This man is Ratan tata’s own brother, do you know him dgtl
photo gallery
Jimmy Naval Tata: থাকেন মুম্বইয়ে দু’কামরার ফ্ল্যাটে, সঙ্গী বই আর টিভি, ইনি রতন টাটার সহোদর
এক দিকে যখন দাদা রতনকে নিয়ে নিউজপ্রিন্টের পাতার পর পাতা খরচ হয়েছে। চ্যানেলগুলি ব্যয় করেছে মূল্যবান সময়, তখন জিমির দিকে ফিরেও তাকাননি কেউ।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২২ ১৫:১১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
টাটার রাজত্বের ইনিও এক রাজপুত্র। তবে রাজপাটে আগ্রহ নেই। এঁর সারা দিন কাটে দু’কামরার এক ফ্ল্যাটে। সঙ্গী বলতে একটি টিভি আর দেওয়াল ঠাসা বই।
০২১৫
মুম্বইয়ের কোলাবার হ্যাম্পটন কোর্টর ছ’তলার ছোট ফ্ল্যাটটিই তাঁর ‘রাজপ্রাসাদ’। তবে সেখানে সবার প্রবেশাধিকার নেই। বাছাই করা পরিচিতরাই তাঁর সঙ্গ লাভের অনুমতি পান। তাঁর খোঁজ পেতে চাওয়া সাংবাদিকরাও পাত্তা পান না।
০৩১৫
ফোন করে আগাম অ্যাপয়েন্টমেন্ট চাওয়ারও উপায় নেই। কারণ ফোনই তো নেই। মোবাইল ব্যবহার করেন না তিনি। তা বলে তাঁকে জগতের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন বলা যাবে না। টাটা গোষ্ঠীর কোথায় কখন কী হচ্ছে সব তাঁর নখদর্পণে। বেচাল দেখলেই ব্যবস্থা নেন। কড়া ভাষায় চিঠি লিখে জবাব তলব করেন। তবে সে সব চিঠির জবাব এল কি না সে ভাবে তার খেয়াল রাখেন না।
০৪১৫
ইনি টাটা গোষ্ঠীর বন্দিত প্রাক্তন চেয়ারম্যান রতন নাভাল টাটার সহোদর। নাম জিমি নাভাল টাটা।
০৫১৫
জিমি টাটা গোষ্ঠীর অন্যতম অংশীদার। বাবা নাভাল টাটার সূত্রেই বংশানুক্রমে তাঁর অংশীদারিত্ব রয়েছে টাটা মোটরস, টাটা স্টিল, টাটা এয়ারলাইন্সের মতো টাটার একাধিক সংস্থায়। কিন্তু জিমিকে কখনও এর মধ্যে একটি সংস্থারও দফতরে দেখেননি কেউ।
০৬১৫
অথচ রতন টাটার থেকে বয়সে দু’বছরের ছোট জিমি তাঁর কেরিয়ার শুরু করেছিলেন টাটা গোষ্ঠীতেই। এক দিকে রতন যখন জেআরডি টাটার অধীনে কাজ করছেন, তখন জিমিকে হাতে ধরে কাজ শিখিয়েছিলেন বাবা নাভাল টাটা। তাঁর অধীনেই টাটা গোষ্ঠীর কাপড়ের ব্যবসার ভার নিয়েছিলেন জিমি। কিন্তু সেই ব্যবসা কিছু দিনের মধ্যে তলিয়ে যায়।
০৭১৫
দাদা রতনের মতোই লম্বা দোহরা চেহারা। রতনের মতোই অকৃতদার জিমি। এমনকি তাঁর স্বাক্ষরটিও কিছুটা রতন টাটার মতোই। তবে মিল বলতে এটুকুই। রতনের জ্বলজ্বলে প্রদীপের নীচের ছায়া থেকে বের হতেই পারেননি তিনি।
০৮১৫
এক দিকে যখন দাদা রতনকে নিয়ে নিউজপ্রিন্টের পাতার পর পাতা খরচ হয়েছে। টিভি চ্যানেলগুলি ব্যয় করেছে মূল্যবান সময়, তখন জিমির দিকে ফিরেও তাকাননি কেউ। হয়তো রতনের আপন সহোদর বলেই তাঁর ছায়ার ভাগও বেশি। কেন না রতনের আর এক ভাই নোয়েল টাটাকে অনেকেই চেনেন। তিনি টাইটানের ভাইস চেয়ারম্যান। এমনকি টাটার বিনিয়োগ সংস্থার প্রধানও।
০৯১৫
তবে নোয়েল রতনের সৎ ভাই। নাভাল টাটার দ্বিতীয় স্ত্রী সিমোন টাটার সন্তান। রতন আর জিমির মায়ের নাম সুনু। তিনি ছিলেন নাভালের প্রথম স্ত্রী। যাঁর সঙ্গে ১৯৪৮ সালে বিচ্ছেদ হয় নাভালের। রতনের বয়স তখন ১০। জিমি ৮।
১০১৫
টাটা পরিবারের ইতিহাস বলছে এর পর রতনের লালন পালনের দায়িত্ব নিয়েছিলেন তাঁর ঠাকুমা নাভাজবাই টাটা। তবে জিমি তাঁর বাবার দ্বিতীয় বিয়ের সংসারেই ছিলেন কি না তা জানা যায় না। আসলে জিমি কখনওই নিজের কথা কাউকে জানাতে চাননি। আড়ালেই থাকতে চেয়েছেন বরাবর।
১১১৫
বছর কয়েক আগে এক সাংবাদিক খোঁজ নিতে গিয়েছিলেন জিমির। বহু বার নানা ভাবে তাঁর পরিচয়পত্র যাচাই করার পরই তাঁকে ঘরে ঢোকার অনুমতি দেন জিমি। জিমির ঘরের বর্ণনা দিয়ে ওই সাংবাদিক লিখেছিলেন, ‘ফাইল, স্যুটকেশ আর বই জড়ো করা চারপাশে। ঘরে একটি টিভি আছে। সেটি একটুকরো কাপড় দিয়ে ঢাকা দেওয়া।’
১২১৫
জিমি যে টাটা গোষ্ঠীর খবর রাখেন তা প্রকাশিত হয়েছিল ওই রিপোর্টেই। সে সময় সাইরাস মিস্ত্রির সঙ্গে টাটা গোষ্ঠীর গোলমাল চলছিল। সাংবাদিক জিমিকে প্রশ্ন করেছিলেন, টাটা গোষ্ঠীত আপনার যে বিপুল অংশীদারি তা আপনার পর কাকে দিয়ে যাবেন?
১৩১৫
জবাবে একটু থেমে জিমি জানিয়েছিলেন, ‘‘কাউকে দিয়ে যাব না। ওই সম্পত্তিও ওরা নিজেরাই টানাটানি করে ঝগড়া করে ভাগ করে নেবে। এখন যেমন করছে।’’
১৪১৫
এমন আপনভোলা নিজেকে আড়ালে রাখতে চাওয়া মানুষটাকে হঠাৎই খবরে এনে দিলেন হর্ষ গোয়েঙ্কা। টুইটারে জিমির একটি ছবি দিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘ইনি রতন টাটার ভাই জিমি টাটা। দারুণ স্কোয়াশ খেলেন। যত বার ওঁর সঙ্গে খেলেছি, তত বারই হারিয়ে দিয়েছেন আমায়। তবে টাটার অন্য পুত্রদের মতো এঁর ব্যবসায় আগ্রহ নেই। মুম্বইয়ের কোলাবার একটি দু’কামরার ফ্ল্যাটে নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত থাকেন।’
১৫১৫
কোলাবায় থাকেন রতন টাটাও। তাঁর বাড়ি থেকে দেখা যায় আরব সাগর। ছোট্ট সাদা সেই বাংলোয় আলিশান ব্যবস্থা। তবে কয়েক মাইল দূরে তাঁর ভাই জিমির ফ্ল্যাটটিকে পাশাপাশি রাখলে রতনের আলোর নীচে ছায়ার মতোই লাগে ছোটরাজপুত্রের রাজপ্রাসাদ।