Advertisement
১৫ জুন ২০২৪
Mass Extinction

6th Mass Extinction: শেষের সে দিন দূরে নেই, পৃথিবীতে শুরু হয়েছে ষষ্ঠ গণবিলুপ্তির পর্ব, হুঁশিয়ারি গবেষণায়

সাড়ে ছয় কোটি বছর আগে ক্রেটাসিয়াস যুগের পর প্রাণের গণহারে বিলুপ্তির ষষ্ঠ পর্যায় শুরু হয়ে গিয়েছে খুব কম করে হলেও, ৭০০ বছর আগে।

পৃথিবীর চেনা, জানা ২০ লক্ষ প্রাণী ও উদ্ভিদের সাড়ে সাত থেকে ১৩ শতাংশই ইতিমধ্যেই গণহারে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। -ফাইল ছবি।

পৃথিবীর চেনা, জানা ২০ লক্ষ প্রাণী ও উদ্ভিদের সাড়ে সাত থেকে ১৩ শতাংশই ইতিমধ্যেই গণহারে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। -ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২২ ১৪:৫২
Share: Save:

আর আসছে, আসবে নয়। ভয়ঙ্কর সর্বনাশের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে পৃথিবীতে। শুরু হয়ে গিয়েছে প্রাণের গণবিলুপ্তির সময়।

সাড়ে ছয় কোটি বছর আগে ক্রেটাসিয়াস যুগের পর প্রাণের গণহারে বিলুপ্তির ষষ্ঠ পর্যায় শুরু হয়ে গিয়েছে খুব কম করে হলেও, ৭০০ বছর আগে। ১৫০০ শতাব্দী থেকেই।

পৃথিবীর চেনা, জানা ২০ লক্ষ প্রাণী ও উদ্ভিদের সাড়ে সাত থেকে ১৩ শতাংশই ইতিমধ্যেই গণহারে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। পৃথিবী থেকে হারিয়ে গিয়েছে চিরতরে। যে ভাবে হারিয়ে গিয়েছে ডাইনোসররা। হারিয়ে গিয়েছে আরও অসংখ্য প্রাগৈতিহাসিক প্রাণী ও উদ্ভিদ। যে হারে স্তন্যপায়ী, পাখি ও উভচররা হারিয়ে যাচ্ছে তাদের চেয়ে অনেক বেশি হারে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে পৃথিবীর অমেরুদণ্ডী প্রাণী। যারা পৃথিবীর জীববৈচিত্র্যের মোট প্রাণীর ৯৭ শতাংশ।

সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় এই উদ্বেগজনক তথ্য বেরিয়ে এসেছে। গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক জীববিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘বায়োলজিক্যাল রিভিউজ’-এ। গত সোমবার।

পৃথিবীতে শেষবার প্রাণের গণবিলুপ্তি ঘটেছিল সাড়ে ছয় কোটি বছর আগে। ক্রেটাসিয়াস যুগের প্রায় শেষ পর্যায়ে। পৃথিবীর পঞ্চম গণবিলুপ্তির সেই অধ্যায়টি ‘ক্রেটাসিয়াস-টার্সিয়ারি যুগ’ নামে সুপরিচিত। ওই সময়েই পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়েছিল ডাইনোসর-সহ বহু প্রাগৈতিহাসিক প্রাণী ও উদ্ভিদ। পৃথিবীতে গণবিলুপ্তির পর্যায়গুলির মধ্যে দ্রুততম পর্ব ছিল সেই ষষ্ঠ গণবিলুপ্তির সময়। মাত্র ২৫ লক্ষ বছরের মধ্যেই পৃথিবীর যাবতীয় প্রাণের গণবিলুপ্তি ঘটেছিল ওই সময়।

গবেষণাপত্রটি জানিয়েছে, পৃথিবী থেকে প্রাণী ও উদ্ভিদের বিলুপ্তি নিয়ে ‘দ্য ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন)’ যে লাল তালিকা (রেড লিস্ট) প্রকাশ করেছে, তাতে পৃথিবীর ষষ্ঠ গণবিলুপ্তির প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার ছবিটা স্পষ্ট হয়ে ওঠেনি। তালিকায় স্তন্যপায়ী, পাখি, উভচররা বেশি প্রাধান্য পাওয়ায়। আর অমেরুদণ্ডী প্রাণীদের সেই তালিকায় ততটা হিসাবের মধ্যে না ধরায়। আইইউসিএন-এর হিসাবে পৃথিবীর প্রাণের ৪০ হাজার প্রজাতির প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার মুখে। এদের মধ্যে ৪১ শতাংশ উভচর, ২৬ শতাংশ স্তন্যপায়ী, ১৩ শতাংশ পাখি, ৩৭ শতাংশ হাঙর ও ২১ শতাংশ সরীসৃপ।

গবেষকদের বক্তব্য, আইইউসিএন-এর লাল তালিকায় থাকা বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া ও বিপদাপন্ন প্রাণীদের পরিসংখ্যানে অমেরুদণ্ডী প্রাণীদের ততটা হিসাবের মধ্যে ধরা হয়নি। তা ধরা হলে গত ৭০০ বছরে পৃথিবীর তাবৎ জীববৈচিত্র্যের অনেক বেশি সংখ্যক প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। যাদের মধ্যে অমেরুদণ্ডীরা সংখ্যায় অনেক বেশি। যদিও এই অমেরুদণ্ডীরা পার্থিব জীববৈচিত্র্যের অনেকটা অংশ জুড়ে রয়েছে প্রজাতির সংখ্যায়, পরিমাণে।

আইইউসিএন-এর লাল তালিকা অনুযায়ী, গত ৭০০ বছরে (১৫০০ শতাব্দী থেকে) স্তন্যপায়ী ও পাখিদের বহু প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। যা মোট প্রাণের দেড় শতাংশ।

গবেষকদের বক্তব্য, অমেরুদণ্ডীদের হিসাবে ধরলে এই হার অনেক বেশি। অন্তত সাড়ে সাত থেকে ১৩ শতাংশ। যা প্রমাণ করছে ৭০০ বছর আগেই পৃথিবীতে ষষ্ঠ গণবিলুপ্তির পর্যায় শুরু হয়ে গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mass Extinction
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE