প্রতি মাসে পাঁচ তারিখের মধ্যে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৭৫০০ টাকা চলে আসে। যিনি টাকাটা তাঁর অ্যাকাউন্টে নিয়ম করে পাঠান তাঁকে দেখার খুব ইচ্ছা ছিল তাঁর। শেষ পর্যন্ত সম্ভব হল রবিবার দুপুরে রাঁচীর জেএসসিএ স্টেডিয়ামে ভারত-অস্ট্রেলিয়া টেস্টের চতুর্থ দিনে। যিনি গত ২০ বছর ধরে প্রতি মাসে টাকা পাঠান তাঁর নাম সুনীল গাওস্কর। আর যাঁর অ্যাকাউন্টে পাঠান তিনি বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে যাওয়া ভারতীয় জাতীয় দলের প্রাক্তন হকি খেলোয়াড় গোপাল ভেঙ্গরা। ১৯৭৮ সালে বিশ্বকাপে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি।
প্রাক্তন এই হকি খেলোয়ারকে দেখতে এক সময় মানুষের ভিড় জমত। কিন্তু সে তো কবেকার কথা। খেলা ছেড়ে দেওয়ার পরে এই বিশ্বকাপারকে কেউ মনে রাখেননি। ১৯৮৫ সালে খেলা ছেড়ে দেওয়ার কয়েক বছর পরে তীব্র আর্থিক অনটনে পড়েন রাঁচী থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরে তোরপা গ্রামের বাসিন্দা গোপাল। সরকারের বিভিন্ন বিভাগে চিঠি লিখেও কোনও ফল মেলেনি। সামান্য যে ক’টা টাকা পেনশন পেতেন, তাতে সংসার চলে না। সংসার চালাতে নিজের গ্রামে পাথর ভাঙার কাজ শুরু করেন গোপাল। গোপালের আর্থিক কষ্টের কথা কানে আসে সুনীল গাওস্করের। তিনি তাঁকে প্রতি মাসে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেন। গত কুড়ি বছর ধরে গোপালের অ্যাকাউন্টে মাসে ৭৫০০ টাকা করে পাঠাচ্ছেন গাওস্কর।
এত বছর ধরে গাওস্কর টাকা পাঠিয়ে চলেছেন ঠিকই, কিন্তু তাঁদের মধ্যে কখনও দেখা হয়নি। গাওস্কর ক্রিকেট ম্যাচ উপলক্ষে রাঁচী আসছেন জানতে পেরে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চান গোপাল। রবিবার গোপাল বলছিলেন, ‘‘গাওস্কর আমার কাছে ভগবানের মতো। এত বছর ধরে আমার পরিবারকে আর্থিক সাহায্য দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছেন। একবার ওঁর সঙ্গে দেখা করার খুব ইচ্ছা ছিল।’’
গোপালের সঙ্গে দেখা করতে এক কথায় রাজি হয়ে যান গাওস্করও। রবিবার দুপুর দু’টো নাগাদ গোপাল এসেছেন শুনে কমেন্ট্রি বক্সের বাইরে বেরিয়ে আসেন গাওস্কর। সেখানেই দু’জনের দেখা হয়। পরে গাওস্কর বলেন, ‘‘ওঁর মতো একজন প্রতিভাবান হকি খেলোয়াড়ের সঙ্গে দেখা হওয়ায় আমি খুব খুশি। এ রকম সৌভাগ্য সবার হয় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy