
Aditya L-1 Mission
সূর্যের ‘চৌকাঠপুর’-এ পৃথিবীর মহাকাশযান, কী কী বিপদ অপেক্ষা করে রয়েছে সেখানে?
দরজা খোলা একটি ঘরের চৌকাঠে দাঁড়িয়ে দেখা যায় ঘরের ভিতরের পুরো অংশটাই। অথচ চৌকাঠের বাইরে থাকলে পুরোটা দেখা যায় না। এই বিষয়টিও তেমনই। ‘ল্যাঙ্গরেঞ্জ পয়েন্ট’ হল সূর্যের সেই ‘চৌকাঠ’।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৯:১০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
সূর্যের বাড়ির ‘চৌকাঠ’-এ পা রাখার অপেক্ষায় ভারতের সৌর অভিযান আদিত্য এল ওয়ান।
০২১৮
আগামী ৬ জানুয়ারি, নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহেই এই সৌর অভিযান পৌঁছে যাবে সূর্যের ‘চৌকাঠ’ ‘ল্যাঙ্গরেঞ্জ ওয়ান পয়েন্ট’-এ।
০৩১৮
এই ‘ল্যাঙ্গরেঞ্জ পয়েন্ট’ই হল আদিত্য এল ওয়ান অভিযানের শেষ পর্ব। এখান থেকেই সূর্যকে পর্যবেক্ষণ করবে ভারতের প্রথম সৌর পর্যবেক্ষণ অভিযান আদিত্য এল ওয়ানের মহাকাশ যান।
০৪১৮
‘ল্যাঙ্গরেঞ্জ পয়েন্ট ওয়ান’কে সূর্যের বাড়ির ‘চৌকাঠ’ বলার কারণ একটাই। এই ‘ল্যাঙ্গরেঞ্জ পয়েন্ট ওয়ান’ থেকে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে কোনও প্রতিকূলতা ছাড়াই সূর্যকে ঝকঝকে স্পষ্ট দেখা যায়। আহরণ করা যায় সূর্যের আবহাওয়া, সূর্যের চৌম্বকক্ষেত্র, সৌরঝড়, পৃথিবীতে তার প্রভাব, এই সব কিছু সম্পর্কে তথ্য।
০৫১৮
দরজা খোলা একটি ঘরের চৌকাঠে দাঁড়িয়ে দেখা যায় ঘরের ভিতরের পুরো অংশটাই। অথচ চৌকাঠের বাইরে থাকলে পুরোটা দেখা যায় না। এই বিষয়টিও তেমনই। ‘ল্যাঙ্গরেঞ্জ পয়েন্ট’ হল সূর্যের সেই ‘চৌকাঠ’। যেখানে পৃথিবী এবং সূর্য দু’য়েরই প্রভাব সমান সমান।
০৬১৮
আবার এ-ও বলা যেতে পারে যে, এই ‘চৌকাঠ’-এ সূর্য বা পৃথিবীর কারও কোনও প্রভাব নেই। সূর্যের আওতায় ঢোকার আগের এই এলাকাটিকে বলা হয় ‘হ্যালো অরবিট’।
০৭১৮
‘হ্যালো’ অর্থাৎ বলয়। এই সৌরবলয়ের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়েই সূর্যকে দেখবে আদিত্য এল ওয়ান। তবে সূর্যের এত কাছে আসার বিপদও আছে অনেক। ইসরোর তরফেই জানানো হয়েছে, এই ‘এল ওয়ান পয়েন্ট’-এ প্রবেশ এই অভিযানের সবচেয়ে বিপজ্জনক পর্ব।
০৮১৮
এই পর্বে প্রতি পদে সতর্ক থাকতে হবে ইসরোকে। ইসরোর প্রধান এস সোমানাথ জানিয়েছেন, পৃথিবীকে ঘিরে চার পাক ঘোরার পর সূর্যের অভিমুখে ১৫ লক্ষ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে এসেছে আদিত্য এল ওয়ান।
০৯১৮
গত সেপ্টেম্বরে শ্রীহরিকোটা থেকে মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল ইসরোর আদিত্য এল ওয়ান। চার মাস পরে সূর্যের ‘ল্যাঙ্গরেঞ্জ ওয়ান পয়েন্ট’-এ পৌঁছবে সে। এত দিনের পরিশ্রম যাতে জলে না যায়, সে জন্যই বাড়তি সতর্কতা।
১০১৮
সূর্যের ‘ল্যাঙ্গরেঞ্জ পয়েন্ট’-এ ঢোকার আগে অত্যন্ত নিখুঁত দিক নির্দেশ দরকার আদিত্য এল ওয়ানের। সেই সঙ্গে দরকার সেই নির্দিষ্ট অভিমুখে যাত্রার জন্য ভুলচুকহীন নিয়ন্ত্রণও।
১১১৮
একটু এ দিক থেকে ও দিক হলেই নাগালের বাইরে চলে যেতে সৌর বলয়ের ‘দরজা’ বা তার চৌকাঠপুর। তাই এই পর্বে প্রতি মুহূর্তের জন্য আগাম পরিকল্পনা করে রাখতে হবে ইসরোর বিজ্ঞানীদের।
১২১৮
কষতে হবে আগাম বিপদের অঙ্কও। বুঝেশুনে ফেলতে হবে প্রতি পদক্ষেপ। যাতে কোনও ভাবেই আদিত্য এল ওয়ান তার জন্য এঁকে দেওয়া কক্ষপথ থেকে চ্যুত না হয়। যাতে বজায় থাকে তার অঙ্ক কষে বার করা নির্দিষ্ট গতিবেগ। তা না হলেই গুলিয়ে যাবে হিসাব। যখন যেখানে থাকার কথা সেখানে থাকতে পারবে না সৌরযান। ভ্রষ্ট হবে লক্ষ্য।
১৩১৮
আদিত্য এল ওয়ানের ভিতরে অবশ্য তার অবস্থান আর গতিবেগ ঠিক রাখার যন্ত্র আছে। সঙ্গে আছে সূর্যের করোনায় বিস্ফোরণ এবং আন্তঃগ্রহ চৌম্বক ক্ষেত্র মাপার যন্ত্রপাতিও। এ ছাড়াও আছে সৌর বিকিরণ মাপার করোনাগ্রাফ এবং সূর্যের অতিবেগনি রশ্মির ছবি তোলার টেলিস্কোপ।
১৪১৮
সূর্যের চৌকাঠে দাঁড়ালে সূর্য থেকে ছিটকে আসা বিকিরণে এই সমস্ত যন্ত্র বিকল হওয়ার সম্ভাবনাও থাকবে। তাই সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে হবে ইসরোকে।
১৫১৮
সূর্যের ‘ল্যাঙ্গরেঞ্জ পয়েন্ট’-এর আরও একটি অসুবিধা হল এই ‘ল্যাঙ্গরেঞ্জ পয়েন্ট’ নিজে বড়ই অস্থির।
১৬১৮
তাই সূর্যের চৌকাঠপুরে স্রেফ থাকার জন্যও প্রতি মুহূর্তে তাল মিলিয়ে চলতে হবে এই অস্থির ‘ল্যাঙ্গরেঞ্জ পয়েন্ট’-এর সঙ্গে।
১৭১৮
পৃথিবীর আকর্ষণ ক্ষেত্রের টান সামলাতে তো হবেই, সেই সঙ্গে থাকবে অন্যান্য মহাজাগতিক বস্তুর আকর্ষণ-বিকর্ষণজনিত ঝুঁকিও।
১৮১৮
প্রতি মুহূর্তে কক্ষচ্যুত হওয়ার সেই ঝুঁকি কাটিয়ে উঠতে পারলেই সফল হবে সূর্যের পথে ইসরোর এই প্রথম অভিযান। আদিত্য এল ওয়ানে সওয়ার হয়ে ইতিহাস গড়বে ইসরোও।