মজা: জয়ের পরে হালকা মেজাজে রাসেল, কুলদীপ। নিজস্ব চিত্র
সোমবার ইডেনে কালবৈশাখী আসেনি। তবে দু’জনের ব্যাটের ঝড়ে উড়ে গেল গোটা একটা দল।
আন্দ্রে রাসেল ও নীতীশ রানা। প্রথম জনের স্ট্রাইক রেট ৩৪১। আর দ্বিতীয় জনের ১৬৮।
সাত বছরের চেনা ইডেনে অচেনা কলকাতা নাইট রাইডার্সের কাছে বিশ্রী হারের পরে গৌতম গম্ভীর বললেন বটে, রাসেলই তাঁদের কাছ থেকে জয় ছিনিয়ে নিলেন। কিন্তু তাঁর নিজের শহরের যে ছেলেটি ক্যারিবিয়ান দৈত্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চারটে ছক্কা হাঁকিয়ে গেলেন, সেই নীতীশ রানা যে এই জয়ের আর এক নায়ক, এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
কেকেআর দুশো রান তোলার পর থেকেই জয়ের উচ্ছ্বাসের জন্য তৈরি হচ্ছিল ইডেন গ্যালারি। দশ ওভারের মধ্যে দিল্লির পাঁচ উইকেট পড়ে যাওয়ার পরে নাইটদের ডাগ আউটেও একই ছবি। জয়ের চিত্রনাট্য আগেই তৈরি হয়ে গিয়েছিল যে। তাই জয়ের পরেও উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়া নয়, পরপর জোড়া হারের পরে জয় আসায় তৃপ্তিই বেশি নাইটদের শিবিরে। নতুন উদ্যমে জয়পুর রওনা হওয়ার জন্য এ বার তৈরি হচ্ছেন দীনেশ কার্তিকরা।
ম্যাচের পরে যখন সাংবাদিকদের সামনে এলেন নীতীশ, তখন তাঁকেও বেশ নিশ্চিন্ত লাগছিল। সেই নীতীশ, যাঁকে ঘরোয়া ক্রিকেটে দিল্লির হয়ে খেলানোর জন্য গৌতম গম্ভীর দলের অনেকের সঙ্গে ঝগড়া পর্যন্ত করেছেন। সোমবার ইডেনে সেই গম্ভীরের দলকে হারাতে ব্যাটে ঝড় তুললেন দিল্লিরই ২৪ বছর বয়সি ছেলেটি।
আইপিএল এমনই কঠোর, নির্মম। জয়ের পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নীতীশকে তা আর একবার মনে করিয়ে দিতে তিনি বললেন, ‘‘এটা গোতি ভাইয়ের দল না অন্য কারও দল, তা মাথায় ছিল না। নিজের দলকে জেতানোর জন্য যা করার, তা-ই করেছি। এখানে আবেগের কোনও জায়গা নেই।’’
আধ ডজন ছয় হাঁকানোর পরে আন্দ্রে রাসেলকে টিভিতে বলতে শোনা যায়, ‘‘বড় মঞ্চই আমার পছন্দ। উইকেটটা আজ ভাল পেয়েছিলাম। রীতিমতো উপভোগ করার মতো পরিবেশ। ভেবেই নেমেছিলাম যে ক্রিজে গিয়ে দু’টো বল বুঝে নিয়ে নিজের কাজটা যথাসম্ভব দ্রুত সেরে ফিরে আসব। বেশি সময় নেব না। ক্রিস গেল আমার আদর্শ। ওর চেয়েও জোরে ছয় মারতে চাই। ও এই ব্যাপারে অনবদ্য। জানি না সেটা কবে পারব। তবে আজকের সেরা ছয়টা ওকে উৎসর্গ করলাম।’’
এক দিকে নীতীশ ক্রিজ আঁকড়ে পড়ে থাকবেন আর চালাবেন, অন্য দিক থেকে রাসেল ঝড় বইয়ে দেবেন, নাইট শিবিরে সোমবার এই পরিকল্পনা ছিল বলে জানালেন দিল্লির অলরাউন্ডারটি। বলেন, ‘‘গত দু’টো ম্যাচে এই পরিকল্পনাই ঠিকমতো কাজে লাগাতে পারিনি। আজ পেরেছি। স্পিনারদের বিরুদ্ধে ভাল খেলি আমি। তাই ওদের জন্যই অপেক্ষা করেছিলাম। আর রাসেল শামিকে পেটাল।’’
দু’টো হারের পর সোমবারের ম্যাচে যে বাড়তি চাপ ছিল, তা স্বীকার করে নিয়ে নীতীশ বলেন, ‘‘আজকে বাড়তি চাপ ছিল ঠিকই। তবে চাপের মুখেই আমার খেলা খোলে। চাপের মুখে খেলতে মজাও পাই।’’
জয়ে ফিরে নাইট অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক বললেন, ‘‘দিনটা ভাল গেলে সবই ঠিক হয়। আজ সে রকমই দিন। অধিনায়ক হিসেবে গর্ব করার মতো জয়। আজ সব কৌশলই কাজে লেগে গিয়েছে। এটাই চেয়েছিলাম। আশা করি পরের ম্যাচগুলোতেও এ রকমই খেলতে পারব আমরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy