এর মধ্যেই প্রবেশ আব্রার-রূপী ববির। মাথায় সুরাপাত্র রেখে শুরু করলেন গানের তালে নাচ। এই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করে সমাজমাধ্যমে আপলোডের এমন হিড়িক পড়ে যায় যে, ছবির প্রযোজক সংস্থা সিদ্ধান্ত নেয় ছবিতে ববির কিছু ক্লিপিং-সহ গানটিকে আলাদা করে আপলোড করার। কারণ, ছবির টিজ়ার বা ট্রেলারে গানটির কোনও ঝলক দেখা যায়নি। বলা ভাল, খানিকটা গণদাবি মেনেই গানটিকে আপলোড করেন প্রযোজনা সংস্থার কর্তৃপক্ষ।
‘অ্যানিম্যাল’ ছবিতে ‘জামাল কুদু’কে একটি বিয়ের আসরে শোনা গিয়েছিল। সত্যিই এটি বিয়ের গান। ছবিতে যাঁরা সমবেত কণ্ঠে গানটি গেয়েছেন, তাঁদের নাম— সৌনিক, হর্ষিতা, কীর্তনা, ভাগদেবী, মেঘনা নাইডু, সাবিনা, ঐশ্বর্যা দাসারি অভীক্ষা এবং শেহনাজ়। ইরানের পরম্পরাগত সুরের সঙ্গে ছবির ভার্সনটিতে যুক্ত হয়েছে সাম্প্রতিক সময়ের রিদম। সব মিলিয়ে এটি হয়ে উঠেছে এক উৎসবের উদ্যাপন-সঙ্গীত।
এক্স (সাবেক টুইটার’)-এ ‘ববিউড’ নামে একটি পেজ রয়েছে। সেখানে ববি দেওলকে নিয়ে বিভিন্ন মাত্রার রসিকতা হয়েই থাকে। সেখানেই হিন্দি ছবির একাংশের দর্শকের বক্তব্য, ববি নাকি অধিকাংশ ছবিতেই এমন সব চরিত্রে অভিনয় করেন, যাদের মাথামুন্ডু বোঝা দায়। আর সে সব নিয়ে ববির নিজের কোনও হেলদোল নেই। তিনি অনায়াস ভঙ্গিমায় সেই সব আজগুবি চরিত্রে অভিনয় চালিয়ে যান। এই ‘কিছুতেই কিছু যায়-আসে না’ মানসিকতার কারণেই তাঁকে ‘লর্ড’ আখ্যা দেওয়া হয়। সমাজমাধ্যমের পাতায় নিয়মিত প্রকাশ পায় ‘লর্ড ববি মিম সিরিজ়’। ‘অ্যানিম্যাল’-এ এক নির্বাক চরিত্রে অভনয় করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ববি। তবে এ বার আর ব্যঙ্গ নয়, ‘লর্ড’ উপাধিটি অভিনেতার নামের আগে বসছে বেশ সম্ভ্রমের সঙ্গেই।
‘লর্ড ববি’র পরেই যিনি শিরোনামে উঠে এসেছেন ‘জামাল কুদু’ সূত্রে, তিনি ওই গানের দৃশ্যায়নে উপস্থিত এক সুন্দরী। হাস্যময়ীর চেহারাই বলে দিচ্ছে, তিনি ভারতীয় নন। খোঁজ খবর করে জানা যাচ্ছে, তিনি ইরানেরই কন্যা। নাম, তানাজ় দাভুদি। পেশায় মডেল এবং নৃত্যশিল্পী তানাজ় সামান্য কয়েক মুহূর্তের উপস্থিতিতেই নজর কেড়েছেন। আপাতত তাঁকে নিয়েও উদ্বেল নেটমাধ্যম।
‘জামাল কুদু’ নিয়ে বলিউডে আলোচনা আবার সম্পূর্ণ অন্য এক কারণে। এর আগে এই গান কোনও বলি-ছবিতে ব্যবহৃত হয়নি। কিন্তু বলিউডের এক কালের শিহরন জাগানো অভিনেত্রী মুমতাজ়ের সঙ্গে এই গানের এক নিবিড় যোগের কথা জানালেন অভিনেত্রীর বোনঝি শেহনাজ় রণধাওয়া। জানা গিয়েছে, যে কয়্যার গ্রুপ এই গানটি ছবির জন্য গেয়েছে, তার অন্যতম সদস্য শেহনাজ়।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে শেহনাজ় জানিয়েছেন, মুমতাজ়ের মা নাকি এই গানটি গাইতেন। অবশ্যই তাঁর কণ্ঠে যা শোনা যেত, সেটি ‘জামাল কুদু’র পরম্পরাগত সংষ্করণ। ফলে তাঁর কাছে এই গান মোটেই ‘নতুন’ ঠেকেনি। উল্লেখ্য, মুমতাজ়ের মা শাদি হবিব আগা ইরানেরই ভূমিকন্যা। শাদির কনিষ্ঠা কন্যা মল্লিকা বিয়ে করেন এক কালের খ্যাতনামী কুস্তিগির ও অভিনেতা দারা সিংহের ছোট ভাই রণধাওয়াকে। শেহনাজ় তাঁদেরই মেয়ে।
অন্য দিকে আবার এমন কথাও শোনা যাচ্ছে যে, ‘জামাল কুদু’র যে সংস্করণটি ‘অ্যানিম্যাল’-এ গাওয়া হয়েছে, সেটি নাকি আসল গানটি নয়। ইরানের আধুনিক কবি বিজান সামান্দার (১৯৪১-২০১৯) পরম্পরাগত গানটিকে নতুন রূপ দেন। কবি বিজান নামকরা সঙ্গীতজ্ঞও ছিলেন। বিপ্লব পূর্ববর্তী ইরানের সঙ্গীতজগতে তিনি বেশ সক্রিয় গায়ক ও তার (ইরানি বাদ্যযন্ত্র)-বাদকও ছিলেন। আপাতত ‘অ্যানিম্যাল’-এর কল্যাণে বিজানও উঠে এসেছেন আলোচনায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy