উৎসব: কমনওয়েলথে সোনা জিতে সতীশ। ছবি: পিটিআই।
মণিপুরের মহিলা শক্তির নতুন দূত হয়ে দুই চানু-র সোনা জেতার চমকপ্রদ উত্থানের পর ভারোত্তোলনে শনিবার আরও দুটো সোনা পেল ভারত। এ বার দুই দক্ষিণী যুবকের সৌজন্যে।
৭৭ কেজি বিভাগে তামিলনাড়ুর সতীশ শিবলিঙ্গন এবং ৮৫ কেজি বিভাগে সোনা জয়ী অন্ধ্রপ্রদেশের ভেঙ্কট রাহুল রেগালা-র মধ্যে প্রচুর মিল রয়েছে। দু’জনেই উঠে এসেছেন খেলাধুলো করা পরিবার থেকে। সতীশের বাবা জাতীয় স্তরে ভারোত্তোলক ছিলেন। সোনাও জিতেছিলেন। আর ভেলোরের ছেলে রাহুলের বাবা কবাডি খেলতেন রাজ্য দলে। তাঁর ভাই-ও ভারতের হয়ে যুব কমনওয়েলথের ভারোত্তোলনে সোনা জিতেছেন।
আরও একটা বিষয়ে ভারতের এই দুই সোনার ছেলে ভারোত্তোলকের মধ্যে মিল আছে তা হল, দু’জনেই চোট নিয়ে নেমেছিলেন। এবং আশা করেননি সোনা জিতবেন। ‘‘আমি এখনও গোড়ালির ব্যথায় ভুগছি। সেটা এখনও সারেনি। কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপের সময় থেকেই ওটা ভোগাচ্ছে। আমি তো সে ভাবে অনুশীলনই করতে পারিনি। পদক পাব ভাবিনি,’’ বিজয় স্তম্ভে থেকে নেমে একুশ বছরের রাহুল অকপট। মোট ৩৩৮ কেজি ওজন তুলে সেরা হওয়ার সময় তাঁর মাথায় লাগানো ছিল মায়ের অ্যাঙ্কলেট (গোড়ালিতে যা পরে ব্যথা কমানো হয়)। পুরস্কার দেওয়ার মঞ্চ থেকে নামার পর রাহুল বলছিলেন, ‘‘দু’বছর আগে মা মারা যাওয়ার পর থেকেই ওটা মাথায় পরে নামি আমি। এটা আমাকে উদ্বুদ্ধ করে।’’
রাহুলের ঘণ্টা খানেক আগে অস্ট্রেলিয়ার গোল কোস্টে সোনা জিতে তামিল যুবক সতীশ বলছিলেন, ‘‘পদক পাব ভেবে এখানে আসিনি। কারণ গত বছর জাতীয় প্রতিযোগিতার সময় উরু-র পেশিতে চোট পেয়েছিলাম। এখনও সেটা ভোগাচ্ছে। সে ভাবে অনুশীলন করতে পারিনি।’’ বলছিলেন খেলাধুলার পরিবেশে বেড়ে ওঠা দক্ষিণী ভারোত্তোলক। ‘‘এখানে নামার আগে অনুশীলনে ক্লিন অ্যান্ড জার্কে ওজন তোলার সময় ব্যথা হচ্ছিল। ভেবেছিলাম আজ নামব না। কিন্তু মাঠের বাইরে বসে থাকাটা আমার কাছে হত আরও যন্ত্রণার। আমার শরীর তৈরিও ছিল না। কী ভাবে পদক জয়ের আশা করব? সোনা পেয়ে নিজেকে তাই ভাগ্যবান মনে হচ্ছে।’’ গত বছর গ্লাসগো কমনওয়েলথ গেমসে সোনা জিতেছিলেন সতীশ। তুলেছিলেন ৩২৮ কেজি। এ দিন তুলেছেন ৩১৭ কেজি।
সতীশ এবং রাহুল দু’জনেই আরও বেশি কৃতিত্ব পাবেন এ জন্যই যে, চোট থাকা সত্ত্বেও কোনও ফিজিও-র সাহায্য পাননি। ভরোত্তোলনে এত সাফল্য সত্ত্বেও কোনও ফিজিও-কে দলের সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি ইন্ডিয়ান অলিম্পিক্স অ্যাসোসিয়েশন। অথচ যা খুব জরুরি ছিল। শাস্তির ভয়ে চানুরা বা এ দিনের পদক জেতা দুই ছেলে কেউই হইচই করতে নারাজ। ভারোত্তোলক দলের চিফ কোচ বিজয় শর্মাও এ নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ। ফোনে অস্ট্রেলিয়া থেকে বলে দিলেন, ‘‘সবাই মিলে সমস্যাটা মিটিয়ে নিয়েছে। ফলই তার প্রমাণ।’’ ভারত ভারোত্তোলন থেকে চারটি সোনা ছাড়াও পেয়েছে একটি রুপো ও ব্রোঞ্জ।
ভারোত্তোলনের পদক জয়ের পাশাপাশি ভারতীয় ব্যাডমিন্টন দল সেমিফাইনালে উঠেছে। সাইনা নেহওয়ালরা ৩-০ হারালেন মরিসাসকে। আজ রবিবার ভারত সেমিফাইনাল দলগত বিভাগে খেলবে সিঙ্গাপুরের সঙ্গে। পি ভি সিন্ধু-র চোট রয়েছে। ভারতের পতাকা-বাহক মেয়েদের সিঙ্গলসে খেলবেন। তাঁর ম্যাচ রয়েছে ১১ এপ্রিল। এ দিন সাঁতার, জিমন্যাস্টিক্স বা সাইক্লিংয়ে সুবিধা করতে পারেনি ভারত। জাতীয় চ্যাম্পিয়ন সাঁতারু সজন প্রকাশ ২০০ মিটার বাটার ফ্লাইতে অস্টম স্থান পেয়েছেন। বক্সিংয়ে সিনিয়র দুই বক্সার সরিতা দেবি (৬০ কেজি), মনোজ কুমার (৫৯ কেজি) কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy